প্রতিক্রিয়া Archives - Page 3 of 5 - Women Words

প্রতিক্রিয়া

নাসিরনগর : দ্বিতীয় রামু?

নাসিরনগর : দ্বিতীয় রামু?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল বহুদিন থেকে আমি প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর লিখে আসছি। এবারে কি লিখব আমি বেশ আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম এবং সেটি নিয়ে আমার ভেতরে এক ধরনের আনন্দ ছিল। কীভাবে কীভাবে জানি আজকালকার প্রায় লেখাগুলোতেই এক ধরনের ক্ষোভ কিংবা সমস্যার কথা চলে এসেছে। এবারের লেখাটার মাঝে আমার আনন্দ এবং আশার কথা লেখার কথা ছিল। কিন্তু যখন লিখছি তখন মনটি ভারাক্রান্ত। আমি বুঝতে পারছি আজকে আমি আমার আনন্দের কথা, আশার কথা লিখতে পারবো না। আমাকে আমার কষ্টের কথা, ক্ষোভের কথা লিখতে হয়। কারণ হঠাৎ করে আমরা সবাই আবিষ্কার করেছি ৩০ অক্টোবর রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে একেবারে ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে অনেকগুলো মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। শুধু তাই নয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ীতে হামলা হয়েছে, সেগুলো তছনছ করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে এবং সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার একেবারে সম্পূর্ণ নিরপরাধ শ’খানেক মানুষের গায়ে হাত
অবিশ্বাসের ভাইরাস

অবিশ্বাসের ভাইরাস

শবনম সুরিতা ডানা জন্মের পর চোখ ফুটতে সময় লাগে বেশ কয়েক ঘন্টা। কোন কোন ক্ষেত্রে কয়েক দিনও লেগে যেতে পারে। চোখ মেলে চারদিক দেখতে থাকি আমরা, আর আস্তে আস্তে বোঝার চেষ্টা করি দুনিয়াটা আসলে কী জিনিস। চাইলেই আশেপাশের সবকিছু নিজেদের মত করে এক একটা নাম দিতে পারতাম হয়ত, কিন্ত তেমন নিয়ম অন্তত এই দুনিয়ার নেই। সুতরাং শুরু হল মুখস্থ করার পালা। এটা গাছ, ওটা জানালা, ওটা পাহাড়, এটা মা- এভাবে একে একে বাড়তে থাকে শব্দভাণ্ডার। প্রতিটা শব্দ উচ্চারণ করছি আমিই, কিন্ত একটাও নাম আমার দেওয়া নয়। নতুন শব্দ আবিষ্কার আমরা করিনা। স্বতস্ফুর্ত কোন শব্দের উচ্চারণে ভরে যায়না আমাদের চারপাশ কখনোই। এই একই ভাবে আমাদের শিখিয়ে দেওয়া হয় কাকে বিশ্বাস করব সবচেয়ে বেশি। আর কাকে বিপদ জেনে এড়িয়ে যাব আজীবন। বাড়ির চার দেওয়ালের ভিতর থাকলে, রাস্তায় গা ঢেকে হাঁটলে, গোমাংস ভক্ষণ না করলে নিরাপদে থাকার অধিকারে বিশ্বাস করতে শিখেছি। যে বলেছে আমি
আমরা কেন এত অমানবিক হচ্ছি?

আমরা কেন এত অমানবিক হচ্ছি?

রাহিমা বেগম অদ্ভুত আবেগ এদেশের মানুষের! ক্রিকেট খেলায় একটি ক্যাচ হাত ফসকে গেলে আফসোসের অন্ত থাকে না। কখনও সখনও সেই পুরো সপ্তাহ জুড়ে সেই আফসোস বয়ে বেড়ায়। অথচ প্রায় প্রতি সপ্তাহে একটা মেয়ের ধর্ষণ আর খুনের ঘটনা আবেগগুলোকে স্পর্শ করতে পারে  না। মুখ ফোটে দুঃখ প্রকাশ করার সৌজন্যতাটুকুও হারিয়ে গেছে যেন! মানবিক বিষয়গুলোতে আমরা কেন এত অমানবিক হচ্ছি দিন দিন? পূজাঁর মত শিশু কন্যাকে একজন মুসলমান নামধারী কুলাঙ্গারের হাতে যে নির্মমতার শিকার হতে হয়েছে, তার জন্য হিন্দুরা যদি মুসলিমদের মসজিদে বাড়িতে হামলা না করে দোষীর বিচার চায়, তবে মুসলমানরা কেন নয়? সকল ধর্মের মানুষ একই জায়গা থেকে বিচার চাইতে পারে। যদি তাই হয় তবে কেন পবিত্র কাবা শরীফ অবমাননাকারী একজনের অপরাধে এতগুলো মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানতে হবে? আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। তাই প্রকৃত মুসলমান হিসেবে মুসলিমদের দায়িত্ব হলো ধর্মীয়
এই একটা বিচার তো অন্তত করুন

