কিশোরীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ, চিকিৎসক গ্রেপ্তার - Women Words

কিশোরীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ, চিকিৎসক গ্রেপ্তার

নরসিংদীতে এক কিশোরীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকালে অভিযুক্ত চিকিৎসক জুলফিকার আলীকে গ্রেপ্তার এবং ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অভিযুক্ত জুলফিকার আলী গাজীপুর জেলার হোতাপাড়া থানার মনিপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার উত্তর শীলমান্দী এলাকায় ছনিয়া নিটওয়্যার মিলসে শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবায় কর্মরত ছিলো।। জুলফিকার আলী এমবিবিএস ডাক্তার।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী ময়মনসিংহের পাগলা থানার গোয়ালবড় গ্রামের এক দিনমজুরের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা য়ায়, উত্তর শীলমান্দী এলাকায় ছনিয়া নিটওয়্যার মিলসে শ্রমিকদের চিকিৎসায় কর্মরত ছিলো জুলফিকার আলী। গত দুই মাস আগে দক্ষিণ শীলমান্দী এলাকার সিরাজ উদ্দিনের বাড়িতে তিনি বাসা ভাড়া নেন। ওই সময় ভাগনি পরিচয় দিয়ে ওই কিশোরীকে বাসায় তোলেন চিকিৎসক জুলফিকার আলী। এরপর থেকে মেয়েটিকে বাসায় আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। চিকিৎসক এবং ওই কিশোরীর গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের ওপর নজর রাখতে শুরু করেন বাড়ির মালিক। একপর্যায়ে মেয়েটি বাড়ির মালিককে সব কিছু খুলে বলে। পরে শুক্রবার সকালে বাড়ির মালিক চিকিৎসক জুলফিকার আলীকে বাসায় ডেকে এনে পুলিশে সোপর্দ করেন।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী বলে, ২০১৮ সালে ময়মনসিংহের পাগলা থানার গোয়ালবড় গ্রামের শহীদ নগর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি। দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে মানুষের সেবা করবো। তাছাড়া আমি লিভার রোগে ভুগছিলাম। চিকিৎসার জন্য মা এই ডাক্তারের (জুলফিকার আলী) কাছে নিয়ে যায়। সবকিছু জেনে ডাক্তার আমাকে নার্সিং কলেজে ফ্রিতে ভর্তি করার প্রস্তাব দেন। সেই জন্য নরসিংদীতে আসতে হবে বলে জানান। একই সঙ্গে তার বাসার কাজকর্ম করে দেয়ার কথা বলেন। সরল বিশ্বাসে মা আমাকে এখানে পাঠায়। বাড়িতে আসার পর ডাক্তারের রূপ পাল্টে যায়। খারাপ কাজে রাজি না হলে নানা রকম ভয়ভীতিও দেখাতো। পরে বাড়িওয়ালা চাচাকে জানাই।

ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে চিকিৎসককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক আশরাফ উদ্দিন জুলফিকাকে আটকের পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে।

নরসিংদী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে চিকিৎসক জুলফিকার আলীকে আটক করা হয়। ওই কিশোরীর অভিবাবকরা ময়মনসিংহ থেকে নরসিংদী আসলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।