আহা! পৃথিবীতে এতো বৈষম্য কেন? - Women Words

আহা! পৃথিবীতে এতো বৈষম্য কেন?

ফারিনা মাহমুদ

ট্রেনে বসে লিখছি।
আমার পাশে বসে আছে মেদহীন দীর্ঘাঙ্গী ও আকর্ষনীয়া এক রমনী। কোলে ছোট্ট পুতুলের মতো বাচ্চা। ট্রেনে যখন উঠি আমার দিকে তাকিয়ে একটা স্মিত হাসি দিয়েছিলেন মহিলা। স্বাভাবিক কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করলাম- তোমার কন্যার বয়স কতো?
– মাত্র ১০ সপ্তাহ।
ভালোভাবে তাকালাম মহিলার দিকে- চমৎকার স্কীন টাইট জিন্স আর টপ পরা। এই মহিলার পেটের ভিতর ১০ সপ্তাহ আগেও এই বাচ্চা কোথায় এবং কিভাবে ছিলো খোদায় জানে! হেসে বললাম- তোমার কন্যা তাহলে ব্র্যান্ড নিউ!
– একদম! নিউ হলে কি হবে, ও এখনই টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে, জানো? মহিলার কণ্ঠে উচ্ছ্বাস।
– তো আজ কি মা মেয়ে ঘুরতে যাচ্ছ নাকি?
– না, আসলে এর পরের স্টেশনে ( অপেরাহ হাউসের পাশে) ওর বাবা আসবে, ওকে ওর বাবার কাছে দিয়ে আমি আমার বান্ধবীদের সাথে মিট করতে যাবো। ডিনার শেষে আমাদের আড্ডা হবে। ওর বাবা গভীর রাতে গিয়ে আমাকে নিয়ে আসবে। আগামী কয়েক ঘন্টা একান্তই আমার নিজের সময় …ভালো থেকো। হ্যাপি লং উইকেন্ড!
– তুমিও …

মহিলা নেমে গেলো এই মাত্র! ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখলাম প্ল্যাটফর্মে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলো বাচ্চার বাবা। দুজনের দেখা হতেই জড়িয়ে ধরে একটা আলতো চুম্বনের সম্ভাষণ। বাবার হাতে বাচ্চার স্ট্রলার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মা…

আমি ভাবছি আর ভাবছি…

আমাদের দেশের ১০ সপ্তাহ বয়সী একটা বাচ্চার মা অফিস ফেরত বাবার কাছে বাচ্চা দিয়ে ‘একান্ত নিজের মতো’ সময় কাটানোর জন্য সেজেগুজে কি আদৌ কোনোদিন যেতে পারবে?
আহা! পৃথিবীতে এতো বৈষম্য কেন???