আইএসের থেকে পালিয়ে এলেন ২ তরুণী, পাপমুক্তির চেষ্টা - Women Words

আইএসের থেকে পালিয়ে এলেন ২ তরুণী, পাপমুক্তির চেষ্টা

ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষদের একটি পবিত্র স্থান আছে, যার নাম লালিশ। সেখানে নতুন এক ধরনের প্রার্থনা হচ্ছে।

সেটি করা হচ্ছে পানি ছিটিয়ে আর বয়স্ক একজন পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন তরুণীদের শরীরে যাতে করে মনে হয় শরীর থেকে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে সব ধরনের অপবিত্রতা।

আইএসের থেকে ফেরত আসা একজন নারী ইমান বলছিলেন “আমরা প্রত্যেক নারী ও শিশু। আমাদের প্রত্যেকেরই একেকটি গল্প রয়েছে। যা আসলে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের হাতে বন্দী থাকার সময়কার। খারাপ সবকিছুই তারা আমাদের সাথে করেছে”।

ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের প্রায় ছয় হাজার নারীকে বিভিন্ন সময় ধরে আটকে রেখেছিলো আইএস জঙ্গিরা।

ইমান ও শিরিনও পার করে এসেছে সেই দু:সময়। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ২০১৪ সালেরআগস্টে প্রথম আইএস তাদের গ্রামে আক্রমণ করেছিলো আর তারা পালিয়ে আসতে পেরেছে অল্প কিছুদিন আগে।

এরপর তারা যায় লালিশে, উদ্দেশ্য প্রার্থনায় সব কালিমা থেকে মুক্ত হওয়া।এর মাধ্যমে তারা চাইছে তাদের জীবনকে পুনর্গঠন করা ও সবকিছু নতুন করে শুরু করতে।

বয়স্ক একজন পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন তরুণীদের শরীরে যাতে করে মনে হয় শরীর থেকে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে সব ধরনের অপবিত্রতা।

লালিশে প্রথমে তারা একটি উজ্জ্বল রঙ্গের কাপড়ের একটিকে আরেকটির কোনায় টাই বাধার মতো করে তারা একটি গিট দেয়।

“আমরা বিশ্বাস করি এই যে গিট বাধতে টাই নিয়ে আমরা যাই তাতে করে অন্য কোথায় কোন অশুভ শক্তি হেরে গেলো এবং আমাদের স্বপ্নগুলো একদিন সত্যি হবে।

ইয়াজিদিদের প্রার্থনার দেবতা আর তাদের ভক্তির জায়গা হলো একটি ময়ূর দেবতা। আইএস জঙ্গিরা তাদের নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চেয়েছিলো এমনটি বলে যে ইয়াজিদিরা শয়তানের উপাসনা করে।

“আমাদের সম্পর্কে তাদের অনেক ভুল ধারণা ছিলো। তারা বলতো আমরা হলাম অবিশ্বাসী বা কাফের। অবশ্যই আমরা ঈশ্বর সম্পর্কে জানি এবং আমরা আমাদের ধর্মে বিশ্বাস করি। আমাদের ধর্ম অত্যন্ত ভালো, এটি ক্ষমা আর মহত্ত্বে পরিপূর্ণ। আমি জানি দাসত্ব, হত্যা আর রক্তের চেয়ে অন্য যে কোন ধর্মই মহান আর সেরা”।

যদিও যুদ্ধে আইএস-র পরাজয় হয়েছে কিন্তু ভয় কাটেনি ইয়াজিদিদের। বিশ্লেষকরা বলছেন এখনো অন্তত ৩০০০ ইয়াজিদি নারী আটকে আছেন বিভিন্ন জায়গায়, যাদের অনেকেই যৌনদাসী কিংবা শিশু সৈনিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি