মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের বিজয় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না ট্রাম্প পক্ষ। নির্বাচনী ফল নিয়ে আগেই আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তারা। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেইলি ম্যাকএনানি বলেছেন, নির্বাচন এখনও শেষ হয়নি। শেষ হওয়ার এখনও অনেক বাকি। আইনি লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে।
নির্বাচনে কোনও অনিয়ম হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কৌঁসুলিদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন ম্যাকএনানি। তবে এমন অভিযোগের সমর্থনে কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
ম্যাকএনানি দাবি করেন, পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে রিপাবলিকান পর্যবেক্ষকদের কেন্দ্রে পর্যাপ্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি। বরং কর্মকর্তারা ডেমোক্র্যাট ভোটারদেরকে তাদের ভুলভাল ব্যালট ঠিক করে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল।
ম্যাকএনানি এমন দাবি তুললেও ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ভিন্ন কথা। ফিলাডেলফিয়া এনকোয়ারার বলছে, কেন্দ্রে উভয় দলের পর্যবেক্ষকদেরাই উপস্থিত ছিলেন। তবে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভোট গণনার টেবিলের ১৩ থেকে ১০০ ফুট দূরে ছিলেন তারা।
সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের ভোট পুনর্গণনার অনুরোধ করার শতভাগ অধিকার রয়েছে। সংবিধানের আলোকে ধনী সংবাদমাধ্যমগুলোর এই প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই।
হোয়াইট হাউজে বিদায়ী ও আসন্ন প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করে থাকে জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ)। তারাই পুরনো প্রশাসনের কাছ থেকে নতুন প্রশাসনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। তবে নির্বাচনি ফল নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে এবার ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছে জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ)।
নিয়ম অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার কথা। এর আগেই বিদায়ী ও আসন্ন প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজটি সেরে নিতে হয়। ফলে বাইডেন শিবিরের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিএসএ কখন সরকার বদলের এ প্রক্রিয়া শুরু করবে সে ব্যাপারে আইনে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। তবে বাইডেন শিবির বলছে, তাদের বিজয় পরিষ্কার। ফলে এখানে বিলম্ব বা কালক্ষেপণ করার কোনও সুযোগ নেই।
জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর বর্তমান প্রশাসক এমিলি মারফি। ২০১৭ সালে তাকে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে এখনও কারও বিজয় চূড়ান্ত বলে মনে করছেন না মারফি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, মারফি একজন পেশাদার মানুষ। ফলে একটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তে উপনীত হতে তিনি সময় নিচ্ছেন।