শিশু ধর্ষণ বাড়ছেই - Women Words

শিশু ধর্ষণ বাড়ছেই

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে গণধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের (বিএসএএফ) পরিসংখ্যান থেকে শিশু ধর্ষণের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

শিশুবিষয়ক বেসরকারি সংস্থাগুলোর জাতীয় নেটওয়ার্ক বিএসএএফ ১০টি জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে বছরওয়ারি হিসাব রাখে।

বিএসএএফের তথ্য মতে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে মোট ১৪৫টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। ২০১৬ সালে একই সময়ে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা ছিল ৯৬টি। অর্থাৎ, তিন মাসে ৪৯টি বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি, একই সময়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। একই সময়ে গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ১২।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এ অপরাধ প্রতিরোধে কয়েকটা ধাপে কাজ করতে হবে। প্রথমত, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয়ত, আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

বিএসএএফের তথ্য আরও বলছে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল ১৩টি শিশুকে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় একটি শিশুকে। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়ে একটি শিশু আত্মহত্যা করে। প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে বেশ কয়েকটি। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে শিশু ধর্ষণের মোট ঘটনা ছিল যথাক্রমে ৫২১ ও ৪৪৬টি।

বিএসএএফের পরিচালক আবদুস শহীদ মাহমুদ শিশু ধর্ষণ বাড়ার কারণ হিসেবে বলেন, ‘মোটা দাগে কয়েকটি কারণে শিশু ধর্ষণ আবার বাড়ছে বলে মনে করছি। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা পাশাপাশি বিচার সম্পন্ন হওয়ার পরেও শাস্তি কার্যকর না হওয়া। ইন্টারনেটের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং পর্নোগ্রাফিও অপরাধ সংগঠনে উদ্বুদ্ধ করে। পাশাপাশি, মাদকের ব্যাপকতা একটি বড় কারণ।’

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্টের আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে অপরাধের সংখ্যা ওঠা-নামা করে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও একটি বড় কারণ। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে দরকার দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা; যা মানুষের অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করবে। পাশাপাশি, নিম্নবিত্ত পরিবারে শিশুদের দেখভালের বিষয়ে গুরুত্ব বাড়াতে হবে।

সূত্র: প্রথম আলো