রাতারাতি তারকা খ্যাতি পাইলট এমিলির - Women Words

রাতারাতি তারকা খ্যাতি পাইলট এমিলির

ককপিটে কাজের ফাকেঁ তোলা ছবির পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ানোর সময় তোলা ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে রাতারাতি খ্যাতি পেয়েছেন কানাডার টরন্টোর ফার্স্ট অফিসার এমিলি ক্রিস্টিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩১ বছর বয়সী এই পাইলটের এখন ৩৮ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার।

২০১২ সালে বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স পান এমিলি। এর আগের বছর পাইলট হওয়ার লাইসেন্স আসে তার হাতে। এখন কানাডিয়ান এয়ারলাইন ওয়েস্টজেটের উড়োজাহাজে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বেড়ানোর সুযোগ থেকে শুরু করে এভিয়েশন শিল্পের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। ফলে ক্যারিয়ারের সবকিছুই উপভোগ করেন তিনি।

ম্যাসেজ থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করতেন এমিলি। কুড়িতে পৌঁছানোর পরই সিদ্ধান্ত নিলেন পাইলট হবেন। নারী হিসেবে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে মনে করেন না তিনি। তবে এটা মানছেন, নারী পাইলট হিসেবে কর্মস্থলে নিজেকে প্রমাণ করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বিমান চালনায় তার ঝুলিতে জমা হয়েছে আট বছরের অভিজ্ঞতা।

এমিলি বলেন, ‘নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া ও ভ্রমণ ভালো লাগে আমার। পাইলট হিসেবে কাজ করে সারাবিশ্ব চষে বেড়াতে পারছি ভাবলে নিজেকে মুক্তবিহঙ্গ মনে হয়। উড়ে বেড়ানোর অনুভূতি এককথায় অতুলনীয়। এর মাধ্যমে নিজের সমস্যা কিংবা দুশ্চিন্তাকে আহামরি কিছু মনে হয় না। জীবনের বড় বিষয়গুলো নিয়ে ভাবাই ভালো। আমার কাছে স্বাধীনতার মানে এটাই।’

এভিয়েশন শিল্পে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে বলে মনে করেন এমিলি। তার কথায়, ‘আমাদের জন্য যারা পথ তৈরি করে দিয়ে গেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। অন্যদের মতো আমিও পড়াশোনা করেছি। তবে আশা করি, এভিয়েশনে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে। আশা করি নারীদের স্বপ্নপূরণে সহযোগিতা করতে পারবো ও পিছু ফিরে তাকালে দেখবো সামান্য পরিবর্তন হলেও আনতে পেরেছি।’

মেয়ে হওয়ার কারণে প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে কিনা প্রসঙ্গে এমিলির অকপট কথা, ‘জানতাম আমাকে অন্যভাবে দেখা হবে। ধরুন একটা রুমে কেবল আপনি মেয়ে, তখন কী অনুভূতি হয় তা জানি। এমন পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার সঙ্গে কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং।’

ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ বিমান চালান এমিলি। প্রতি সপ্তাহে ১২ থেকে ১৬টি ফ্লাইটে দায়িত্ব পড়ে তার। এখন পর্যন্ত আইসল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, পেরু, কোস্টারিকা, কিউবা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রেলিয়া, বাহামাসসহ ৩৫টি দেশ ঘুরেছেন তিনি।

এ বছরের শেষ প্রান্তে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার কিলিমানজারো পর্বতে হাইকিংয়ের পরিকল্পনা আছে এমিলির। তার প্রিয় ভ্রমণ ছিল গত বছর ক্রোয়েশিয়ায়।

এমিলি মনে করেন, পাইলট হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল। তবে শেখার মাধ্যম হিসেবে ভ্রমণকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। বর্তমান ও আগামীর সহকর্মী, অতিথি, প্রিয়জন ও পরিবার আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলোয়ারদের মন জয় করতে চান তিনি।

সফল এই তরুণীর মন্তব্য, ‘নারী হিসেবে এভিয়েশন শিল্পে এসে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। ব্যর্থতা আসতেই পারে, তবে উতরে উঠতে পারলে সেটা আর ব্যর্থতা থাকে না। আমিও ফ্লাইট টেস্ট ও ছাত্রজীবনের পরীক্ষায় অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু নিয়মিত সফল হওয়ার চেষ্টা করেছি। ফলে সত্যিকারের সাফল্য দেখতে পেরেছি। শুরুতে পাইলট হওয়া অভূতপূর্ব কিংবা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার মনে হতে পারে। তবে এগিয়ে চলার মাঝে প্রতিদিন পিছু ফিরে তাকিয়ে কতটা পথ পেরিয়ে এসেছেন দেখলে চমকে যাবেন!’