বাল্যবিবাহের কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ লাখ লাখ কোটি টাকা হবে, যা দারিদ্র্য দূরীকরণের বৈশ্বিক উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে পারলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি কিছুটা রোখা যাবে এবং নারীদের শিক্ষার সুযোগ বাড়বে, যা তাদের উপার্জনক্ষম করে তুলবে। আর অর্থনীতিতে নারীর অবদান বাড়লে একটি দেশ সার্বিকভাবে লাভবান হবে। বিশ্বব্যাংক এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রিসার্চ অন উইমেন’-এর উদ্যোগে তৈরি মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য। প্রতিবেদনটিতে প্রকাশিত কিছু তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো:
– প্রতিবছর বয়স আঠারো পেরুনোর আগেই পনের মিলিয়নের মতো মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। অর্থাৎ প্রতি দুই সেকেন্ডে একটি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটছে।
– নাইজারে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি। সে দেশের ৭৭ শতাংশ মেয়ের বয়স ১৮ পার হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। চাদের ক্ষেত্রে এই হার ৬৮ শতাংশ এবং মালি ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৫৯ শতাংশ।
– বাল্যবিবাহের হার কমেছে, তবে সংখ্যা বেড়েছে যা বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বোঝা যাচ্ছে না।
– মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হলে বেশি সন্তান জন্ম দেয়ার প্রবণতা থাকে। তাই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা গেলে নাইজেরিয়ায় গর্ভধারনের হার ১২ শতাংশ, ইথিওপিয়া ও নাইজারে ১৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ কমবে, যা গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার উপর ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে।
– এখনই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা গেলে নাইজারের জনসংখ্যা ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৫ শতাংশ কমবে, যা দেশটির বাজেট এবং সরকারি সুযোগসুবিধায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
– জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো গেলে জিডিপি বাড়বে। ২০১৫ সাল নাগাদ যদি বাল্যবিবাহ বন্ধকরা যেতো, তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্ব ৫৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সুবিধা ভোগ করতো।
– বাল্যবিবাহের শিকারদের গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের মৃত্যু ঝুঁকি এবং শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি সাধারণ মায়েদের সন্তানদের চেয়ে বেশি। পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুদের প্রতি একশ’ জনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যুর কারণ অল্পবয়সে মা হওয়া।
সূত্র: ডিডাব্লিউ