পার্লামেন্টে ‘যৌন হয়রানির শিকার’, পাকিস্তানের নারী এমপির আত্মহননের হুমকী - Women Words

পার্লামেন্টে ‘যৌন হয়রানির শিকার’, পাকিস্তানের নারী এমপির আত্মহননের হুমকী

পাকিস্তানে পার্লামেন্টে এক নারী এমপি তাঁর পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। যৌন হয়রানির শিকার নারী এমপি হচ্ছেন, সিন্ধু প্রদেশের আইনপ্রণেতা নুসরাত সাহার আব্বাসি। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এএফপিকে তিনি বলেন, ব্যাপক আলোচিত এ ঘটনা প্রমাণ করে এ দেশে নারীদের সুরক্ষায় আইনের প্রয়োগ না হওয়ার বিষয়টি।

নুসরাত অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) প্রাদেশিক মন্ত্রী ইমদাদ পিতাফি প্রাদেশিক পরিষদের ভবনে ব্যক্তিগত কক্ষে তাঁকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানান, যা যৌন হয়রানির নামান্তর।

তিনি আরো বলেন, সেখানে তিনি এ ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু ডেপুটি স্পিকার, যিনি নিজেও একজন নারী, তিনি এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি নাকচ করেন।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাতে ছোট বোতল ধরা অবস্থায় নুসরাতের একটি বিষণ্ণ ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, বোতলে পেট্রল রয়েছে। এ ঘটনায় যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তিনি নিজের জীবন শেষ করে দেবেন।

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে প্রাদেশিক সরকারের প্রধান এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন। অভিযুক্ত মন্ত্রী পিতাফিও চাপের মুখে অপরাধ মেনে নেন এবং প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নুসরাতকে সম্মান জানিয়ে একটি চাদর দিতে চান। এ সময় পিতাফি নুসরাতের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

নুসরাত এএফপিকে বলেন, এই ঘটনা এখন ‘শেষ’। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে যৌন হয়রানির মতো নির্যাতনের হাত থেকে নারীদের সুরক্ষায় আইনের প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। তিনি বলেন, ‘আইনের প্রয়োগ এখনো স্বপ্নই। আমরা নারী এমপিরাও লিঙ্গবৈষম্য ও হয়রানি থেকে মুক্ত নই।’

কট্টর রক্ষণশীল এই দেশটিতে নিজেদের অধিকারের জন্য নারীদের কয়েক দশক লড়তে হয়েছে। তবে এখনো সেখানে অনার কিলিং ও অ্যাসিড নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে।

গত কয়েক বছরে পাকিস্তান নারীদের সুরক্ষা দিতে বেশ কয়েকটি আইন পাস করেছে। এর মধ্যে প্রাদেশিক পর্যায়েও কিছু কিছু আইন হয়েছে। কিন্তু সমালোচকেরা সতর্ক করছেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ না হলে এর সুফল পাওয়া যাবে খুবই সামান্য।

সূত্র : সিলেটটুডে