বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ করছেন বাংলাদেশের প্রথম নারী ট্রেন চালক সালমা - Women Words

বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ করছেন বাংলাদেশের প্রথম নারী ট্রেন চালক সালমা

বাংলাদেশের প্রথম নারী ট্রেন চালক সালমা খাতুন। তিনি যখন বাংলাদেশ রেলওয়েতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন খবরের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন। কারণ বাংলাদেশে ট্রেনের চালক বা লোকোমোটিভ মাস্টার এমন একটি পেশা যেখানে নারীরা এখনও তেমনভাবে জায়গা করে নিতে পারেননি।

২০০৪ সালের মার্চ মাসে রেলওয়েতে যোগ দেন সালমা খাতুন। তিনি এখন ঢাকা বিভাগে কর্মরত আছেন। রেলের জটিল সব যন্ত্রপাতি এখন তাঁর জীবনের অংশ।

সালমা খাতুন গত কয়েক বছর যাবত সম্পূর্ণ নিজের দায়িত্বে ট্রেন চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিবিসির বিশেষ অনুষ্ঠানমালার ‘শত নারী’তে তিনি বলেছেন কতটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাঁকে কাজ করতে হয়।

“কাজ করতে গিয়েতা সমস্যা আছে, এটা এমন এক পেশা যেটা মূলত পুরুষদের জন্যই ধরা হয়। আর এতটাই চ্যালেঞ্জিং যে পুরুষরাই হিমশিম খায়। সেখানে নারী হিসেবে আমিতো সমস্যায় পড়বোই, সমস্যা নিয়ে চলছি”।

ভাইয়ের উৎসাহেই রেলওয়েতে সহকারী ট্রেনচালকের চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন সালমা খাতুন।

এর আগে যানবাহন চালানোর কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁর, কাজে যোগ দিয়ে তিনি কাজটা শুরু থেকে করেন।

“নারী ট্রেনচালককে সহজে কেউ মেনে নিতে পারে না। একজন ছেলেই এ কাজ ঠিকমতো করতে পারে না, একজন নারী কিভাবে করবে-এমন প্রশ্ন তোলেন অনেকে। এমনকি যারা আমার সাথে কাজ করে তারাও বলে তুমি কিভাবে পারবা এটা? আর যাত্রীরাতো নারী ট্রেনচালক দেখলে হতাশ হয়ে যায়, হা হয়ে তাকিয়ে থাকে!”

২০০৪ সালে বাংলাদেশের রেলওয়েতে নারী ট্রেনচালক নিয়োগ দেয়ার পর ধারাবাহিকভাবে পরে আরও তিনবার সার্কুলারের মাধ্যমে নারী ট্রেনচালক নিয়োগ করা হয়েছে।

এখন অন্তত ১৫ জন নারী ট্রেনচালক রয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়েতে। এখানে মেয়েদের অংশগ্রহণ আস্তে আস্তে বাড়ছে বলে মনে করছেন সালমা খাতুন। পরবর্তীতে আরও সার্কুলার হলে আরও মেয়েরা আসবে বলে মনে করেন তিনি।

এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় আনন্দের সঙ্গেই কাজ করেন সালমা খাতুন।

কাজের সতর্কতার বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলছিলেন “যারা আমরা ট্রেন চালাই তাদের দুইটা চোখ শুধু থাকলে হবে না। অনেকে বলেন আমাদের চোখ থাকবে বারোটা, কান থাকবে চৌদ্দটা। আর মনটা একদম পরিস্কার থাকতে হবে। আমাদের প্রধান মনোযোগ থাকে সিগন্যালের ওপর, সিগন্যাল ম্যানেজমেন্টের ওপর নির্ভর করেই ট্রেন চালাই আমরা”।

সূত্র: বিবিসি বাংলা