কবি শহীদ কাদরী আর নেই - Women Words

কবি শহীদ কাদরী আর নেই

বর্তমান সময়ে বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি শহীদ কাদরী আর নেই। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় নিউইয়র্কের নর্থ শোর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান একুশে পদকপ্রাপ্ত এই কবি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। কবিপত্নী নীরা কাদরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২০ আগস্ট থেকেই নিউইয়র্কের জ্যামাইকার বাসায় কবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে গত ২১ আগস্ট স্থানীয় সময় রাত ৩টা ১৫ মিনিটে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শহিদ কাদরীকে। তবে পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার শারিরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকেই ছিলো।

তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। কবির একমাত্র ছেলে আদনান কাদরী জানিয়েছেন, তাঁর বাবার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সবার সঙ্গে পরামর্শ করে তা ঠিক করা হবে।

শহীদ কাদরী ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে ভারত) রাজধানী কলকাতার পার্ক সার্কাসে  জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের দিকে পরিবারের সাথে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) রাজধানী ঢাকায় চলে আসেন। এরপর প্রায় তিন দশক তিনি ঢাকা শহরে অবস্থান করেন এবং ১৯৭৮ সাল থেকে প্রবাসজীবন শুরু করেন। তিনি বার্লিন, লন্ডন, বোস্টন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নিউইয়র্কে বসবাস করেছেন। তিনি ১৯৪৭-পরবর্তীকালের বাংলা সংস্কৃতির বিখ্যাত কবিদের একজন যিনি নাগরিক-জীবন-সম্পর্কিত শব্দ চয়ন করে নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করে বাংলা কবিতায় সজীব বাতাস বইয়ে দিয়েছেন। আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দিয়েছেন শহীদ কাদরী। ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যের তীক্ষ্ণ শাণিত রূপ তার কবিতাকে বৈশিষ্ট্য দান করেছে। শহর এবং তার সভ্যতার বিকারকে শহীদ কাদরী ব্যবহার করেছেন তার কাব্যে। তার কবিতায় অনূভূতির গভীরতা, চিন্তার সুক্ষ্ণতা ও রূপগত পরিচর্যার পরিচয় সুস্পষ্ট।

‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ এবং ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।