বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যা - Women Words

বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যা

রাজধানীতে বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকারী সজীব প্রায় দুই বছর ধরেই নিহতের মেয়ে স্বপ্নাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল।

জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে সজীবের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন স্বপ্নার বাবা তুলা মিয়া (৪৬)। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে একমাস কারাগারেও ছিল সজীব আহমেদ রকি। জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর আবারও স্বপ্নাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সজীব। এর মধ্যে স্বপ্নাকে অন্যত্র বিয়ের কথা পাকা হয়। বিষয়টি মানতে পারেনি সে। ফলে বিয়ের দিন অতর্কিত হামলা চালিয়ে স্বপ্নার বাবা-মাকে ছুরিকাঘাত করে সজীব।

আজ ১ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে মগবাজারের দিলু রোডে প্রিয়াংকা হাউজিংয়ের পাশে মেয়ে স্বপ্নার বিয়ের আয়োজন করেন তুলা মিয়া। বিয়ের আয়োজন চলাকালীন ওই বাড়িতে ঢুকে তুলা মিয়া ও তার স্ত্রী ফিরোজা বেগমকে ছুরিকাঘাত করে সজীব। এ সময় উপস্থিত জনতা রকিকে (২৩) গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ছুরিকাঘাতে তুলা মিয়া নিহত হয়েছেন এবং ফিরোজা বেগম আহত অবস্থায় ঢামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহত তুলা মিয়া টাঙ্গাইলের মধুপুরের বাসিন্দা। তবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মগবাজার দিলু রোডের প্রিয়াঙ্কা হাউসের কাছেই ভাড়া থাকতেন। তিনি একটি মেসের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছিলেন।

ঘাতক রকির বাবার নাম আব্দুল বারেক। তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার পাঁচগাছিয়া গ্রামে। সে দিলু রোডের বাটার গলির একটি মেসে থাকতো এবং একটি গ্যারেজে কাজ করতো।

ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আটক সজীব তুলা মিয়ার মেয়ে স্বপ্নাকে গত ২ বছর ধরেই বিরক্ত করে আসছিলো। এ বিষয়ে গত মার্চে রকির বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় একটি মামলা (নং-০৮) দায়ের করেন। এ মামলায় রকি গ্রেপ্তার হয়ে একমাস জেলও খাটে।

এর জের ধরে বৃহস্পতিবার স্বপ্নার বিয়ে চলকালীন সময়ে বিয়ের আসরে উপস্থিত হয়ে তার বাবা ও মাকে ছুরিকাঘাত করে রকি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর পৌনে ১টার দিকে ওই কমিউনিটি সেন্টারের দোতলায় কনেকে সাজানো হচ্ছিল। সে সময় রকি ভবনটিতে প্রবেশ করে। ভেতরে ঢুকেই সে তুলা মিয়াকে দেখতে পায়। তুলা মিয়া তখন সজীবকে এখানে আসার কারণ জানতে চান। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ের তুলা মিয়াকে সজীব তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে আঘাত করে। তার চিৎকারে ফিরোজা এগিয়ে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে।

ঘটনার সময় কমিউনিটি সেন্টারের দোতলায় কনে স্বপ্নাকে সাজানো হচ্ছিলো। বাইরে চিৎকার শুনে স্বপ্না ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। পরে দরজা খুলে আহত বাবা-মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখেন স্বপ্না।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো রকি। ঘটনাস্থল থেকেই সজীবকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন