একটা লোককেও না খেয়ে মরতে দেব না - Women Words

একটা লোককেও না খেয়ে মরতে দেব না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা লোককেও না খেয়ে মরতে দেব না। যা করার করব। অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শনে এসে দুর্গত হাওরবাসীর জন্য বিভিন্ন আশ্বাসও এসময় দেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী কৃষি ঋণের সুদের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা, আগামী মৌসুমে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সহযোগীতা প্রদান, গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করা, হাওর এলাকায় বাঁধ নির্মাণে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া, বন্যায় ফসলহানীর সুযোগ নিয়ে কেউ দেশের বাজারে খাদ্যশষ্যের দাম বাড়িয়ে দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ত্রাণ কর্মসূচী বৃদ্ধি ও সঠিকভাবে পরিচালনায় নজরদারি ও প্রয়োজনে খাদ্য আমদানি করা এছাড়া সুদ আদায়ে চাপ না দেওয়ার জন্য এনজিওদের প্রতি নির্দেশ দেন।
অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে আজ (রবিবার) সুনামগঞ্জের শাল্লায় এক সমাবেশে তিনি এসব আশ্বাস ও নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী সকালে শাল্লা উপজেলা সদরে পৌঁছানোর পর স্থানীয় শাহেদ আলী বিদ্যালয়ের মাঠে সমাবেশে বক্তব্য দেন। দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও যদি কোনো গাফলতি থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নগদ সহায়তার পাশাপাশি আগামী মওসুমের জন্য বিনামূল্যে বীজ আর সার দেওয়া হবে। মৎস্যজীবী ও কৃষকদের ঋণের সুদের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। গোখাদ্যের যেন অভাব যেন না হয়, সে ব্যবস্থাও সরকার নেবে।
যেসব বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হাওর অঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের আপাতত কিস্তি আদায় স্থগিত করে সুদ মওকুফের আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা জানান, হাওরের বন্যাকবলিত এলাকায় বিতরণের জন্য তিন হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতি পরিবারকে মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এসময় তিনি হাওর এলাকার মানুষকে শুধু ফসলের ওপর নির্ভরশীল না থেকে মাছ, গবাদীপশু ও হাঁস-মুরগি পালন বাড়ানোরও পরামর্শ দেন।

হাওরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের নাব্যতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, খালগুলো যেন বেশি পানি নিষ্কাশন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। হাওরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। হাওরের সম্ভাবনাকেও আমাদের কাজে লাগাতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী হাওরাঞ্চলের ছয় জেলায় মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার। সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের দুই হাজার ৮৬০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৫ হাজার ৩৪৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছয় জেলায় মোট ২১৩ দশমিক ৯৫ মেট্রিক টন মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে; সুনামগঞ্জে তিন হাজার ৯০২টি হাঁস ও চারটি মহিষ মারা গেছে।

সূত্র : সিলেটটুডে২৪