নতুন দিনে, নতুন করে ভাবতে হবে... - Women Words

নতুন দিনে, নতুন করে ভাবতে হবে…

ফজিলাতুন নেছা শাপলা

কথায় আছে, কুসন্তান যদিও হয়-কুমাতা কখনও নয়। মা সন্তানের খারাপ চেয়েছেন, এরকম মা জগত সংসারে খুব কমই আছেন। কিন্তু মায়েরা সন্তানদের নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়েন, এরকম উদাহরণ আছে ভুড়ি ভুড়ি।

দশ মাস দশ দিন সন্তান পেটে ধরে, পৃথিবীর আলো দেখানোর পর থেকে পুরো শৈশব জুড়ে মায়েদের নাওয়া-খাওয়া হারাম হয়, তার শিশুটিকে যত্ন-আত্তি করে বড় করে তুলতে। কারণ তখন শিশু থাকে সম্পূর্ণ পরনির্ভর। মা’র তাকে খাইয়ে দিতে হয়, ঘুম পাড়াতে হয়। গোসল করিয়ে দিতে হয় এরকম আরো কত কি! সেটা লিখে শেষ করা যাবেনা।

শিশু যেই না দশ, এগারোতে পড়ে-মা তখন কেবলই ভাবতে শুরু করেন, যাক বাবা; শিশুটি এতদিনে একটু ঝরঝরে হতে শিখেছে, এখন নিশ্চই তার কষ্টটা একটু কমবে। তার শিশুটি ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে।

ব্যাস! তখনই শুরু হয়ে যায় নতুন খেলা। একটু কান পাতলেই চারিদিকে শোনা যায়, গুঞ্জন। এই মা বলেন, গত বছরও ছেলে আমার কথা শুনত, এবছর আর শুনছে না। ওই মা বলেন, মেয়ে আমার এত শান্ত ছিল, এখন শুধু কথায় কথায় তর্ক করে।কি যে বেয়াদপ!! কারো কথাই শোনেনা।আরেক মা বলেন, ছেলেটা দিন রাত রুমের দরোজা বন্ধ করে যে কি করে আল্লাই জানেন! তো তিনি বলেন, “আমার ছেলেটা সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমায় আর সারা রাত জাগে। আরেক মা বলেন, পাশের বাড়ির মেয়েটা পাড়ার বখাটে ছেলেটার হাত ধরে পালিয়ে গেছে। গল্পের ভাণ্ডারে আরেক মা যোগ করেন, জানেন ভাবী-কাল আমার ছেলেটা ওর বাবাকে তেড়ে মারতে এসেছিল।আমি যে কি করি! মিসেস করিম বলেন, আমার ছেলেটা লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খায়”। চলতেই থাকে….

এই সব গল্পে- গুঞ্জনে কিছু কিছু মা আবার আত্ম তৃপ্তি খুঁজে পান। তাদের ভাবখানা এরকম, “যাক বাবা, আমার ছেলেটা অথবা মেয়েটা এরকম নয়। তারা তৃপ্তির ঢেঁকুড় তুলতে তুলতে ভাবেন-তার ছেলেটা অথবা মেয়েটা কারো সঙ্গে মেশেনা, কারো সামনেই যেতে চায়না। সেটাই অনেক ভালো”।

তার ছেলে-মেয়ের কোন বন্ধু নেই, বাড়ির বাইরে যায় না। মা’ সারাক্ষণ আঠার মত সেঁটে থাকেন, ছেলে-মেয়ে যেখানেই যায়, সেখানেই যান। এক মিনিট চোখের আড়াল করেন না আর ভাবেন, কি বাঁচাইনা বেঁচে গেলাম! সন্তানদের স্বাভাবিক বিকাশ, তার ডিকশনারীতে নেই।তাদের ধ্যান-জ্ঞান হল-“ একটু ছাড় দেই আর আমার এই বয়সের ছেলেটা/মেয়েটা বখে যাক আর কি? আমাকে কি অত বোকা পেয়েছেন? আমার ছেলে/মেয়ে নষ্ট হলে, আপনি দায়িত্ব নেবেন”?

মায়েরা স্পষ্টতই দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছেন। এক দল, ছেলে কথা শোনেনা বা বড় হয়ে গেছে বলে, দায়িত্ব এড়িয়ে ঘটনাটা বাবার উপর ছেড়ে দিচ্ছেন এবং আরেক দল বেশী দায়িত্ব নিতে গিয়ে পরিস্থিতি লেজে-গোবরে করে ফেলছেন।

উপরের গল্পগুলো পাঁচ/সাত বছর আগেও হয়ত এত শোনা যেত না অথবা মায়েদের এই রূপ আগে দেখা যেত না কিন্তু এখন গল্পগুলো ঘরে ঘরে সবার।গল্পে-গুঞ্জনে কান পাতাই দায়! কেন?

তার কারণ হল-বাংলাদেশ সহ উন্নয়নশীল দেশের, জনসখ্যার শতকরা ৯০ ভাগ হল শিশু এবং কিশোর। যাদের বয়স ১০ থেকে ২২ এর মধ্যে। কাজেই এই গল্প বা সংকট এখন ঘরে ঘরে।

মাতা যেমন কখনই কুমাতা হননা, তেমনি তারা কিন্তু সন্তানের কোন দায় থেকেই সহজে মুক্ত হন না। সন্তান লালন-পালনের দায়-দায়িত্ব কিন্তু বাবা-মা’রই সব চেয়ে বেশী। আসুন জেনে নেই, বাবা-মা সন্তানকে এত শাসনের মধ্যে রাখা সত্বেও ১১ থেকে ২১ বছরের ছেলে-মেয়েরা কেন বাবা-মা’র প্রত্যাশা অনুযায়ী আচরণ করেনা।

১১-১২ বছর বয়স থেকে ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে ওঠার সিঁড়ির প্রথম ধাপে উঠে যায়।বড় হয়ে ওঠার জন্য এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের শুরু হয়ে যায় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন।সময়টাকে বলি বয়ঃসন্ধিক্ষণ এবং অনেক ছেলে মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন আসার বেশ আগে থেকেই, মানে নয়-দশ বছর থেকেই নানা ধরণের আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়।তার শরীর যে ধীরে ধীরে বয়সন্ধিক্ষণের দিকে যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে, মন বা ব্রেইন তার প্রস্তুতি আগে থেকেই শুরু করে দেয়।আমরা যাকে ইংরেজীতে early adolescent বলি।

এ সময় অনেক বাবা-মা’ই বলে থাকেন, “ওর তো এখনো বয়ঃসন্ধিক্ষণ আসেনি, তাহলে বাচ্চাটা এরকম করছে কেন”? যেন শারীরিক চিহ্ন দেখা দিলেই, শুধু বয়ঃসন্ধিক্ষণ আসে-তার আগে নয়!

এবার বলি, বয়ঃসন্ধিক্ষণের বিকাশটা কিন্তু খুব এলোমেলোভাবে হয়। সব সময় নিয়ম মেনে হয়না। ছেলেদের প্রথম বীর্যপাত বা স্বপ্নদোষ আর মেয়েদের মাসিক হল বড় হয়ে ওঠার চিহ্ন বা মাইলস্টোন মাত্র। ওটা থেকে বুঝতে হবে যে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই বড় হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকে গেছে। তার আগে পরেও অনেক ঘটনা ঘটতে থাকে।

ছেলে-মেয়ের বয়স, ১৪-১৫ বছর। অনেক বাবা-মা’ই বলেন, “ওর তো বয়ঃসন্ধিক্ষণ এসেছে, তাও দু বছর হয়ে গেল। এখন এমন করে কেন?”?

