ভাস্কর আবদুল্লাহ খালিদের প্রয়াণ - Women Words

ভাস্কর আবদুল্লাহ খালিদের প্রয়াণ

প্রখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর অমর কীর্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কলাভবনের সামনের ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’।

আবদুল্লাহ খালিদের ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহ জহির বলেন, বাবা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন। বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১০ মে থেকে সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ তাঁর কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।

আবদুল্লাহ খালিদের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী উম্মে কুলসুমসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। এ বছর শিল্পকলায় (ভাস্কর্য) একুশে পদক পান গুণী এই ভাস্কর। তিনি ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদকে ও ২০১৬ সালে বাংলা দর্পণ সম্মাননায় ভূষিত হন।

১৯৭৩ সালে ‘অপরাজেয় বাংলা’ নির্মাণকাজ শুরু করেন আবদুল্লাহ খালিদ। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মৌলবাদীদের বিরোধিতার কারণে নির্মাণকাজ বিলম্বিত হয়। নির্মাণকাজ শেষে ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয় ‘অপরাজেয় বাংলা’। এরপর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম প্রতীকে পরিণত হয় এই ভাস্কর্য।

আব্দুল্লাহ খালিদ সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্‌টস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান দপ্তরের সামনে অবস্থিত টেরাকোটার ভাস্কর্য নির্মাণ করেন।

এছাড়া তাঁর আরো কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে অঙ্কুর, অঙ্গীকার, ডলফিন, এবং মা ও শিশু।