সাকিব কীর্তির পরও তৃতীয়দিন শেষে এগিয়ে ইংল্যান্ড - Women Words

সাকিব কীর্তির পরও তৃতীয়দিন শেষে এগিয়ে ইংল্যান্ড

আগেরদিনের গোধূলি শেষের কালো আজ সকাল পর্যন্ত বিষাদমাখা হয়ে থাকবে কে জানত। আগেরদিন যে সাকিব আল হাসানের হাত ধরে একটু করে কাটছিল হতাশার মেঘ, দারুণ একটি জুটিতে দুপুর থেকে বিকেল গড়াতেই আবার ঘনিয়ে এল আধার। শেষ বিকেলে একটু আলোর রেখা দেখানো সাকিব আজ সকালে তা আর তীব্র করতে পারেননি। তার বিদায়ের পর দ্রুতই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২২৮ রান তুলে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করেছে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানের লিড মিলিয়ে ইংলিশরা এগিয়ে ২৭৩ রানে।

বাংলাদেশের সকালটা শুরু হয়েছিল বঙ্গপসাগরসম আশা নিয়ে। ৫০-৭০ রানের লিড নিতে পারলেও ভীষণ চাপে পড়ে যেত সফরকারীরা। সেই আশার সাগর শুকিয়ে গেল সাত সকালেই। দিনের দ্বিতীয় বলেই বাজে শটে আউট সাকিব। বাকি সব উইকেটও ঝরে গেছে টুপটাপ। হতাশাটা পাশে রেখে সাকিব জ্বলে উঠলেন বল হাতে। শুরুটা যদিও প্রথম ইনিংসের মতোই মেহেদী হাসান মিরাজের হাত ধরে। এশিয়ায় রেকর্ডটা দুর্দান্ত হলেও এই টেস্টে দ্বিতীয়বারের মত ব্যর্থ অ্যালেস্টার কুক। স্লিপে নীচু হওয়া বলটি দারুণ দক্ষতায় লুফেছেন মাহমুদউল্লাহ।

পরের ওভারেই আরেকটি বড় সাফল্য। স্পিনে দক্ষ জো রুট এলবিডব্লিউ সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির এটি ১৫০তম টেস্ট উইকেট। দেড়শ’ ছাড়িয়ে যেতেও লাগেনি সময়। নিজের পরের ওভারেই সাকিব ফেরান বেন ডাকেটকে। দিনের শুরুর সাফল্যের হাসি তখন অনেকটাই ম্লান ইংল্যান্ডের। লাঞ্চ বিরতিতে যায় তারা ৩ উইকেটে ২৮ রান নিয়ে।

দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টায় ধরা দিয়েছে আরও দুটি উইকেট। তাইজুল ইসলামের প্রথম ওভারেই বিদায় গ্যারি ব্যালান্স। লেগ স্লিপে অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় কাচ নেন ইমরুল কায়েস। জমে ওঠার আগে মইন আলিকে ফেরান সাকিব। ফলে ইংল্যান্ডের স্কোর বোর্ডের পরিণত হয়ে ৫ উইকেটে ৬২রান। তবে এই অবস্থা থেকে দলকে টেনে তোলেন স্টোকস ও জনি বেয়ারস্টো। অনেকটা সফলও তারা। দুজনের দারুনভাবে খেলায় ফিরে সফরকারীরা। স্টোকস ৮৫ ও বেয়ারস্টো ৪৭ রান করে আউট হলেও ততক্ষণে লীড আড়াইশ ছাড়িয়ে গেছে। এ জুটি ভাঙ্গেন অভিষিক্ত পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। পুরো ম্যাচে নির্বিষ বোলিং করা এই পেসারের বাড়তি বাউন্সের এক বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন বেয়ারস্টো। এরপর স্টোকসকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। আর আদিল রশিদকে একইভাবে আউট করে আরেকটি ৫ উইকেট পকেটে পুরেন তিনি।

ইনিংসটির পথেই বেয়ারস্টো গড়েছেন বিশ্বরেকর্ড। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেলেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে (১ হাজার ৪৫)। এ বছর টেস্টে হাজার রান করা একমাত্র ব্যাটসম্যানও বেয়ারস্টোই (১ হাজার ৯১)। সঙ্গীকে হারানোর খানিক পর বিদায় নিলেন স্টোকসও। সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ ৮৫ রানে। খানিক পর আদিল রশিদকে ফিরিয়ে সাকিব পূর্ণ করলেন টেস্ট ক্রিকেটে তার পঞ্চদশ ৫ উইকেট। ক্রিস ওকস আর স্টুয়ার্ট ব্রড কাটিয়ে দেন দিনের শেষ সময়টুকু।