আসলে ১৩ থেকে ১৯ বয়ঃসন্ধিক্ষণের পিক টাইম ধরলেও এটা চলতে পারে, ২২/২৩ পর্যন্তও। যেটাকে আমরা ইংরেজীতে late adolescent বলি।

বয়ঃসন্ধিক্ষণে ছেলে-মেয়েরা দ্রুত বড় হয় অর্থাৎ হঠাৎ করেই গায়ে-পায়ে ধা ধা করে বেড়ে ওঠে কিন্তু আগেই বলেছি, ওদের বিকাশ হয় খুব এলোমেলো। এদের এ সময় ওজন এবং উচ্চতা খুব দ্রুত বাড়ে। বছরে এক এক জন প্রায় ৩/৪ ইঞ্চি করে বাড়তে পারে। ছেলেদের মাসল হয়, মেয়েরা ধুম করে মোটা হয়ে যায়।

এদের এই লম্বা লম্বা হাত-পা ওয়ালা শরীরটাকে যদি একটা বড় গাড়ি বা ইঞ্জিনের সাথে তুলনা করি এবং ড্রাইভিং সীটে যদি ওদের নিজেদের কল্পনা করি, তাহলে ওরা হল- সব চেয়ে খারাপ ড্রাইভার। কেউ গাড়ি চালানোর গ’ও জানেনা। শুধু এটুকু বলা যায় যে, ওদের আছে ক্রুটিযুক্ত ব্রেক সিস্টেম। ওরা জানেনা, কোথায় থামতে হবে, কোন রাস্তায় কিভাবে চলতে হবে।গাড়ির ব্রেকই নাই, তাই ট্রাফিক আইন মানার ধারই ধারেনা। কিন্তু হরমোন নামের হাই স্পীডের ফুয়েল ওদের শরীরে/গাড়ির ইঞ্জিনের মধ্যে ভরা আছে, তাই ওরা দূরন্ত ষাঁড়ের মত ছুটতে থাকে। বাবা-মা, ওদের চিন্তা-ভাবনা, চলাফেরার সাথে কিছুতেই তখন পেরে ওঠেননা।

ওদের মন ও শরীর থাকে under construction। ব্যাপারটা কিন্তু মোটেও মজার নয়।ওদের জন্যও মারাত্মক কঠিন একটা সময়।

একবার চিন্তা করুন তো, ব্যস্ত মহাসড়কে অসংখ্যা গাড়ির ভিড়ে, অন্য একটা গাড়ি ফুলস্পীডে চলছে এবং গাড়ির ড্রাইভিং সীটে বসে আছেন আপনি, কিন্তু গাড়ি কিভাবে চালাতে হয় সেটা জানেন না, আপনার কেমন লাগবে?

এই যে ওরা বড় হয়ে উঠছে, তার মানে ওদের শরীরের সাথে সাথে ওদের জ্ঞানেরও বিকাশ ঘটছে। শরীরের বিকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন দেখে বুঝতে পারেন কিন্তু জ্ঞানের বিকাশ ঘটছে কিভাবে বুঝবেন? আসুন সেই চিহ্নগুলো আপনাদের জানিয়ে দেই।

এ সময় ওরা অযথাই খুব তর্ক করে, তর্কের খাতিরেই তর্ক করে। বাবা-মা’কে দূরে ঠেলে দেবার একটা সহজ প্রবণতা দেখা দেয়। বরং বাবা-মা’র চেয়ে বন্ধু-বান্ধব এবং অন্যদের কথা বেশি শোনে। খুব আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে, শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবে। কারো সাথে কথা বলতে চায়না, কোথাও যেতে চায়না। শুধু বড়দের ভুল আর দোষ ধরতে থাকে। আচার-আচরণে অনেক নাটুকেপনা চলে আসে। মেয়েদের মাসিক হবার মতই এই আচরণ গুলো এই বয়সের জন্য খুব স্বাভাবিক।