এই একটা বিচার তো অন্তত করুন

রাহিমা বেগম কথা দিচ্ছি নার্গিসকে নির্মমভাবে হত্যার প্রচেষ্টাকারী বদরুলের শাস্তির বিষয় নিয়ে টু শব্দ করবনা। সত্যি করে বলছি, তনুকে কারা হত্যা করেছে-এই বিষয়ে চায়ের টেবিলে, পাবলিক যানবাহনে যেকোন স্থানে আলাপ উঠলে, আমি চুপচাপ সেই স্থান ছেড়ে দিব। বললাম তো আগে পিছনে যত ধর্ষণ, খুনের ঘটনা ঘটেছে কিংবা ঘটবে বেঁচে থাকা অবদি- কোনদিন কোন প্রতিবাদ করবনা, কাউকে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করবনা। আপনাদের দেয়া সব কথা আমি রাখব। তবে আমার একটা শর্ত, সেই শর্ত নিঃশর্তে মেনে নিতে হবে। শুধু পাঁচ বছরের ছোট্ট এ মামণিটার যৌনাঙ্গ কেটে ধর্ষণ করেছে যে পশুটা, সেই অমানুষ সাইফুলকে মাইকে ঘোষণা করে একটা বড় খোলা মাঠে ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে সেদিন জড়ো হবে লক্ষকোটি মানুষ! থাকবে কিছু কিছু অভুক্ত কুকুর, শিয়াল, নেকড়ে। প্রাণীগুলো এই শুয়োরের বাচ্চাকে ছিড়ে ছিড়ে খাবে, একটা হাড্ডি চামড়া মাটিতে পড়ে থাকবেনা। প্রতিটি মিডিয়ায় লাইভ দেখানো হবে এই দৃ
এরা কি মানুষ!

এরা কি মানুষ!

তসলিমা নাসরিন ১. বাংলাদেশে পূজা নামের এক মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে। পূজার বয়স পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ করেছে সাইফুল ইসলাম নামের বিয়াল্লিশ বছর বয়সী এক চার বাচ্চার বাবা। এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। লোকটিকে শিশুটি ‘বড় বাবা’ বলে ডাকতো। প্রতিবেশী ছিল লোকটি। হয়তো শিশুটি সাইফুল ইসলামের কন্যাদের খেলার সাথী ছিল। যতদূর জানি শিশু-ধর্ষণের সত্তরভাগই ঘটায় পরিবারের পুরুষ, নিকটাত্মীয়, অথবা পাড়াতুতো কাকা-জ্যাঠা-ঠাকুরদা, অথবা চেনা কোনো লোক। সাইফুল ইসলাম পাড়াতুতো জ্যাঠা ছিল পূজার। এই লোকটি, আমার আশঙ্কা, তার কন্যাদেরও ধর্ষণ করেছে, ধর্ষণ করার সুযোগ যদি না পেয়েও থাকে, তাহলে ধর্ষণ করার সুযোগ খুঁজেছে, সুযোগ না পেয়ে মনে মনে প্রতিদিনই ধর্ষণ করেছে। মেয়েদের ‘নিরাপত্তা’ বলতে কিছু আর নেই পৃথিবীতে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন শিশুদের প্রতি যদি কারো যৌন আকর্ষণ থাকে, তাহলে তাকে ইংরেজিতে ‘পিডোফাই
বাবা নেই, কিন্তু কথা রে‌খে‌ছে রিম‌ঝিম

