কুবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১ - Women Words

কুবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নেতা নিহত হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার পর উপাচার্য মো. আলী আশরাফের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদের বেলা ১১টা ও ছাত্রীদের বেলা দুইটার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নিহতের নাম খালিদ সাইফুল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কবি নজরুল হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়।
সংঘর্ষের সময় আতঙ্কিত হয়ে হল থেকে লাফিয়ে পড়ে, গুলিতে ও রামদার কোপে অন্তত নয়জন আহত হয়েছে। তারা কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কুণ্ডু গুপী দাসকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। বিভিন্ন হলে পুলিশের তল্লাশি চলছে।

শিক্ষার্থী ও প্রশাসন জানিয়েছে, শোকের মাসে গতকাল দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু হলে ছাত্রলীগের উদ্যোগে মোমবাতি জ্বালানো হয়। কর্মসূচি শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ৫০ থেকে ৬০ জন কর্মী বঙ্গবন্ধু হলে যান। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলিবিনিময় হয়। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহীর কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। কয়েকজনের কাছে ছিল রামদা, পিস্তল। একপর্যায়ে খালিদের মাথায় গুলি লাগে। তাঁকে প্রথমে কুমিল্লার স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল।

এই সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হলে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ছিলাম নিরস্ত্র।’
তিনি আরও বলেন, বিপ্লব নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী বহিরাগত যুবকদের নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এত রাতে বঙ্গবন্ধু হলে কেন গিয়েছিলেন, জানতে চাইলে নাজমুল কোনো উত্তর দেননি।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মো. আইনুল হক বলেন, ছাত্রলীগের এক পক্ষ মধ্যরাতে আরেক হলে এসে গুলি ছোড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নয়জন বলেও জানান তিনি।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের গুলিবিনিময়ে একজন নিহত হয়েছেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো