বেঙ্গালুরুতে প্রথম সমকামী বিয়ে - Women Words

বেঙ্গালুরুতে প্রথম সমকামী বিয়ে

টিনএজ বয়স থেকেই নিজের থেকে চার বছরের বড় ‘দিদি’কে পছন্দ করত তাঁর ছোট ‘বোন’। ভাললাগার শুরু তখন থেকেই। ঘনিষ্ঠ সেই সম্পর্ক ভালবাসায় পরিণত হতে বেশি সময় নেয়নি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইচ্ছাটা একদিন সিদ্ধান্তে পরিণত হয়। সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে হবে। ভারতীয় আইনে বৈধ নয় সমকামী বিবাহ। আইনত স্বীকৃতি যে সম্ভব নয় তাই জানাই ছিল। কিন্তু সামাজিক শিলমোহর?

সেই চেষ্টাতেই অবশেষে বিয়ের সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর কোরামঙ্গলা মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন দুই তরুণী। এক জনের বয়স পঁচিশ, অন্য জন একুশের কোঠায়। কিন্তু সেই বিয়ে মানতে পারেনি পরিবার। বিজয়নগর থানায় অভিযোগ জানায় ২১ বছরের ওই তরুণীর পরিবার। এমনকী দুই বান্ধবীর কাউন্সিলিংয়েরও দাবি তুলেছেন তাঁরা।

বেঙ্গালুরু মিরর সূত্রে খবর, এটাই বেঙ্গালুরুর প্রথম সমকামী বিয়ে। দু’জনের মধ্যে বয়সে বড় তরুণী একটি কল সেন্টারে কাজ করেন। ছোটজন বেসরকারি একটি কলেজে পড়েন। পেইং গেস্ট হিসাবে থাকেন তিনি।

পুলিশের কাছে কল সেন্টারে কাজ করা তরুণী জানান, তিনি বহু দিন ধরেই তার ‘বোন’কে পছন্দ করতেন। সে সময় এক বার প্রেমের প্রস্তাব দিলেও প্রাথমিক ভাবে তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন ‘বোন’। কিন্তু হাল ছাড়েননি ওই তরুণী। বোনকে এখন নিজের ‘স্ত্রী’ হিসাবে পরিচয় দিতে চান তিনি। মলে গিয়ে ‘স্ত্রী’কে ওয়েস্টার্ন পোশাক আর দামি উপহার কিনে দিতে চান বলেও জানিয়েছেন ওই তরুণী।

বহু বছরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পর অবশেষে এ বছরেরই মে মাসে পালিয়ে গিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুই তরুণী। মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেন। বিয়ের পর থেকেই বাড়তে থাকে পরিবারের আপত্তি। পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছেও যান ওই দুই তরুণী। আদালতে ওই দুই তরুণীর আইনজীবী জানান, ওই দুই তরুণী ভালবাসার সম্পর্কে রয়েছেন। এবং তাঁরা একে অপরের সঙ্গে সুখে আছেন।
সাবালিকা হওয়ায় ওই দুই তরণীর বিরুদ্ধে এখনই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। তবে পরিবারের দাবিতে তাঁদের কাউন্সিলিং শুরু হয়েছে জানিয়েছে পুলিশ।

২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট একটি রায়ে ৩৭৭ ধারা বাতিল বলে ঘোষণা করেছিল। পরে ২০১৩ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমকামী বিয়ে এ দেশে অবৈধ বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। তবে অবৈধ হলেও এই ধারায় অভিযুক্তকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারে না প্রশাসন।

সূত্র: আনন্দবাজার