'ধর্ষক শামীমের কাছে কিভাবে মেয়েকে বিয়ে দিই' - Women Words

‘ধর্ষক শামীমের কাছে কিভাবে মেয়েকে বিয়ে দিই’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক বাক্প্রতিবন্ধী কিশোরী ছেলেসন্তানের জন্ম দিয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সে শিশুটির জন্ম দেয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা-সন্তান দুজনই ভালো আছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন জানান, অক্টোবর মাসে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার সময় সে ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গত শুক্রবার রাতে প্রসবজনিত ব্যথা নিয়ে সে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মা ও ছেলের সব চিকিৎসা ব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করবে।

মেয়েটির মা-বাবা জানান, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত এখন জেলহাজতে আছেন। আসামিপক্ষ মামলা তুলে নিতে তাঁদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়, গত ১ মে থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিজয়নগরের হরষপুর ইউনিয়নের বাগদিয়া গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে শামীম মিয়া মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে জানানোর পর মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। এ ঘটনায় শামীম মিয়া ও নূর আলম নামে আরেকজনকে আসামি করে ২ অক্টোবর বিজয়নগর থানায় মামলা করেন মেয়েটির বাবা। নূর মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণে সহায়তা করেন।

মামলার আগে গ্রামের লোকজন বিষয়টি নিয়ে সালিস বৈঠক করে। সেখানে শামীমকে শনাক্ত করে মেয়েটি। কিন্তু একাধিক বৈঠকেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। শামীমের বাবা বলে আসছেন, তাঁর ছেলে ঘটনায় জড়িত নন। মেয়েটির মা বলেন, ‘আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। শামীম তো দোষ করেছে। এখন তার কাছেই বা কিভাবে মেয়েকে বিয়ে দিই। এ ছাড়া শামীমের পরিবার বিষয়টি মানতে পারছে না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আলমগীর হোসেন জানান, মামলা হওয়ার পরপরই পুলিশ শামীমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে শামীম অভিযোগ স্বীকার করেছেন। আদালতের নির্দেশনা পেলে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শিশুটির পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করা হবে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কোলে ফুটফুটে শিশুসন্তানকে নিয়ে মলিন মুখে বসে আছে মেয়েটি। পরিবার জানায়, মেয়েটির বয়স ১৬ বছরের কম।