আইএসে যাওয়া ব্রিটিশ-বাঙালি কিশোরী নিহত - Women Words

আইএসে যাওয়া ব্রিটিশ-বাঙালি কিশোরী নিহত

সিরিয়ার রাকায় রাশিয়ার জঙ্গি বিমান হামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কিশোরী খাদিজা সুলতানা নিহত হয়েছেন। পরিবারকে না জানিয়ে আইএসে যোগ দিতে দেড় বছর আগে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় যান তিনি।

তার পারিবারিক আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে বিমান হামলায় খাদিজা নিহত হন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

খাদিজার মৃত্যুর খবরে তার পরিবার একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে জানিয়ে তাসনিম বলেন,‘পরিবারের একজন সদস্যের মৃত্যূর খবরের চেয়ে খারাপ খবর আর কি হতে পারে। তবে খাদিজা যে একজন উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় তরুণী ছিল, এতে কোনও সন্দেহ নেই।’
তিনি আরও জানান, ‘খাদিজার এই করুণ পরিণতি হবে আমরা এটা জানতাম, তাকে ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করেছি, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা এই কিশোরীর জীবন বাঁচাতে পারলাম না।’

খাদিজার আইএস ত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইএস ত্যাগ করাটা, অ্যালকাত্রাজ (স্যান ফ্রান্সিসকোর একটি বিচ্ছিন্ন দীপ, যেখানে রয়েছে মার্কিন সেনা কারাগার) থেকে বেরিয়ে আসার মতোই। যেখানে হত্যার জন্য গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া আছে।’

আইটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে খাদিজার বোন হালিমা খানম জানান, খাদিজা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার পরিকল্পনা করছিলেন। রাকা থেকে পালানোর পরিকল্পনা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন তিনি। তবে বিষয়টি যুক্তরাজ্য সরকার নিশ্চিত করতে পারেনি বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দুই বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে খাদিজা যখন লন্ডন ছাড়েন, তখন তার বয়স ১৬ বছর। বান্ধবী শামীমা বেগম ও আমিরা আবাসের বয়স তখন ১৫। শামিমা একজন বাংলাভাষী। আমিরা ইংরেজি আর আফ্রিকার আমহারিক ভাষায় কথা বলেন। তারা সবাই পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় বেথনাল গ্রিন একাডেমি নামের এক স্কুলে ‘এ’ লেভেলে পড়তেন।

গ্যাটউইক বিমানবন্দরের সিসিটিভি  ক্যামেরায় গতবছর শুরুর দিকে তাদের দেশ ছাড়ার ছবি ধরা পড়ে। যা নিয়ে পরে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।

সে সময় লন্ডনের পুলিশ তাদের সন্ধানে সবার সহযোগিতা চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। মেয়েদের বাড়ি ফেরার আহ্বান জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল ।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অনলাইনে জঙ্গি প্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে তারা তিন জন আইএস এর কথিত জিহাদীদের বিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ হন। সে কারণেই পরিবার ও দেশ ছাড়ে বলে ধারণা করা হয়। লন্ডন থেকে বিমানে চড়ে তুরস্কে যান তারা। পরে বাসে করে সিরিয়া সীমান্তে পৌঁছান।

প্রেস অ্যাসেসিয়েশন জানায়, এক সোমালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে খাদিজার বিয়ে হয়েছিল। বিমান হামলায় তার স্বামীও নিহত হন।
ব্রিটেনের অন্তত ৮০০ নাগরিক এখন পর্যন্ত আইএস-এ যোগ দিতে সিরিয়া গিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ২৫০ জন ফিরে এসেছেন। তাদেরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন, বিডিনিউজ