বোরকায় ঢেকে স্বামীকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেন স্ত্রী - Women Words

বোরকায় ঢেকে স্বামীকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেন স্ত্রী

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রেস্টুরেন্টে বসে আছেন এক দম্পতি। তবে বেশভূষায় রয়েছে একটু ভিন্নতা। বোরকা সাধারণত নারীদের পোশাক হলেও ছবিটিতে বোরকার আড়ালে রয়েছেন এক পুরুষ। 

গত শনিবার ইনস্টাগ্রামের ‘দ্য মিউলি ওয়েডস’ পেজ থেকে শেয়ার করা হয় ছবিটি।

এভাবেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের লিঙ্গবৈষ্যম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই পাকিস্তানি তরুণী। মজার ছলে ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন নিজের মনের কিছু কথাও। ঝাঁঝালো ব্যাঙ্গাত্মক উক্তিতে নারী-পুরুষের সামাজিক ভেদাভেদের আসল ছবিটা তুলে ধরেছেন সেখানে।

ইন্সটাগ্রাম পোস্টে ওই তরুণী জানান, একদিন রাতে পাকিস্তানের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন তারা। 

তিনি লিখেছেন, “এটা আমার সুন্দরী স্বামী। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না, কতোটা সুন্দর সে। কারণ তার সৌন্দর্য ঢাকা পড়ে আছে। আমারই কেবল তার ওপর অধিকার রয়েছে। তার সবকিছু, সাফল্য, স্বপ্ন এমনকি তার পুরো জীবনটাই আমার কাছে বাঁধা পড়ে আছে। ওর দিকে কুনজর দেওয়াটা পাপ। তাই আমি চাই ও বাইরে না বেরিয়ে ঘরেই থাকুক। কারণ, দুনিয়াটা ভাল জায়গা নয়। তবে আমার সঙ্গে বাইরে গেলে ঠিক আছে।”

তথাকথিত আধুনিক সমাজেও যে অনেক ক্ষেত্রেই নারীর অবস্থান শুধুমাত্র সন্তান উৎপাদনকারী হিসাবেই গণ্য করা হয় সেদিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আমরা শুধু এখানেই খেতে আসি। কারণ, এখানে স্টেরয়েড ছাড়া চিকেন পাওয়া যায়। তাছাড়া আমরা খুবই স্বাস্থ্য সচেতন। বিশেষ করে যখন জানি স্টেরয়েড দেওয়া চিকেন খেলে যৌনক্ষমতায় প্রভাব পড়তে পারে। আমি সেটা চাই না, কারণ ওর বেঁচে থাকার প্রধান উদ্দেশ্যই তো সন্তান উৎপাদন করা এবং আমাকে মা হতে দেওয়া। ফলে যাই হোক না কেন, আমি ওকে এখানেই খেতে নিয়ে আসব।”

এখানেই শেষ নয়। নারীদের ওপর চলা যৌন হেনস্থার বিষয়ে তিনি লিখেছেন, “বাইরে বেরোলে যেভাবে ও নিজেকে লুকিয়ে রাখে সেটা আমার খুব ভাল লাগে। কারণ ও তো খোলা সিন্দুক। আর আমি চাই না যে ও যৌন হেনস্থার শিকার হোক। এরপরেও যদি হয়, তবে ভাগ্যের পরিহাস ভেবে তা স্বীকার করে নেব। তবে হেনস্থাকারীর বিচার চাইব।”

ব্যক্তি স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও সমাজে যে নারী-পুরুষের বৈষম্য রয়েছে তাকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, “আমি চাইলেই যেখানে খুশি যেতে পারি, যা খুশি করতে পারি। কিন্তু আমি ওকে বাইরে কাজে যেতে এবং ড্রাইভিং করতে দিই। কারণ, আমি প্রবলভাবে সমান অধিকারে বিশ্বাস করি।”

পোশাক নিয়েও যে নারীদেরকে প্রতিদিন সমাজের চোখরাঙানি সহ্য করতে হয় সে বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেছেন পোস্টে।

পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই ব্যাঙ্গাত্মক পোস্টের পর স্বভাবতই পক্ষে-বিপক্ষে নিজেদের মতামত দিচ্ছেন।

সূত্র: ঢাকাট্রিবিউন