তাই শুধু বাবা-মা নয়, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে, পাড়া-প্রতিবেশী, এলাকার গুরুজন, শিক্ষক-শিক্ষিকা সবারই অনেক ধৈর্য ধরা দরকার। অথচ আমাদের সমাজে হয় ঠিক তার উল্টোটা। এসব দেখে-শুনে, সবাই ধরে নেন, “গেছে, এই ছেলে-মেয়ে আর মানুষ হবেনা। এ হয়ে গেছে একটা বেয়াদপ! নিজেকে অনেক বড় ভাবা শুরু করেছে। একে মানুষ করা চাট্টিখানি কথা নয়”।

ওদের কথা সবচেয়ে সংক্ষেপে এবং সুন্দরভাবে বলে গেছেন, কবি সুকান্ত।

আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ
স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,
আঠারো বছর বয়সেই অহরহ
বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।
আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়
পদাঘাতে চায় ভাঙ্গতে পথের বাধা
এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়-
আঠারো বছর বয়স জানেনা কাঁদা।

সত্যিই তাই, কবি ১৮ বছরের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করলেও, সেই যে ৯/১০ থেকে শুরু হয়, কারো কারো শেষ হয় গিয়ে চব্বিশে। এরা নিয়ম ভাঙ্গতে খুব বেশী পছন্দ করে। নিজে ভুল শুদ্ধ যাই করুক না কেন, তার শেষ পর্যন্ত দেখতে চায়। এদের মাথা ভর্তি কিলবিল করে হরেক রকম অদ্ভূত, অবাস্তব আইডিয়া। আর এসব ওদের জন্য খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।

আসুন আরেকটু ভয়ের কথা বলি, এ বয়সীদের মধ্যে high risk taking behaviour বা বড় বড় ঝুঁকি নেবার প্রবণতা দেখা দেয়। মানে এরা অল্পতেই যে কোন ঝুঁকি নিতে খুব ভালোবাসে।

যেমনঃ অল্পতেই নিজের হাত-পা কেটে কিছু একটা করে ফেলে বা অন্য কাউকে আঘাত করে, সহজেই আহত করে। অল্পতেইবড় ধরণের ঝগড়াঝাঁটি বা মারপিট করে, ভাঙ্গচুর করে, আগুন লাগিয়ে দেয়, ইত্যাদি। খুব স্পীডে গাড়ি চালাতে এরা খুব পছন্দ করে, সীট বেল্ট  বাধার প্রশ্নই আসেনা, ভয়ঙ্কর গতিতে হোন্ডা চালানোর মজা আর অন্য কিছুতেই নেই এবং accident এর কোন ভয়ও এদের মধ্যে একেবারেই থাকেনা । অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কিছু একটা করে দেখাতে গিয়ে, আত্মহুতি দিতেও যেমন পিছপা হয়না, তেমনি মানুষ মারতেও দ্বিধা বোধ করে না।

খুব সামান্য কারণেই আত্মহত্যা করে বসে।

খারাপ খারাপ দিক তো সব বললাম, এবার আপনাদের জ্ঞাতার্থে ওদের সবচেয়ে ভালো দিকটার কথা বলি, ওরা যদি কাউকে মডেল বা আদর্শ হিসেবে ভাবে, তাহলে তার জন্য জীবন পর্যন্ত বাজি রাখে। তার সব কথা মনে-প্রাণে ধারণ করে।

এবার বলুন বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী হিসেবে আপনি কি করবেন?
আপনাদের জন্য বলি, চিরকালের নিয়ম বলে কিছু নেই। চিরদিনের নিয়ম বলে, পরিচিত সতীদাহ প্রথাও এক সময় উঠে গেছে, এখন দিন এসেছে, অনেক কিছু পাল্টে দেবার। ঐ যে শুরুতে বলেছিলাম, কুসন্তান যদিও হয়, কুমাতা কখনও নয়। আমার মনে হয়, এসব পুরানো প্রবাদ পাল্টানোর সময় হয়ে গেছে।

আমি মনে করি, বয়ঃসন্ধিক্ষণ এবং তার কৈশোর ও তারুণ্যে মা হিসেবে আমি যদি যথেষ্ট সচেতন না থেকে, আমার সন্তানের ক্ষতি করে ফেলি, তবে আমি কুমাতাই বটে! কারণ এ বয়সের ছেলে-মেয়েরা জানেনা, কি করে এই চক্র থেকে বেরুতে হয়। তাই বড়দের অথবা মা হিসেবে আমার করণীয় অনেক অনেক বেশী।

অনেক বাবা-মা’ই হয়ত বলবেন, “আমার ছেলে/মেয়ে আমার কথা শোনেনা, আমি কি করতে পারি”? যা করলে শুনবে বা যার কথা শুনবে তাদের প্রত্যককেই সচেতন হতে হবে এবং সহযোগী মনোভাবাসম্পন্ন হতে হবে। তবে সবার আগে ওদের বন্ধু হতে হবে। ওদের ভাষা বুঝতে হবে, মানে ওরা আসলে কি চায়? যে কোন মূল্যেই হোক, ওদের আদর্শ হয়ে উঠতে হবে।

আমার বাবা আমার শৈশব-কৈশরে, কোন ভুল করলে বা কথা না শুনলে, কথায় কথায় বলতেন, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। এরকম ছেলেমেয়ের আমার দরকার নেই।

আমার মনে হয়, এই প্রবাদও পাল্টানোর বা নিজেদের ভাবনাগুলো পাল্টানোর সময় এসে গেছে, আমার গোয়াল খালি করে আমার সবচেয়ে দুষ্টু গরুটাকে রাস্তায় ছেঁড়ে দিলে, সে তো যাকে তাকে গুতাবেই। এই ঝুঁকিটা কোনভাবেই বড়দের নেওয়া উচিৎ নয়।

আরেকটা কথা বড়রা আকছার বলে থাকেন, “আমাদের সময় তো এত সুযোগ সুবিধা ছিলনা, আমরা এত ট্যাব, কম্পিউটার, মোবাইল, পাইনি- আমরা কি মানুষ হইনি? আমরা তো অনেক ভাই বোন ছিলাম, এখন তো মাত্র একটা/দুটো তবুও কেন এরকম হবে”?

প্লীজ নতুন বছরে এসব পুরানো ভাবনাগুলোকে এবার থামান। নতুন করে ভাবতে শিখুন, ৩০/৪০ বছরে দুনিয়াটা, আমাদের দেশটা অনেক পাল্টে গেছে। বিশেষ করে মা’দের বলছি- আপনারাও কিন্তু অনেক অনেক পালটে গেছেন। পালটে গেছে আপনাদের জীবন-যাপনের ধরণ। পালটে গেছেন আপনি অনেক ভাবেই। দশ বছর আগে যা করেননি, তা এখন অনায়াসেই করছেন। তাহলে দশ বছর বা তারো আগেকার ভাবনাগুলোকে কেন পাল্টাতে পারছেন না?

আবার অনেক মায়েরা আছেন, তারা এত বেশী সচেতন যে, অধিক সচেতনতার কারণে বাচ্চাদের সর্বনাশ ডেকে আনছেন।

ছোট্ট একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করছি।

ব্যাপারটা এরকম যে, কিছু মা জানেন না- ময়লা পানিতে রোগ জীবাণু কিলবিল করতে থাকে, তারা সমানে ময়লা পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আবার কিছু মা জানেন যে, ময়লা পানিতে রোগ জীবাণু কিলবিল করে, তাই তারা কোনভাবেই ঝুঁকি নিচ্ছেন না। পরিষ্কার পানির খোঁজে এত সচেতন যে, পানির বাছবিচার করে পানি না খেতে খেতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

এ বয়সের ছেলেমেয়েদের বেড়ে ওঠার সংকট কাটাতে, বাবা-মা’কে নিতে হবে সঠিক পদক্ষেপ।

লেখক: কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট , শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

 

লেখকের অন্য কলাম পড়ুন-
যে জলে আগুন জ্বলে