বাবা নেই, কিন্তু কথা রে‌খে‌ছে রিম‌ঝিম

গার্গী ভট্টাচার্য্য আমি বোধহয় তখন অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী,বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকি। হঠাৎ এক সকালে আমার ডাক পড়ল গেষ্ট রূমে। গিয়ে দেখি বাবা বসে আছেন। আমাকে বললেন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো মামা বাড়ী যাবে। আমি তো অবাক , খুশী হয়ে জানতে চাইলাম কেন হটাৎ? বাবা বললেন, আগে আসো গাড়ীতে তোমার মা ,ভাই বসে আছে, গিয়েই দেখবে। আমি মহা খুশী নিশ্চয়ই কোন সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। ছুটে গিয়ে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। গাড়ীতে বসে দেখি সবারই মুখ ভার, কিন্তু স্বাভাবিক কথা বার্তা চলছে...মনে মনে ভাবছি কি জানি মজা হবে, তাই কেউ আগাম কিছু বলতে চাইছে না। যাক, আমিও আগ্রহ নিয়ে পথ ফুরানোর দিকে চেয়ে রইলাম। একসময় তা ফুরালোও...কিন্তু হায় মামা বাড়ীর কাছে এসেই শুনি কান্নাকাটির আওয়াজ, মা ঘরে ঢুকার আগেই ডুকরে কেঁদে উঠলেন। ভিতরে গিয়ে দেখি দিদা বিছানায় পড়ে কেঁদে যাচ্ছেন, মাটিতে বড়মামার প্রানহীন দেহখানি পরম যত্নে ধরে কেঁদে যাচ্ছেন বড়মামী। রি
খাদিজার জন্য প্রার্থনা

খাদিজার জন্য প্রার্থনা

মুহম্মদ জাফর ইকবাল এ মাসের  ৩ তারিখ সোমবার বিকেলে আমি খবর পেয়েছি এমসি কলেজে একটি মেয়েকে নির্মমভাবে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। সন্ধ্যাবেলা জানতে পেরেছি খবরটি ভুল, মেয়েটি মারা যায়নি তবে বেঁচে থাকার কোনও সম্ভাবনা নেই। সাথে সাথে আরো একটি খবর জানতে পেরেছি, খাদিজাকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে যে ছেলেটি সে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের নেতা। ঠিক কী কারণ জানা নেই, আমার ভেতরে তীব্র একটি অপরাধ বোধের জন্ম হলো। মনে হলো আমরা নিশ্চয়ই আমাদের ছাত্রদের ঠিক করে মানুষ করতে পারিনি, তা না হলে কিভাবে আমাদের একজন ছাত্র এরকম নৃশংস একটি ঘটনা ঘটাতে পারে? (তবে অতীতে সে একবার গণপিটুনি খাওয়ার পর আমি তার প্রতি সমবেদনাসূচক বক্তব্য রেখেছিলাম সেই প্রচারণাটি মোটেও সত্যি নয়!) খাদিজা যে বাসায় থাকে, তার পাশেই আমার একজন সহকর্মী থাকেন, তিনি এসে আমাকে ঘটনাটির কথা বলতে বলতে অশ্রুসজল হয়ে উঠতে লাগলেন। পরদিন মাঝে মাঝেই খবর পেয়
অন্য কারো জন্য শরীর তৈরির প্রয়োজন নেই

