সাঁওতালদের ওপর হামলা: স্থানীয় সাংসদের ইন্ধনের অভিযোগ - Women Words

সাঁওতালদের ওপর হামলা: স্থানীয় সাংসদের ইন্ধনের অভিযোগ

গাইবান্ধায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ করেছেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন।

রংপুর বিভাগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ রোববার ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শনে যায়। পরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাদারপুর গির্জার সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সাঁওতালদের পক্ষে বক্তৃতা দেন রুমিলা হেমব্রম, মিনা মাড্ডি, মেথিয়াস মাড্ডি, বার্না দাস টুডু ও শ্যামল মার্ডি।

সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ওপর সহিংস হামলার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সমাবেশে তাঁরা বলেন, ‘চিনিকলের সঙ্গে জমি নিয়ে যে বিরোধ, এই বিরোধ মেটানোর জন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ ও ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় আমরা চার বছর আগে এই আন্দোলন শুরু করি। এখন তাঁরা আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সহিংস ঘটনার ইন্ধন জুগিয়েছেন। আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন। সহিংস ঘটনায় আমাদের লোক মারা গেছেন। তাঁরা আমাদের নামে মামলা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই, বিচার চাই। আমাদের বাপ-দাদার জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই।’

এ অভিযোগের পর সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, এই সহিংস ঘটনায় যাঁরা ইন্ধন জুগিয়েছেন, তাঁরা যে দলেরই লোক হোক না কেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, টিপু মুনশি, সুজিত রায় নন্দী ও উম্মে কুলসুম।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিন ঘুরেছি। সাঁওতালদের ঘরে ঘরে গিয়েছি। তাঁদের কাছ থেকে ওই দিনের সহিংস ঘটনার খবর জানতে পেরেছি। আমরা এর প্রকৃত বিচার করব বলে আশা করি।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে কমিটি করে দিয়ে আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন। তিনিও চান, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করা হোক।’

তারা বলেন, ১৯৫৫–৫৬ সালে এই জমি চিনিকলের ছিল। তখন চুক্তি ছিল, এই চিনিকলের জমিতে আখ চাষ হবে। ওই সব জমিতে আখ ছাড়া অন্য ফসলের চাষ হলে প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতাল পরিবারের তালিকা তৈরি করে ঘর করে দেব, সহজ শর্তে ঋণ দেব। তাঁদের নিরাপত্তা দেব। আমরা জানতে পেরেছি, সাঁওতাল পরিবারের সন্তানেরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। এখন থেকে সব সন্তানই স্কুলে যাবে। নিরাপত্তার বিষয়টি সরকার কঠোরভাবে দেখবে। এ ঘটনায় যাঁরা উসকানি দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ওই সভায় সহিংস ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সূত্র: প্রথম আলো