পায়রা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু - Women Words

পায়রা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু

 

বাংলাদেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক সমুদ্র বন্দর হিসেবে পায়রায় বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ‌্য খালাস কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করলো পটুয়াখালীতে অবস্থিত সমুদ্র বন্দরটি।

ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান। এসময় নামফলক উন্মোচন করেন তিনি।

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পায়রা হচ্ছে শান্তির প্রতীক। সে কারণে এ নামটি আমি পছন্দ করেছি। ভবিষ্যতে পায়রা বন্দর গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে রূপ নেবে।’

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত ছিল। এদিকে কেউ কখনো তাকায়নি। আমরা চেষ্টা করছি দেশটাকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে। আর সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই অঞ্চলে পায়রা বন্দর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এলাকার মানুষ যাতে জমি অধিগ্রহণের জন্য ন্যায্য মূল্য পায়, আমরা তা নিশ্চিত করব। এই এলাকার মানুষজন এমনিতেই প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে। আমরা মনে করি, পায়রা বন্দর গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুঃখ-কষ্ট আর থাকবে না। আমরা পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সৃষ্টি করব। আমরা নদীগুলোকে ড্রেজিং করে ব্রহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত নিয়ে যাব।’

জাহাজ এফভি ফরচুন বার্ড থেকে পণ্য ‌খালাসের মধ‌্য দিয়ে পায়রার যাত্রা শুরু হল। প্রায় ৫৩ হাজার মেট্রিক টন পাথর নিয়ে গত ৩১ জুলাই পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের বহির্নোঙরে আসে প্রথম জাহাজ এফবি ফরচুন বার্ড। ১ আগস্ট অনানুষ্ঠানিকভাবে এসব পাথর খালাস করার কথা থাকলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এত দিনে তা সম্ভব হয়নি। পায়রা বন্দরের বহির্নোঙরে ১১ দিন ধরে অপেক্ষা করেছে জাহাজটি।

বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে ১০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে তার মধ্যে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পদ্মা সেতু রয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ১৬ একর জমির উপর পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৮  নভেম্বর।

২০১৮ সালের মধ‌্যে এই সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মো. সাইদুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস করে নৌপথে পরিবহন করা হবে। পণ্য খালাস ও পরিবহনের জন্য ইতোমধ্যে বন্দরে এসে পৌঁছেছে ১৫টি লাইটার জাহাজ।”

পায়রা বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, বড় বড় জাহাজ যেন রামনাবাদ চ্যানেলে নির্বিঘ্নে চলাচল এবং মূল বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করতে পারে সেজন্য চ্যানেলের গভীরতা পর্যবেক্ষণ করে খননের (ড্রেজিং)কাজ অচিরেই শুরু হবে।

দক্ষিণ জনপদের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হবে পায়রা বন্দর, এরকমটাই মনে করা হচ্ছে। বন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

সূত্র: প্রথম আলো, বিডিনিউজ