বাসে নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে সিএমপি’র অভিনব উদ্যোগ - Women Words

বাসে নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে সিএমপি’র অভিনব উদ্যোগ

নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যৌন হয়রানি বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিবহনে স্টিকার লাগানোর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উত্তর বিভাগ। পাশাপাশি গণপরিবহনে চালক ও পুরুষ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে অভিনব কিছু কাল্পনিক বক্তব্যের লিফলেট ও পোস্টার বিলি করা হয়েছে।

নগরীর বিভিন্ন মোড়ে গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে বাস-মিনিবাস, টেম্পো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চার ধরনের প্রচারণামূলক স্টিকার লাগানো হয়।

নিজ হাতে স্টিকারগুলো লাগানোর পর নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম বিভিন্ন বাসে উঠে এবং বাসযাত্রীদের তার সহযাত্রী নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করেন। এতে যাত্রীছাউনি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

এসব স্টিকার ও লিফলেটে মায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘বাবারে, নারীদের হয়রানি করিস না। ইতি- তোর মা’। বোনের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘ভাই, বাসের নারী যাত্রীদের দিকে তাকানোর সময় আমার কথা মনে রাখবে। ইতি- তোমার বোন।’

এছাড়া স্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘শুধু আমাকে না, সব নারীকে সম্মান করো। ইতি- তোমার স্ত্রী।’

মেয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘আব্বা, আমিও কিন্তু একদিন একা বাসে উঠবো। ইতি- তোমার মেয়ে।’

বাসের চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা শ্রেষ্ঠ একটা উদ্যোগ। অনেক সময়ই পুরুষেরা নারীদের ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়, গায়ে হাত দেয়, ঘেঁষে দাঁড়ায়। এটা খুব জঘন্য কাজ। এসব লেখা দেখে পুরুষেরা নারীদের গায়ে হাত দিতে লজ্জা পাবে। সারাদেশে এরকম কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা উচিত। কারণ সবারই বাড়িতে মা- বোন আছে। সবাই নিরাপদে থাকতে চায়।

শাহানা আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, অন্ধকারে যৌন হয়রানি তো চলছেই। আজকাল জনসম্মুখেও হয়রানি করা হচ্ছে নারীদের। গা ঘেঁষে দাঁড়ায়, একটু ভিড় হলেই গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করে, ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়া, নোংরা বাক্য ব্যবহারসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে পাবলিক স্থানে স্টিকার দেখে লজ্জায় অন্তত এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে এতটুকু আশা করা যায়।

এমন মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য নগর আমেনা বেগমকে ধন্যবাদ জানিয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক জানান, ‘গণপরিবহনে নারীদের যাতে হয়রানি ও ইভটিজিংয়ের শিকার না হয়, সেজন্যই আমরা এ ধরনের সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছি।