মুক্তমত Archives - Page 8 of 10 - Women Words

মুক্তমত

বিয়ে নিয়ে ধারণা, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ

বিয়ে নিয়ে ধারণা, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ

সিফাত বিনতে ওয়াহিদ বিয়ের কনসেপ্ট নিয়ে আমার খুব বাজে এক্সপেরিয়েন্স আছে, তাই আমার কাছে কেউ বিয়ের সাজেশন চাইতে আসলে আমি আমার এক্সপেরিয়েন্সের আলোকেই সাজেস্ট করে থাকি, যদিও এটা অথেনটিক নয়। পূর্বের স্ট্যাটাসে লিখছিলাম বিয়ের আগে অবশ্যই উভয়ের পরিবার দেখে বিয়ে করুন, তা নাহলে হয়তো আপনাকে সম্মুখীন হতে হবে এমন অনেক পরিস্থিতির যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। ধরুন, বিয়ের পর পর আপনার বাবা-মা দিন-রাত আপনার খবর নিতে ফোন করছেন, যেহেতু আপনি তাদের একমাত্র মেয়ে। এই বারবার ফোনে আপনি কিছুটা বিরক্ত হলেও শ্বশুর বাড়ি লং ডিস্টেন্স হওয়ায় বাবা-মাকে বারবার ফোন করার কথা না করতে পারছেন না, যেহেতু তারা ইচ্ছে করলেই তাদের কলিজার টুকরাকে দেখতে পারছেন না। কিন্তু দিন শেষে আপনার বি. এ/বি. এড করা শাশুড়ি আম্মাও দেখবেন পাড়া-প্রতিবেশি আত্মীয় স্বজনকে বলে বেড়াবেন- সারাদিন বউরে ব্যাডারা ফোন দেয়। আবার আপনার গায়ের রঙ যদি কালো হয়, তা আ
‘উড়নচন্ডি’ মা ও সংসারী মেয়ের গল্প

‘উড়নচন্ডি’ মা ও সংসারী মেয়ের গল্প

লোসা মির্জা উড়নচন্ডি এই আমিকে প্রথম সংসারী যে করেছিল, সে আমার কন্যা আয়ীদা ফাতিমা কবীর। ডাক নাম ‘ঋ’ । তার জন্মদিন ২৩ শে ফেব্রুয়ারি। তার জন্মের আগের রাতে হঠাৎ হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছিলাম আমি। আমার স্বামী বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন কি হয়েছে। আমি শুধু কাঁদতে কাঁদতে বলেছি... ‘কালকে থেকে আমি কি করব? আমিতো কিছু পারি না। বাচ্চা হলে কি করতে হয় তার কিছুই জানিনা। আমি এর আগে কোন ছোট বাচ্চা কোলেও নেইনি ‘ কথাটা সত্যি। আমি বড় হয়েছিলাম পরিবারের প্রচন্ড আদর নিয়ে। জীবনের কঠিন দিকগুলি কখনোই আমাকে বুঝতে দেয়া হয়নি। আমার সময় কেটেছে পড়াশোনা, গান, কবিতা, বিতর্ক, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, ক্লাব এবং বন্ধুদের নিয়ে ঢাকা শহরে গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে আর নতুন রেঁস্তোরা পরীক্ষা করে। এমনকি আমার বিয়ের পরেও তা অপরিবর্তিত থেকেছে আমার স্বামীর কারণে। সারাজীবন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া আমাকে গড়ে তোলা হয়েছিল বিশ্বের দরবারে নিজেকে প্রতি
নান্দিক নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘হাসন রাজা’

নান্দিক নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘হাসন রাজা’

রীমা দাস হাসন রাজা-এই নামটি এখন দেশে বিদেশে আলোচিত এক নাম। গতকাল শনিবার নান্দিক নাট্যদল, সিলেট তাদের ২৩তম প্রযোজনা ‘হাসন রাজা’ পরিবেশন করল। নগরীর রিকাবিবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হল নাটকটি। মিলনায়তন ভর্তি মানুষ মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করল হাসন রাজার বর্ণিল জীবনের কাহিনী, যা দেখে আমার হাসন রাজা সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেলো। তরুণ নাট্যকার মোস্তাক আহমেদের যাদুকরী লেখনি দর্শকদের আকর্ষণ করতে পেরেছে। নবীন নাট্যকার জানেন নাটকের নাটকীয়তা, কখন কোথায় কি উপস্থাপন করবেন তা। তিনি আরো জানেন সংলাপ নাটকের প্রাণ। সেই সংলাপকে তিনি করেছেন জীবন্ত ও বাস্তব। তার সংলাপের মোহজালে আমরা একঘন্টা আবদ্ধ ছিলাম। জমিদার হাসন রাজার জীবন যাপন স্বল্প পরিসরে ফুটিয়ে তুলেছেন সিলেটের নাট্য জগতে সুপরিচিত, আমাদের প্রিয় আমিরুল ইসলাম বাবু ভাই, যিনি এই নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। বাবু ভাইয়ের নির্দেশনা সম্পর্কে বলার মত
বিস্মৃতি

বিস্মৃতি

শবনম সুরিতা ডানা দুম করে সেদিন একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন, “আচ্ছা, আপনার সবচেয়ে বেশি অস্বস্তি কীসে?” এমন প্রশ্নেরও যে কোন উত্তর হয়, বা এমন যে আদৌ কোন প্রশ্ন হতে পারে সেটা তার আগে আমার জানা ছিল না। স্বভাবতই ঘাবড়ে গেলাম। উত্তর দিতে পারলাম না। কিন্ত প্রতিবারের মত এবারো প্রশ্নটা মাথায় গেঁথে গেল। বিয়েবাড়িতে প্রবল বিরিয়ানি সাঁটিয়ে তারপরের বদহজম আমার চূড়ান্ত অপছন্দ। ডানদিকের চোখে সুনিপুণ হাতে কাজল টানার পর অন্য চোখ আঁকতে গিয়ে দেখি কাজল শেষ-বিরক্তি! বহুদিন পর পরিজনের সাথে দেখা হলে উষ্ণতার উত্তরে ক্ষণস্থায়ী পলকা হাসি আমার প্রবল অস্বস্তির জন্মসূত্র। কিন্ত এই সবকিছুর সাথে হয়ত বা মানিয়ে নেওয়া যায় চেষ্টা করলে। কিন্ত যার সাথে মানিয়ে নেওয়া তো দূর, খানিক ঠকানোও যায়না, সেই যমের অরুচি অস্বস্তির নাম স্মৃতি। স্মরণশক্তি। যা আমার চরম দুর্বলতা। আমার নামে অপবাদ আছে, আমি কিচ্ছু ভুলিনা। কাজের কথা অবশ্য ভুলে যাই বেমা
শুভশ্রীর প্রতিদিন…

শুভশ্রীর প্রতিদিন…

শবনম সুরিতা ডানা শুভশ্রীকে দেখতে বেশ। সে যে রঙের কাপড়ই গায়ে মেলে ধরুক না কেন, তাতে রঙের না শুভশ্রীর কার ঔজ্জ্বল্য আসলে বাড়ে, তা বলা মুশকিল। সে ঘরে এসে ঢুকলে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথনেরা খানিক হলেও থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। শুভশ্রীর ফিরে তাকানোর ওপর অন্তত জনা দশেক মানুষের নিত্যরাতের ঘুম নির্ভর করে চলে। মোট কথা, মানুষ সুন্দরী বলতে যা জানে, বোঝে, সেই অপশনগুলির পাশের বাক্সে নিয়মমাফিক ‘টিক’ চিহ্ন মেরে যাওয়া সুন্দরীদের দলের স্থায়ী বাসিন্দা এই শুভশ্রী। কিন্ত বিষয়ে সে মোটেও বিরক্ত নয়। তার ভালোই লাগে বেশ। পুজোর বাজারের ভিড়ে যদি অন্যদের ফেলে দোকানদার তাকে এসে খাতির করে, এতে রাগ করার কি কিছু থাকতে পারে কখনো? নাহ, শুভশ্রী তখনও রাগ করতে জানত না। তবে একদিন আর পারা গেল না। শুভশ্রী আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে। স্বভাবতই তার স্বজনেরা যথেষ্ট পরিমাণে উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত। কিন্ত কানের পাশে নাছোড়বান্দা একটা
নাম-মাহাত্ম্য

নাম-মাহাত্ম্য

শবনম সুরিতা ডানা মানুষের নাম দু'ধরনের হয়। এক, যে নাম জিজ্ঞেস করার আগেই মানুষ আন্দাজ করে নেয়। আর দুই, যে ধরনের নাম দশবার জপলেও ঠোঁটের বশ মানতে চায়না। সৌভাগ্যবশত আমি এই দ্বিতীয় দলে পড়ি। এই নামের কাছে আমি আমৃত্যু ঋণী হয়ে থাকব জানি। কেন তা বলছি একটু পরেই। শোনা যায় আমার জন্মের আগে মা সৈয়দ মুজতবা আলীর 'শবনম' উপন্যাসটি পড়ছিল। এবং আমি জন্মানোর সাথে সাথেই নাম ঠিক করে ফেলেছিল একান্তে আমার নাম কী হবে। আমি অবশ্য এই চব্বিশ বছরের জীবনে এখনও পড়ে উঠতে পারিনি সেই উপন্যাসটি। অথচ আমার জন্মের সময় মায়ের বয়স ছিল ঠিক এটাই। আগামী জন্মদিনে পড়ে নেব ঠিক, কথা দিলাম। যাই হোক, পরিবারে খানিকটা গণতন্ত্র চর্চার বদভ্যেস থাকার কারণে বাবাও মেয়ের জন্য একখানা নাম ভেবে রেখেছিল। সুরিতা। কোন মানে নেই শব্দটির, কিন্ত একটা সুর-সুর ভাব আছে শব্দটার মধ্যে। অতএব সঙ্গীতপিপাসু বাঙালি জাতির ঘরে জন্মানো মেয়ের জন্য যে এই নাম একেবারে বেখাপ
ক্যান্সার আক্রান্ত অর্ককে বাঁচাতে একটি মানবিক আবেদন

ক্যান্সার আক্রান্ত অর্ককে বাঁচাতে একটি মানবিক আবেদন

রোমেনা লেইস "আমার জন্য মনটা যদি একটু তোমার কাঁদে, একটু খানি খুশি মনে হাত রাখ মোর হাতে... তুমিও পার বাঁচাতে আমায় করতে মোরে জয়, আমার যে.. বড্ড বাঁচতে ইচ্ছে হয়...।" এই কবিতাটি অর্ক লিখেছে হাসপাতালে শুয়ে। "বল কি তোমার ক্ষতি, জীবনের অথৈ নদী পাড় হয় তোমাকে ধরে দুর্বল মানুষ যদি?" জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ছাত্র সংখ্যা কত? সবাই পাঁচ বা দশ টাকা আজ সেইভ অর্ক’র তহবিলে দিয়ে দাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ছাত্র সংখ্যা কত? সবাই পাঁচ টাকা বা দশটাকা দিয়ে দাও সেইভ অর্ক’র তহবিলে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্ররা আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্ররা আজ আর কাল পাঁচটাকা দশটাকা দিয়ে দিলে আমাদের অর্ক র চিকিৎসার খরচ রেডি হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে অর্ককে বাঁচাতে পারি। অর্কর মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারি। আমি আমার সকল পরিচিত বন্ধু আত্মীয় আমার সকল ছাত্রদের অনুরোধ করবো অর্কর জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে
পাত্রীদেখা, অতঃপর পাত্রীর পিতৃদর্শন

পাত্রীদেখা, অতঃপর পাত্রীর পিতৃদর্শন

সুশান্ত পাল এই নিয়ে ৫ বার মেয়ে দেখা হলো। ফারুক চাকরি পাওয়ার আগে সবসময়ই ভাবতো, চাকরি পেলে বিয়ে করাটা সহজ। সে এখন বুঝেছে, বিয়ে করার জন্যে সবার আগে দরকার বিয়েটা যাকে করবে, তাকে। টাকাপয়সা না থাকলেও বিয়ে করা যায়, কিন্তু নিজের কিংবা অন্যের বিয়ে-করতে-রাজি প্রেমিকা না থাকলে বিয়ে করা যায় না। ফারুক বিয়ে নিয়ে মহাবিরক্ত। সে ঠিক করে রেখেছে, আজকে যে মেয়েটাকে দেখতে যাচ্ছে, মেয়ে পছন্দ হয়ে গেলে, মেয়ের বাবার পা জড়িয়ে ধরে বসে থাকবে। সাধারণত ও অনেক চেষ্টা করেও চোখে পানি আনতে পারে না। তবে আজকে যে করেই হোক, আনবে, আর বলবে, আঙ্কেল, এখন থেকে আপনি যা বলবেন, আমি তা-ই করবো। তবু, আমার পুত্র দায়গ্রস্ত পিতামাতাকে আপনি দয়া করে বাঁচান। এই পৃথিবীতে সবারই বিয়ে করার অধিকার থাকা উচিত। ফারুক মেয়ে দেখতে গেলো। সে যার পা ধরে হৃদয়বিদারক ভঙ্গিতে কান্নাকাটি করার প্ল্যান করেছিলো, উনি ওইসময়ে ছিলেন না, একটা জরুরি কাজে বাইরে গেছেন। শি
চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর: সম্পর্কের নতুন দিগন্তে দুই দেশ

চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর: সম্পর্কের নতুন দিগন্তে দুই দেশ

রেজা ঘটক দীর্ঘ ত্রিশ বছর পর (১৯৮৬ সালের পর) চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করলেন। 'ওয়ান-বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির আলোকে চীনের সহযোগিতা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২২ ঘণ্টার জন্য (১৪-১৫ অক্টোবর ২০১৬) বাংলাদেশ সফর করলেন। নিজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে ৬৫টি দেশকে চীনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে ২০১৩ সালে এই উদ্যোগ নেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অনেকগুলো বিনিয়োগ ও আর্থিক সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে সরকারী পর্যায়ে ২৭ টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং বেসরকারী পর্যায়েও ১৩ টি চুক্তি হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে এখনো ৮৮৫ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে যে বড় আকারের বাণিজ্য ঘাটতির বিদ্যমান, প্রেসিড
পূজারির খেরোখাতা: বাংলাদেশই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পূজার নিদর্শন

পূজারির খেরোখাতা: বাংলাদেশই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পূজার নিদর্শন

কবরী বিশ্বাস অপু বাংলাদেশের উৎসব মানে আমার কাছে আনন্দ, উৎসব মানে সম্প্রীতি, উৎসব মানে সমৃদ্ধি। শারদীয় দূর্গোৎসব তারই অনন্য উদাহরণ। ছোটবেলার পূজা এবং এখনকার পূজা উদযাপন আমার কাছে অনেকাংশেই ভিন্ন। প্রথমে ছোটবেলার পূজা উদযাপন সম্পর্কে স্মৃতিচারণ না করলে অপূর্ণতা রয়ে যাবে। আমরা তিনভাইবোন, এককথায় স্কুল পাগলা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আমরা রওয়ানা হতাম স্কুল অভিমুখে। আমাদের কাছে ছুটি বলতে পূজা আর ঈদের ছুটিই বড় ছিল। পূজা আসার মাসখানেক আগে থেকেই বুঝা যেত যে পূজা নিকটে চলে এসেছে, মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমা বানানোর ধুম। স্কুল থেকে ফিরে মায়ের কাছে রোজ জিজ্ঞাসা করতাম, "ও মা পূজা কবে? দশমী কবে?'' আমাদের দুই বোনের বয়সের ব্যবধান কম, দুইবছরের কম। আর দাদা সবার বড়, বড় ছেলে। আমাদের দুই বোনকে একরকমের জামা কিনে দেয়া হত। ভীষণ আনন্দ লাগত একরকমের জামা পরতে। খুব ভোরে আমরা দুইবোন শিউলি ফুল কুড়াতাম দেবীর জন্য, সাথে তুলসি