বাংলাদেশের নারীদের অর্জন উল্লেখযোগ্য: আদালত - Women Words

বাংলাদেশের নারীদের অর্জন উল্লেখযোগ্য: আদালত

খাদিজার রায় ঘোষণাকালে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, আসামি বদরুল খাদিজার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করলেও সাক্ষ্যপ্রমাণে তা প্রমাণিত হয়নি। তাছাড়া আদালতে দেওয়া বদরুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সত্য এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যা চেষ্টা মামলার রায় প্রদান করেন। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় একমাত্র আসামী ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

বিচারক বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে এ সিদ্ধান্তে উপনীত  হয়েছি যে, প্রেমে প্রত্যাখাত হয়ে বদরুল ঘটনার দিন পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য খাদিজার উপর পৈশাচিক হামলা চালান। খাদিজাকে খুন করার পরিকল্পনা আসামির ছিল।’

রায়ে আদালত বলেন, প্রকৃতিগত ও শারীরিকভাবে নারীরা দুর্বল হলেও বাংলাদেশের নারীদের অর্জন উল্লেখযোগ্য। প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রীত্বে নারীদের দায়িত্ব পালনসহ নারীদের ক্ষমতায়ন ও দেশের উন্নয়নে নারীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বিচারক বলেন, এতদসত্ত্বেও এ দেশের নারীরা অনেকটা অরক্ষিত। ভিকটিম থাদিজার ঘটনা তা-ই প্রমাণ করে। তারা প্রতি পদে পদে নিগৃহীত, নির্যাতিত, হত্যা ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এজন্য আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও মানসিকতা দায়ী বলে বিচারক মন্তব্য করেন।

বিচারক আরও বলেন, মানব-মানবীর মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা চিরন্তন। অন্যথায় পৃথিবীর পথচলা বন্ধ হয়ে যেত। প্রেম-ভালোবাসায় মিলন, বিরহ থাকবেই। প্রেম বিরহে বা প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হলে এহেন পৈশাচিক, নৃশংস আচরণ মোটেই কাম্য ও আইন সমর্থিত নয়।’

বিচারক বলেন, আমার বিশ্বাস, আসামির উপর সর্বোচ্চ শাস্তি আরোপের মাধ্যমে প্রেমে প্রত্যাখাত হাজার হাজার বদরুলরা (তথাকথিত রোমিও বা উত্যক্তকারীরা) ভবিষ্যতে এহেন কাজ থেকে বিরত থাকবে এবং আমাদের নারী সমাজ সুরক্ষিত হবে।’