করোনার সঙ্গে যুদ্ধদিনের বর্ণনা দিলেন সুস্থ হওয়া তরুণী - Women Words

করোনার সঙ্গে যুদ্ধদিনের বর্ণনা দিলেন সুস্থ হওয়া তরুণী

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তদের অনেকে সুস্থ হচ্ছেন। তাদেরই একজন জেসি ক্লার্ক। কিডনির সমস্যা নিয়ে জেসিকে লড়তে হয়েছে করোনার সঙ্গে। এখন কিছুটা সুস্থ হলেও তার হাঁটতে কষ্ট হয়। হালকা কাশিও রয়েছে। করোনা জয়ী তরুণী জেসি বিবিসিকে বলেছেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। উইমেন ওয়ার্ডসের পাঠকদের জন্য তার হার না মানা গল্প তুলে ধরা হলো-

যুক্তরাজ্যের শেফিল্ডের বাসিন্দা জেসি ক্লার্ক জানতেন যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশি। কারণ, মারাত্মক কিডনি রোগে ভুগছেন তিনি। পাঁচ বছর আগে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় তার। তাই ২৬ বছর বয়সী জেসি যেদিন থেকে কাশতে শুরু করলেন, ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন তিনি। তার শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল।

কয়েক দিনের মধ্যে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়, হাঁটতে পর্যন্ত পারছিলেন না। জেসি বলেন, তার পাঁজরে, পিঠে ও পেটেও প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। মনে হতো কেউ যেন তাকে মেরেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লকডাউন জারি করেন। দুদিন পর জেসির বাগদত্তা টম গাড়িতে করে তাকে এঅ্যান্ডইতে পৌঁছে দেন। তারা খুব দ্রুত আলাদা হয়ে যান।

জেসি বলেন, ‘আমি একা হতে ভয় পাচ্ছিলাম। আমার এত খারাপ লাগছিল, মনে হচ্ছিল কেউ আমাকে সাহায্য করুক।’ হাসপাতাল থেকে জেসিকে একটি সবুজ মাস্ক দেওয়া হয়। এমন একটি কক্ষে তাকে রাখা হয়, যে কক্ষে আগে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী রাখা হয়েছিল।

জেসি বলেন, ‘আমার করোনা টেস্ট করা হয়নি। চিকিৎসকেরা বলেন, তারা সবাইকে পরীক্ষা করতে পারবেন না। তবে এটা ধরে নেওয়াই উত্তম যে আমি আক্রান্ত।’ চিকিৎসক বলেন, ‘ফুসফুসের প্রদাহজনিত কারণে আমার এমন ব্যথা হচ্ছে, তাই তারা আমাকে আলাদা করে ফেলেছেন এবং ব্যথানাশক ওষুধ দিচ্ছেন।’

এর আগে কখনো শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগেননি জেসি। খুব ভয় পাচ্ছিলেন। জেসিকে হাসপাতালে দিয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে গাড়ি পার্ক করে অপেক্ষা করছিলেন টম। টমের থেকে এই ভাইরাস জেসির শরীরে গেছে, এমনটাই আশঙ্কা করছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালে প্রায় ৫ দিন ছিলেন জেসি। এখনো হাঁটতে কষ্ট হয় তার। দিনে প্রায় ১৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটাচ্ছেন। এখনো কাশি রয়েছে এই তরুণীর।

জেসি বলেন, ‘কিছু তরুণ এখনো ভাবছেন তাদের কিছু হবে না। যদিও বেশির ভাগ মানুষ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। অনেক তথ্যে বলা হচ্ছে, বয়স কম হলে এ ভাইরাস খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না। তবে আমি বলব এটা অবশ্যই প্রভাব ফেলে।’