ঝিনাইদহে পুনরায় হিন্দু সেবায়েতকে হত্যা - Women Words

ঝিনাইদহে পুনরায় হিন্দু সেবায়েতকে হত্যা

ঝিনাইদহে পুনরায় এক মন্দিরের সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম শ্যামানন্দ দাস ওরফে বাবাজি (৫০)। তিনি তিন বছর ধরে সদর উপজেলার উত্তর কাষ্ট সাগরা গ্রামের শ্রীশ্রী রাধামদন গোপাল বিগ্রহে (মঠ) কর্মরত ছিলেন।
শ্যামানন্দের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার মুসুড়িডাঙ্গা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম কিরণ চন্দ্র।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুর্বৃত্তরা  শ্যামানন্দকে কুপিয়ে  গুরুতরভাবে জখম করে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করে এক নারী প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শ্যামানন্দ প্রতিদিনের মতো আজও পূজার জন্য ফুল তুলতে মঠ থেকে বের হয়েছিলেন । এ সময় শহরের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে আসে তিন ব্যক্তি। তারা শ্যামানন্দকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। তাদের মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। আর মাথায় ছিল ক্যাপ। মাঝের জনের হাতে একটি রামদা ছিল।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার শেখ আলতাফ হোসেন জানান, যে কৌশলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বিভিন্ন জঙ্গি হামলা ও হত্যার ঘটনার মিল রয়েছে।
মৃত্যু নিশ্চিত করতে এই হিন্দু সেবায়েতের মাথা ও ঘাড়ে একাধিক কোপ দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
মঠ পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মণি কুমার রায় বলেন, শ্যামানন্দ ভালো মানুষ ছিলেন। পূজা-অর্চনায় সব সময় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। বাইরে যাওয়া-আসা করতেন খুব কম।
গত ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষারভাগাড় এলাকায় হিন্দু পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীকে (৭০) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর তিন দিন পর গত ১০ জুন পাবনার সদর উপজেলার হিমাইতপুর গ্রামের শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের (হিমাইতপুর ধাম) সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে (৬২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দল আইএস পুরোহিত আনন্দ হত্যার দায় স্বীকার করে বার্তা দিয়েছে বলে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ জানায়। অপরদিকে, এই হত্যার পেছনে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির জড়িত থাকার সন্দেহের কথা বলে আসছে পুলিশ।
গত ১৫ মার্চ ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের একাংশের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সেক্রেটারি আব্দুর রাজ্জাককে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার নিমতলা বাসস্ট্যান্ডে এই ঘটনা ঘটে। রাজ্জাক ছিলেন একজন হোমিও চিকিৎসক ও শিয়া মুসলিম। আইএস এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে প্রকাশ পায়।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বালেখাল বাজারে হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক সমির আলিকে হত্যা করা হয়। তিনি ২০০১ সালে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। খুনিরা চেম্বারে ঢুকে সমিরকে ছুরিকাহত করে পালিয়ে যায়। আইএস পরে এই ঘটনার দায় স্বীকার করে বার্তা পাঠায়।
সূত্রঃ বিডি নিউজ, প্রথম আলো