‘জঙ্গি’ ফাহিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত - Women Words

‘জঙ্গি’ ফাহিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষকের উপর হামলাকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ‘জঙ্গি’ গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

আজ শনিবার সকালে ফাহিমের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মিয়ারচরে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

এসময় নিহতের হাতে হাতকড়া এবং তার বুকের বাম পাশে গুলির দাগের মতো রক্তাক্ত জখম ছিল।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সারোয়ার হোসেন বলেন, মিয়ারচরে তার সহযোগীরা আছে বলে ফাহিম জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিল। তখন তাকে নিয়ে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। সকালে সেখানে পৌছার পর ফাহিমকে ছিনিয়ে নিতে হিযবুত সদস্যরা গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে ফাহিম মারা যায়। ফাহিমের ‘সহযোগীদের গুলিতে’ পুলিশের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত এবং এক কনস্টেবল আহত হন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, নিহত ফাহিম ঢাকার উত্তরার একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরে যুক্ত ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। গত বুধবার মাদারীপুরে সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের গণিতের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর উপর হামলার পর জনতা ফাহিমকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছিল। ফাহিমের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ওই হামলার ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ।

ফাহিম উত্তরার দক্ষিণ খানে তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তারা বাবা একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা, মা গৃহিনী। ফাহিম গত ১১ জুন সকালের পর থেকে নিখোঁজ বলে দক্ষিণ খান থানায় তার বাবা গোলাম ফারুক একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। ফাহিম তার বাবার মোবাইল ফোনে সর্বশেষ এসএমএসে বলেছিলেন, ‘বিদেশ চলে গেলাম, এছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে।’

এরপর বুধবার মাদারীপুরে ধরা পড়ার পর সন্তানের খবর পান ফারুক। তবে ফাহিমের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি।

গত দেড় বছরজুড়ে লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, অধ্যাপক, বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষুর মতো একই কায়দায় ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়েছিল মাদারীপুরের শিক্ষক রিপনের উপর।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ জানান, ফাহিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাচেষ্টায় জড়িত আরও পাঁচজনের নাম বলেন। ফাহিমসহ ওই ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করে শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা করে পুলিশ। বাকি পাঁচ আসামি হলেন- সালমান তাসকিন, শাহরিয়ার হাসান, জাহিন, রায়হান ও মেজবাহ।

ওসি বলেন, “দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গি কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নিয়ে মাদারীপুরে প্রথম হামলা চালায় তারা। ঘটনার দিনই ফাহিম মাদারীপুরে আসে এবং শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে অনুসরণ শুরু করে।”

‘গভীরভাবে তদন্ত চলছে’ জানিয়ে ‘খুব শিগগিরই ফলাফল’ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিলেন মাদারীপুরের গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক কামরুল হাসান; তার একদিনের মধ্যে পুলিশের হাতে থাকা একমাত্র সূত্র ফাহিম মারা গেলেন কথিত বন্দুকযুদ্ধে।