যৌনকর্মীদের সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা - Women Words

যৌনকর্মীদের সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা

যৌনকর্মীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতেই । যৌনকর্মীদের মানবাধিকার উন্নয়ন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা আরও জানান, স্থানীয় মাস্তান, রাজনৈতিক নেতা ও ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা তাঁদের শারীরিক, আর্থিক নির্যাতনসহ নানা ধরনের হয়রানি করে থাকেন। এ সময় বিনা মূল্যে যৌনসেবা নেওয়ার পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি সংগঠন হাসাব ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ সভার আয়োজন করে সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্ক।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, দেশের আইন ও সংবিধান যৌনকর্ম বিষয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, বাংলাদেশে যৌনকর্ম বৈধ। কিন্তু সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, ‘রাষ্ট্র জুয়া এবং যৌন ব্যবসার বিরুদ্ধে কার্যকরী সুরক্ষা প্রদান করিবে।’ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই সুযোগটি ব্যবহার করেই যৌনপল্লি উচ্ছেদ, নানাভাবে যৌনকর্মীদের নির্যাতন ও হয়রানি করছে।

সভায় সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সহসভাপতি ইভান আহমেদ বলেন, নারীকে কোনো না কোনো কারণে বাধ্য হয়ে এই পেশায় আসতে হয়। কিন্তু যৌনপল্লি উচ্ছেদের মাধ্যমে এসব নারীর জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে; ভাসমান যৌনকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যৌনপল্লি উচ্ছেদ করা আইন পরিপন্থী।

হাসাবের নির্বাহী পরিচালক এলিসন সুব্রত বাড়ৈ বলেন, যৌনকর্মীদের নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। মানুষ হিসেবে সমাজে তাঁদের কোনো মর্যাদা নেই। এমনকি মৃত্যুর পরেও তাঁদের সমাহিত করার ক্ষেত্রেও আছে নানান বাধা। গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে বেশি বেশি সংবাদ প্রকাশ করে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন তিনি।

সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক চুমকি বেগম বলেন, সরকার যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই যৌনপল্লি উচ্ছেদ করছে। যৌনকর্মীদের পুনর্বাসন-প্রক্রিয়া সহজ নয়, কারণ তাঁরা আর পরিবারে ফিরে যেতে পারেন না। সমাজের মূল স্রোতে যেতে তাঁদের কাউন্সেলিং দরকার; কর্মস্থান দরকার।

সূত্র: প্রথম আলো