অন্য কারো জন্য শরীর তৈরির প্রয়োজন নেই

কানিজ ফাতেমা ছন্দা ইউভার্সিটিতে যখন প্রথম ভর্তি হলাম, এক মেয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে চুপিচুপি বললো, 'তুমি সবসময় ব্রেসিয়ার পরো না?' আমি না-সূচক মাথা নাড়লাম..মেয়েটা খুব অবাক হয়ে আমাকে উপদেশ দিলো, 'এমন করো না, শুধু বাইরে না, বাড়িতেও পরো..শেষে বুক ঝুলে যাবে, ছেলেরা টাইট ব্রেস্ট ছাড়া মেয়েদের পছন্দ করে না!' সত্যি বলতে বয়ঃসন্ধির পর জীবনে প্রথম কেউ (তাও একজন মেয়ে) আমাকে ২৪ ঘণ্টা ব্রেসিয়ার পরে থাকার উপদেশ দেয়ায় আমি ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম..ভাবছিলাম, তবে কি আমাকে কেউ পছন্দ করবে না? কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, কখনোই ২৪ ঘণ্টা বক্ষবন্ধনী দিয়ে নিজেকে দম বন্ধ করা অনুভূতিতে শাস্তি দিতে পারি নি..তখন এতোখানি খোলাখুলি কিছু না জানলেও এটুকু বুঝেছিলাম, কোন ছেলের আমার শরীরকে ভালোবাসার চেয়ে আমার নিজের শরীরের প্রতি নিজের ভালোবাসা বেশি গুরুত্বপূর্ণ! আ্যঞ্জেলিনা জোলি- সব ছেলের হার্টথ্রব! তার নিজের মা যখন ব্রেস্ট ক্যান্সারে মার
আহা! পৃথিবীতে এতো বৈষম্য কেন?

আহা! পৃথিবীতে এতো বৈষম্য কেন?

ফারিনা মাহমুদ ট্রেনে বসে লিখছি। আমার পাশে বসে আছে মেদহীন দীর্ঘাঙ্গী ও আকর্ষনীয়া এক রমনী। কোলে ছোট্ট পুতুলের মতো বাচ্চা। ট্রেনে যখন উঠি আমার দিকে তাকিয়ে একটা স্মিত হাসি দিয়েছিলেন মহিলা। স্বাভাবিক কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করলাম- তোমার কন্যার বয়স কতো? - মাত্র ১০ সপ্তাহ। ভালোভাবে তাকালাম মহিলার দিকে- চমৎকার স্কীন টাইট জিন্স আর টপ পরা। এই মহিলার পেটের ভিতর ১০ সপ্তাহ আগেও এই বাচ্চা কোথায় এবং কিভাবে ছিলো খোদায় জানে! হেসে বললাম- তোমার কন্যা তাহলে ব্র্যান্ড নিউ! - একদম! নিউ হলে কি হবে, ও এখনই টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে, জানো? মহিলার কণ্ঠে উচ্ছ্বাস। - তো আজ কি মা মেয়ে ঘুরতে যাচ্ছ নাকি? - না, আসলে এর পরের স্টেশনে ( অপেরাহ হাউসের পাশে) ওর বাবা আসবে, ওকে ওর বাবার কাছে দিয়ে আমি আমার বান্ধবীদের সাথে মিট করতে যাবো। ডিনার শেষে আমাদের আড্ডা হবে। ওর বাবা গভীর রাতে গিয়ে আমাকে নিয়ে আসবে। আগামী কয়েক ঘন্টা একান্তই আমার ন
স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বন্ধু পুনর্মিলনী

স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বন্ধু পুনর্মিলনী

‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। এরকম আঠারোর উজ্জ্বল যৌবনে যাদের সাথে দেখা হয়েছিলো স্বপ্নের ক্যাম্পাসে, আজ তিরিশ বছর পরে তাদের সাথে দেখা হলো।কথা হলো, আড্ডা হলো। মনে হলো আমরা যেন ফিরে গেলাম সেই অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে। এক জীবনে মানুষ কতটুকু পায়? কোন কোন জীবন রাতে ফোটা শিউলির মত ভোরেই ঝরে যায়। কারো কারো জীবন দীর্ঘ হয়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমতে থাকে কত কত স্মৃতি। ১৯৮২ তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছিলাম পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে। । পাবলিক এডের বন্ধুদের পাশাপাশি বন্ধুত্ব ছিলো আই আরের কামরুল,তানভীর টিটোর সাথে। কামরুল তানভীর ছিলো মাণিকজোড়। সবসময় একসাথে এই দুজনকে দেখা যেতো ক্যাম্পাসে। টিটো ছিলো মার্ক্সবাদীয় তত্ত্বে বিশ্বাসী। ভালো ছাত্র।  ইহুদিদের হলিডের জন্য এই উইক এন্ড চারদিনের। স্কুল খুলবে বুধবারে। আজ শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ছেলের ক্লাস আছে, পিকআপ করতে আসেনি।কাজের শেষে সাবওয়েতে ঢুকেই