শবনম সুরিতা Archives - Women Words

Tag: শবনম সুরিতা

ভালোবাসা কেবলই ‘সব ভালো’-র উদযাপনের মুখোশে দুর্বলতাকে অস্বীকার

ভালোবাসা কেবলই ‘সব ভালো’-র উদযাপনের মুখোশে দুর্বলতাকে অস্বীকার

শবনম সুরিতা ডানা আমাদের জীবনে সেরকমভাবে দেখতে গেলে ছন্দপতন একটা অস্বাভাবিকতা। যা চলছে, যেমনভাবে চলছে, তা যতই অস্বস্তির, নোংরা বা অন্যায় হোক না কেন, তালে তাল মিলিয়ে চলে যেতে পারলেই, সব ঠিক আছে। মোটামুটি ভদ্রস্থ পড়াশোনা, একটা চাকরি, একটা সংসার, বছর ঘুরলে পুরী-দার্জিলিং-সব মিলিয়ে এই বেশ ভালো আছি। 'ভালো লাগছে না' বা 'এটা অনুচিত' বলে এই নিয়মে ফাটল ধরানো সমাজের চোখে শুধু নয়, আশেপাশের অনেক মানুষদের কাছেই আলোচ্য বিষয়। এই যেমন আমি কেন টুয়েলভে সায়েন্স পড়িনি, কেন আর্টস হলেও অংক পড়তে হবে, কেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ে নৃতাত্ত্বিক বিষয়ে আগ্রহী হব, কেনই বা চাকরি না করে আরেকটা মাস্টার্স করব- আমার সকল পছন্দ-অপছন্দ, সিদ্ধান্ত-সিদ্ধান্তহীনতায় দেখতে পাই আমার চেয়ে পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব বেশি। যদিও যুক্তি দিয়ে হারাতে পারেনি, তাও আজো অনেকেই প্রশ্ন করেন আমায় কী হবে পিএইচডি করে, কেন আমি পোস্টকার্ডের মত দেশে-বিদেশে থাকা
কর্ম যখন প্রবল আকার

কর্ম যখন প্রবল আকার

শবনম সুরিতা ডানা এক. সাদা কাগজের দিকে ঠায় তাকিয়ে আছি। তাকিয়ে থাকতে আজকাল আর সাহস লাগে না। চোখ ফেরাতে তাও ধক লাগে অনেক। এখন মানুষের মুখের থেকে চোখ ফেরানো কঠিন। তুলনায় অমানুষদের সাথে বাক্যালাপ বরং অনেক সহজ। ঠিক যেভাবে প্রসাদকাকুর থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে পেরেছি আমি। বুঝেছি, ওখানে একটা মানুষ ছিল একটু আগেও, তবে এখন নেই। প্রসাদকাকু ছিল। ছিল, অর্থাৎ অতীত। অতীতের থেকে চোখ ফেরানো অনেক সহজ। বর্তমানের দিকে দৃঢ় দৃষ্টিপাত করা বড্ড কঠিন। অতএব আমি সাদা অতীতের, শূন্যতার দিকেই ঠায় তাকিয়ে আছি। এভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই বুঝতে পারি আমার আসলে লেখার কিছু নেই, বলারও না। শুনেছি মানুষের মৃত্যুতে শোক থাকে, আমার প্রবল রাগ আছে। ভয় পাচ্ছি আমি খুব। ভয় পাচ্ছি কারণ আমি যে আর বিশ্বাস রাখতে জানব না। ঝাঁকরা চুল, হাসিমুখে মুশকিল আসান হয়ে আসা সকল মানুষদের স্থায়িত্ব অস্বীকার করব, জানি। যখনই কেউ কাঁধে হাত রেখে বলবে, “ডানা, তুই এখ
ভাইফোঁটা

ভাইফোঁটা

শবনম সুরিতা ডানা সব সময় চাইতাম আমার যাতে একটা বোন হয়। যদিও মামার মেয়ে, মানে তিতির, ছিলই, কিন্ত নিজের ঘরে মায়ের পেটের একটা বোন সব সময়েই চেয়ে এসেছি। কিন্ত ওই যে, যা চাইব তা কখনোই না পাওয়ার প্যাটার্ন। এবারেও হল তাই। ঠাকুমার সংস্পর্শে একটু বেশিই উদ্বুদ্ধ হয়ে ছোটবেলায় আমি খানিক ভগবান-ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ছাতার মাথা বুঝতাম না ভগবান, ঠাকুর এঁরা কী প্রজাতির জিনিস। খায় না মাথায় দেয়। খালি এটুকু বুঝতাম যে বিশাল ক্ষমতাশালী। তো আশেপাশের মানুষ ছেড়ে আমি ভগবানকেই বেছে নিলাম আমার মুশকিল আসান করে দেবার জন্য। একটা ইয়া বড় চিঠি লিখেছিলাম। ইস্কুলে তখন সদ্য শিখেছি বাংলায় চিঠি লেখা। কায়দা করে ‘প্রাপক’ ও ‘প্রেরক’ লিখতেও ভুলিনি। তিন-চার পাতা লম্বা সেই চিঠিতে ছিল আমার সাত বছর বয়েসের নানা জীবনযন্ত্রণার কথা। যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছিলাম ঠিক কী কী কারণে আমার একটা বোনের ভীষণ প্রয়োজন। প্যাঁচে পড়লাম যখন চিঠিটা পাঠাবার সময় এলো।
আর্ট অফ লিভিং

আর্ট অফ লিভিং

শবনম সুরিতা ডানা চোখে চোখ রেখে মিথ্যে বলাটা একটা আর্ট। সবাই পারেনা। সবাই শিল্পী নয়। কিন্ত চারপাশে আজকাল শিল্পীর প্রাচুর্য্য অন্য গল্প বলে। আমার ফেসবুকে বন্ধু সংখ্যা প্রায় চার হাজার। এর বাইরেও আমি প্রায় শ’খানেক মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। এছাড়াও রোজকার আসা-যাওয়া, জীবনযাপনের প্রতিটি মুহূর্তে পরিচিত হতে থাকি নিত্যনতুন মানুষদের সাথে। এতগুলো লোকের সাথে আমার জীবন জড়িয়ে আছে, কিন্ত তাদের মধ্যে কেউই জোর গলায় ধর্ষণ বা কোন মহিলার সাথে অভব্য আচরণের পক্ষে কথা বলেন না। কিন্ত এই আমার ২৪ বছর ৯ মাসের জীবনে এমন একটি সপ্তাহও পেরোয়নি যখন আমার মতের বিরুদ্ধে কেউ আমার গায়ে হাত দেয়নি, আমায় কুপ্রস্তাব দেয়নি বা অন্য কোন ধরনের যৌনহেনস্থায় পড়তে হয়নি। প্রথম কবে এমন হয়েছিল মনে নেই স্পষ্ট। ১২-১৩ বছর বয়েস হবে হয়ত। তার আগে, আরো অনেক অল্প বয়সে হেনস্থা হতে হয়েছে ঠিকই, তবে সাপ্তাহিক বা দৈনন্দিনতা ছিলনা সেখানে। ওগুলো সারপ্র