জীবনে যে এমন একটি দিন আসবে, তা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেননি ললিতা বেন বান্সি। তাই বিয়ের মতো একটি স্বাভাবিক ঘটনাকেও বর্তমানে মিরাকেল বলে মনে হচ্ছে তাঁর। আর হবে নাই বা কেন? একটি অ্যাসিড হামলা আর সতেরোটি অস্ত্রোপচার পেরিয়ে অবশেষে মনের মানুষ খুঁজে পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ধুমধাম করে বছর ছাব্বিশের ললিতা ও বছর সাতাশের রবি কুমারের বিয়ে হয়ে গেল।
উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে ললিতা বেন বান্সির বাড়ি। আর পাঁচ সাধারণ মেয়ের মতোই জীবন ছিল তাঁর। স্কুল, কলেজ পেরিয়ে চাকরি, বিয়ে করে থিতু হওয়া। সবাই যেমনটা চায়, তেমনভাবেই জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন ললিতাও। কিন্তু বছর পাঁচেক আগের একটি ঘটনা যেন সব কিছু উলট-পালট করে দিল। সালটা ছিল ২০১২। একটি সামান্য বিবাদের জেরে ললিতাকে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে তাঁরই তুতো ভাই। ঝলসে যায় মুখ। ললিতা বলেন, ‘অনেকগুলি অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তাও মুখটা বিকৃত থেকে গেল। আজমগড় থেকে সপরিবারে মুম্বাইয়ের কাছে থানের কালওয়াতে চলে আসি আমরা।’
মুম্বাইয়ে আসার পর ফের নয়া বাঁক আসে ললিতার জীবনে। একটি রং নম্বরের সৌজন্যে আলাপ হয় বছর সাতাশের রবি শংকরের সঙ্গে। প্রথম আলাপেই ললিতাকে ভালো লেগে যায শংকরের। তাঁকে নিয়ে ফের নতুন করে জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখেন ললিতা। মাত্র দুমাস মেলামেশার পরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ললিতার কথায়, ‘শংকরই আমায় ভালবাসায় বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে। এটা আমার জীবনের একটি নতুন শুরু।’
তবে বিয়ে তো শুধু দুজন নারী-পুরুষের বন্ধন নয়, দুই পরিবারের ভুমিকাও গুরত্বপূর্ণ। প্রথমে ললিতাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে চায়নি শংকরের পরিবার। শংকর বলেন, ‘অনেক বোঝানোর পর শেষপর্যন্ত বিয়েতে মত দেন আমার মা।’ অবশেষে সব বাঁধা পেরিয়ে মুম্বইয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ললিতা ও রবি শংকর।
মুম্বাইয়ের কান্দিভলিতে একটি বেসরকারি সংস্থায় সিসিটিভি অপারেটরের চাকরি করেন রবি শংকর। রাঁচিতে এক পেট্রোল পাম্পও রয়েছে তাঁর। শংকর জানিয়েছেন, রাঁচি বা মুম্বই, ললিতা যেথানে চাইবেন, সেখানেই নতুন সংসার পাতবেন তাঁরা।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন