রোমেনা লেইস Archives - Women Words

Tag: রোমেনা লেইস

ভালো থেকো মা অন্যলোকে

ভালো থেকো মা অন্যলোকে

রোমেনা লেইস কুচবিহারের হেমকুমারীতে ১৯৩৪ সালের এক শীতে আমার মায়ের জন্ম।ব্যবসায়ী বাবার প্রথম সন্তান।রাবেয়া খাতুন। সবার খুব আদরের।আমার মায়ের কাছেই ডুয়ার্সের চা বাগানের গল্প শুনেছি।আংড়াভাসা নদী আর  ‘নয়া নয়া বথুয়া নুন তেল পায় ‘...শুনে শুনে বড় হয়েছি।পরে সমরেশ মজুমদারের বণর্নায় সে ছবি মিলিয়ে নিয়েছি।স্কুলে ভর্তি করার জন্য পরবর্তীতে হলদিবাড়িতে আমার নানা বাড়ি কিনেছিলেন।আমার মায়ের সাথে হলদিবাড়ি একবার বেড়াতে যাবার কথা ছিলো কিন্তু আর যাওয়া হয়ে উঠলো না। আমার মায়েরা চারবোন, দুইভাই। মায়ের পরে এক ভাই।তারপর একবোনের পরে আরো এক ভাই।সবার শেষে আরো দুই বোন।শৈশব কৈশোর খেলাধুলা,স্কুলে যাওয়া, আনন্দ, হাসি, গান, গল্পে কেটে যাচ্ছিলো দিন।হিন্দু মুসলিম কোন ভেদাভেদ নাই।মিলে মিশে বেশ আত্মীয় পরিজনের মত দিন কাটছিলো।মায়ের বড়চাচাকে ডাকেন বড়বাজান।তাঁর তিনছেলে। বড়চাচীকে ডাকতেন বড়মা।।একান্নবর্তী পরিবারে সব ভাইবোন।আর অন্য চাচাকে
হাসির প্রয়াণ

হাসির প্রয়াণ

রোমেনা  লেইস সেদিন  শুক্রবার ।হাসির মায়ের শরীরটা বেশ খারাপ। মা কেন যেন চির রুগ্না।বিছানায় পড়ে থাকেন বেশী।বাসায় পোষা কুকুরটাও থেকে থেকে গলা উঁচু করে কাঁদছে কেন জানি। -কাঁদিস না ডন কাঁদিস না।চুপ কর চুপ কর।বিছানায় শুয়ে শুয়েই আম্মা বলেন। ওদের সবার বড়বোনের বিয়ে হয়েছে অনেক বছর।বড়বোন লন্ডনপ্রবাসী।কয়েক বছরে একবার অনেক উপহার নিয়ে বেড়াতে আসেন।মাসখানেক থেকে চলে যান।তবে রানু বুবু নাকি বড় মায়ের মেয়ে।মানে হাসির সৎমায়ের মেয়ে।ওর বাবার দুই বিয়ে। রানুবুবুর মা মারা যাবার পর হাসির মাকে বিয়ে করেন তমিজউদদিন সাব রেজিস্ট্রার । বহুবছর দেশে আর রানুবুবু  আসে না।হাসি,মিনু,বীনু তিনবোন।ভাই দুজন।পিঠাপিঠি ভাই কমল।সব ছোট ভাই অভিক। হাসি সবার বড়। হাসি গোলগাল অপূর্ব সুন্দরী।মায়াবী চেহারা।চুল দেখার মতো, ঘন কালো হাঁটু পর্যন্ত লম্বা।ঠোঁটের বাম পাশে তিল তাঁকে আরও আকর্ষনীয় করেছে।হাসিতে মুক্তো ঝরে।ছোট দুইবোন মিনু,বীনু কমলের ছো
সীমান্ত

সীমান্ত

রোমেনা লেইস স্রোতের শ্যাওলার মত ভেসে ওরা কোন এক গ্রামের ঘাটে ভিড়লো। গত সাত দিন ধরে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। ভারতের ধূপগুড়ি গ্রামে ওদের বাড়ি। ধরলার পানি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।চিত্রার বাবা মতিলাল শক্ত করে একটা কলার ভেলা বানিয়েছেন। অভাবের সংসারের সব সঞ্চয় এই কদিনে খাওয়া হয়ে গেলো। মতিলাল ওর দোকান খুলে বসে থাকলেও কেউ দোকানে আসেনি গত তিনদিন। আজ রাতে পানি বেড়ে ঘরদোর ভাসিয়ে দিল। ওর বউ চিন্ময়ী মেয়ে চিত্রা আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে ভেলায় উঠে বসলো।সেই ভেলা ভাসতে ভাসতে আজ ভোরে একটা গ্রামের ঘাটে এসে লেগেছে ।দুই একজন মানুষ দেখা গেল।উপচে পড়া পানি গ্রামটা মনে হচ্ছে পানির উপর ভাসমান। মতিলাল একজনকে জিজ্ঞেস করে -দাদা এইটা কোন গেরাম? --এটা লালমনিরহাট জেলার গেরাম নাম দূর্গাপুর। -বাংলাদেশ ? -হুম।তোমরা কোথা থেকে আসছ? --পশ্চিম বঙ্গের কুচবিহার থাকি বানের জলে ভাসি আসছি দাদা। ধরলা নদীর তীব্র স্রোতে ওরা ভেসে আসলো।বর্ডারের বিজিব
রমার গৃহপ্রবেশ

রমার গৃহপ্রবেশ

রোমেনা লেইস হলের গেস্ট রুমের পাশে ব্যাগ রেখে হলের  দাদুর কাছে চারটা কয়েন নিয়ে কয়েনবক্সে গেল।কয়েনবক্স  থেকে হৃদয় কে জানালো -আমি রোকেয়া হলে।বাসা থেকে চলে এসেছি আর যাব না। -তাই?আমি আসছিG তুমি চিন্তা করো না। রমার থমথমে গলা শুনে হৃদয় আর দেরী করে না। রমা হলের গেস্টরুমের সিঁড়ি তেই বসে থাকলো।অপক্ষার প্রহর বরাবরই দীর্ঘ । বাবার আদর, মায়ের অভিমানী মুখ, মেজদির গিন্নী গিন্নী ভাব,বড়দি আর বড়দার উপদেশ সব মনে পড়তে লাগলো। অসহায় রমা। হৃদয়কে কেন সবাই অপছন্দ করছে বুঝে উঠতে পারলো না। ঘন্টাখানেকের মধ্যে হৃদয় আসলো। ওকে ওর এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে গেলো। সেখান থেকে বিকেলবেলা শাওয়ার নিয়ে সেজেগুজে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিয়ে গেলো মা, দাদা,মাসি-মেসো সবাই মিলে। মালাবদল আর সিঁদুরের টিপ পড়িয়ে ওকে মাসির মিরপুরের বাসায়নিয়ে গেলো। -তড়িঘড়ি করে হৃদয়ের বন্ধুরা বাসরঘর সাজালো ফুল দিয়ে। মাসির বাড়িতেই বাসররাত  হলো।বাসর ঘরে রম
মায়াবতী

মায়াবতী

রোমেনা লেইস ছোট্ট মহকুমা শহর গাইবান্ধা ।এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি ।মফিজুর রহমান কোর্ট থেকে ফিরলেন তাড়াতাড়ি । ‘মায়ার মা ও মায়ার মা এদিকে আস।’ মায়ার আম্মা জাহানারা বেগম রান্না ঘরে রান্না করছিলেন।সেখান থেকে ছুটে আসলেন।শোবার ঘরে ফ্যান চালিয়ে বসলেন মফিজ সাহেবের পাশে।মফিজ সাহেব বললেন, ‘মায়া কোথায় ?’ ‘ও তো কলেজে ।ফিরে নাই এখনো।’ ‘শোন মায়ার মা, ওর জন্য বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে।ছেলে ডাক্তার ।গাইবান্ধারই ছেলে। বংশও খুব ভাল।বনেদী পরিবার ।দুই ভাই কোন বোন নাই। বড়ভাই বিরাট ব্যবসায়ী।শাহঘাটায় ছেলের বাবার দোতালাবাড়ি।গ্রামের বাড়ি তে প্রচুর ধানীজমি।ছেলে মোহসিন আলী রাজন।রংপুর মেডিকেল থেকে পাশ করে কাউনিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পোস্টিং হয়েছে । মায়ার ভাগ্য ভাল। মায়াকে কলেজের সামনে ছেলের বাবা আর ছেলে দেখেছে।ওদের পছন্দ হয়েছে খুব।আজ আমাদের পেয়ারা ডাক্তারের বন্ধু মজিবর আসলো আমার কাছে।এসে আমার হাত ধরে বললো -মফিজুর তুমি কলাম না
মানবিক মানুষ

মানবিক মানুষ

রোমেনা লেইস বুকের ভেতরে ভীষণ এক শঙ্কা নিয়ে ঘুম ভাঙলো। ভয় পাচ্ছি না মুখে বললেও ভয় পাচ্ছি। হুমায়ূন আহমেদের নাটকের দৃশ্য মনে পড়ছে। চোখ অপারেশনের পর চোখের বাঁধন খোলা হচ্ছে। ডাক্তার বললেন ধীরে ধীরে চোখ খুলতে, মেয়েটি ধীরে ধীরে চোখ খুললো। চিৎকার করে বলছে -মা আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না। নাহ।এটি সত্যি নয়। একটু পরই বললো -মা আমি দেখতে পাচ্ছি। আমি সব দেখতে পাচ্ছি। আমিও দেখতে পাবো। পরিবারের সবাই চোখের সার্জারীতে অভিজ্ঞ।পাশাপাশি কিন্তু ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও আছে। এই উপমহাদেশের বিখ্যাত রেটিনা স্পেশালিস্ট ছোটবোনের চোখের লেজার ট্রিটমেন্ট করার পরদিন রেটিনা ডিট্যাচ্ড হয়ে গেলো। অন্ধকার নেমে এলো আমাদের পরিবারে। কর্মসূত্রে দূরেই ছিলাম। কিন্তু কষ্টের অনুভব ছিলো অন্তরে। বোনটির বেদনার সামনে দাঁড়ানোর সাহস ছিলো না। নতুন বিয়ে হওয়া বোনটি আমার। তার হাজবেন্ড চাকরি ব্যবসা সব বাদ দিয়ে ভেঙে পড়া মেয়েটিকে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়ে
বর্ষপূর্তিতে উইমেন ওয়ার্ডস এর জন্য ভালোবাসা

বর্ষপূর্তিতে উইমেন ওয়ার্ডস এর জন্য ভালোবাসা

রোমেনা লেইস কীভাবে লেখা পাঠানো শুরু করলাম সেটা আজ আর মনে নেই। তবে লেখা পাঠানোর আর প্রকাশিত হওয়ার সময়টুকু খুব অস্থির থাকতাম। সম্পাদক যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করতেন। কয়েকবার বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। আমি ভাবতাম সম্পাদক না সম্পাদিকা? মনে হয় কোন হেডটিচার! আমাকে লেখা পাঠাতে হতো রবিবার আর লেখা প্রকাশিত হতো বুধবার। আমার মাথায় নিয়মতান্ত্রিক এই চাকা ঘুরতে থাকে। তখনো আমি জানতাম না কে পরিচালনা করেন নিউজ পোর্টালটি। সে সময় জানতে পারলাম ডিসেম্বরে আমাদের সুনামগঞ্জ সরকারী এস সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রিইউনিয়ন। প্ল্যান করলাম প্রাক্তন তারকা ছাত্রীদের নিয়ে লিখবো। সেটা পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি বুধবার প্রকাশিত হতো। চেনা জানা হলো সম্পাদক এর সাথে ।এতো অল্পবয়সী একটি মেয়ে কী পারদর্শিতার সাথে একটি পোর্টাল চালিয়ে যাচ্ছে। নামটা দেখে মনে হয়েছিলো শুধু মেয়েদের কথা বলে। পরে দেখেছি না। এতো রীতিমত
পরাণে পড়িয়াছে টান

পরাণে পড়িয়াছে টান

রোমেনা লেইস নিউইয়র্ক এ চলছে ২৬ তম বইমেলা। তিন দিনব্যাপি বইমেলার আজ (২১ মে) শেষ দিন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ মে)নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন রাস্তায় ‘বই হোক প্রজন্ম-সেতু’ স্লোগান নিয়ে এক মঙ্গল শোভাযাত্রার পর পাবলিক স্কুল ৬৯ এর সামনে ফিতা কেটে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। এসময় তার পাশে ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও বিশ্বভারতীর সাবেক অধ্যাপক পবিত্র সরকার। আমরা এ বছর বইমেলায় জড়িয়ে পড়েছি 'পেইন্টেড পোয়েমস’ এর সাথে। পেইন্টেড পোয়েমস সদস্যরা কবিতা ভালবাসেন। কবিতাকে মনের কোণে একটুখানি ব্যাকইয়ার্ডে যতন করেন, লালন করেন। পরিপাটি করে তোলেন। সেই কবিতাপ্রেমীরা অনলাইনে নিজেদের জড়িয়ে রেখেছেন কবিতার মত ভালোবাসায়। অনলাইনেই সব সিলেকশন, প্ল্যান, সময় নির্ধারণ। নিউইয়র্কের শেষবিকেলের আলোয় প্রথম দেখা হলো তাজুল ভাই এর সাথে। তাঁর পরিচয় তিনি নিজেই। তিনি চিত্রকর, গায়ক,
শুভ নববর্ষ

শুভ নববর্ষ

রোমেনা লেইস  বৈশাখ নিয়ে আসে আনন্দ বার্তা। নতুন বছরের নতুন আনন্দ সহ বৈশাখ আসে । আমরা বাঙালি। বছরের প্রথম মাস বৈশাখ । খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা আনার লক্ষ্যে মোঘল সম্রাট আকবর বাংলা সালের প্রবর্তন করেছিলেন । তিনি প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ অনুযায়ী তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সাল এবং আরবি হিজরী সালের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সালের নিয়ম চালু করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সাল গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সালের নাম ছিল "ফসলি সাল", পরে "বঙ্গাব্দ" বা "বাংলা বর্ষ "নামে পরিচিত হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ‌যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশ
নারী এখানে ওখানে

নারী এখানে ওখানে

রোমেনা লেইস বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,অর্ধেক তার নর’। এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ।জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। পরবর্তীতে জাতিসংঘেও সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে নারীর জীবন সংগ্রাম, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সচেতনতার বিষয়টি খুব জোরালো সমর্থণ পেয়েছে, যা বিশ্বব্য