সিলেটে ‘বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব’ আজ থেকে - Women Words

সিলেটে ‘বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব’ আজ থেকে

সিলেটে আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দশদিনব্যাপী ‘মানবিক সাধনায় বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব’। নগরীর মাছিমপুর এলাকার আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আজ বিকেল ৪ টা থেকে শুরু হবে এ উৎসব।

আজ উৎসবের প্রথম দিনে সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে বিকাল ৪টা, সন্ধ্যা ৬টা ও রাত ৮টায় প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্র বর্ন টুগেদার, টেলিভিশন ও গেরিলা।

হাছন রাজা মঞ্চে সন্ধ্যা ৬টা ২০ থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকছে ওয়ার্দা  রিহাব’র নির্দেশনায় মণিপুরি নৃত্য, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সিলেট এর পরিবেশনায় দেশের গান, অদিতি মহসিনের কন্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং ফোক ফিউশন করবে গানের দল জলের গান।

উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাককে।

সিলেটে এ ধরনের বৃহৎ পরিসরের আয়োজন এই প্রথম। তাই এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শেষ মূহূর্তে রেজিস্ট্রশনেরও ধুম পড়েছে। নগরবাসীর সুবিধার জন্য নগরীর ৭টি স্থানে রেজিস্ট্রেশন বুথ চালু রয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলেও অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। উৎসবের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্সকে জমকালোভাবে সাজানো হয়েছে।

আয়োজকরা জানান, উৎসবে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, খায়রুল আনাম শাকিল, অদিতি মহসিন, চন্দনা মজুমদার, জলের গান, কুদ্দুস বয়াতীসহ বাংলাদেশের ৩৮৩ জন সংগীতশিল্পী-নৃত্যশিল্পী-চিত্রকর-নাট্যকুশলী-লেখক-কবি অংশগ্রহণ করবেন। সংগীত পরিবেশন করবেন ভারতীয় শিল্পী হৈমন্তী শুকলা, শ্রীকান্ত আচার্য্য, মনোময় ভট্টাচার্য্য, জয়তী চক্রবর্তী ও পার্বতী বাউল।বিশিষ্ট চিত্রকর রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, শহিদ কবির, রোকেয়া সুলতানা, জামাল আহমেদ, শিশির ভট্টাচার্য্য, তৈয়বা লিপিসহ ২৭ জন শিল্পী উৎসব চলাকালীন ‘সুবীর চৌধুরী আর্ট ক্যাম্পে’ অংশগ্রহণ করবেন। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, ইমদাদুল হক মিলন, শাহীন আখতার ও হরিশংকর জলদাস, প্রাবন্ধিক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সনৎকুমার সাহা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও শামসুজ্জামান খান, কবি কায়সার হক, আনিসুল হক, রুবি রহমান, রবিউল হুসাইন, তারেক সুজাতসহ বাংলাদেশের মোট ৫০ জন কবি ও লেখক কালি ও কলম সাহিত্যসভায় অংশ নেবেন। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার, প্রথিতযশা মঞ্চ-অভিনেতা ও নির্দেশক শাঁওলি মিত্রসহ ভারতের ২৩ জন প্রাবন্ধিক, কবি ও সাহিত্যিক এবং নেপালের ২ জন বিশিষ্ট লেখক সাহিত্যসভায় যোগ দেবেন।

উৎসবে বাংলাদেশের ১০টি জেলার কারুশিল্প নিয়ে থাকবে কারুমেলা। চলচ্চিত্র উৎসবে জাহিদুর রহিম অঞ্জনের ‘মেঘমল্লার’, মোরশেদুল ইসলামের ‘অনিল বাগচীর একদিন’, তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’, ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘টেলিভিশন’, নাসিরুদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’, রুবাইয়াৎ হোসেনের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ও ছোটদের ছবিসহ মোট ১৪টি ছায়াছবি নিয়মিতভাবে প্রদর্শিত হবে। চারটি নন্দিত মঞ্চনাটক – সুবচনের ‘মহাজনের নাও’, থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘আমেনা সুন্দরী’, লোকনাট্যদলের ‘কঞ্জুস’ এবং মণিপুরী থিয়েটারের ‘কহে বীরাঙ্গনা’ উৎসবে মঞ্চস্থ হবে। সিলেট জেলার ঐতিহ্যবাহী ঝুমুর, ধামাইল, সুফি ও সাধনসংগীত, চা জনগোষ্ঠি, মণিপুরী ইত্যাদি আঞ্চলিক গান ও নাচ উৎসবের বিভিন্ন দিন মঞ্চে উপস্থাপন করা হবে।

সিলেটের ঐতিহ্য ও উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে থাকবে স্থিরচিত্র প্রক্ষেপণ (ডিজিটাল ডিসপ্লে)। সিলেট শহরকে আরো পরিবেশ ও মানববান্ধব করার বিভিন্ন প্রয়াস ও চিন্তা সমন্বয় করে উপস্থাপন করা হবে স্থাপত্যবিষয়ক প্রদর্শনী।

উৎসবস্থলের চত্বর ও মঞ্চগুলোর নামকরণ করা হয়েছে সিলেটের বিভিন্ন বিশিষ্টজনের নামে। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে প্রধান মঞ্চটি ‘হাছন রাজা মঞ্চ’, এছাড়া বিভিন্ন মঞ্চের নাম শাহ আবদুল করিম, সৈয়দ মুজতবা আলী, গুরুসদয় দত্ত ও রাধারমণ দত্তের নামে নামকরণ করা হয়েছে।