‘মুখের কুলুপ ভাঙতে হবে’ - Women Words

‘মুখের কুলুপ ভাঙতে হবে’

অদিতি দাস
‘ভাবি সমান, হই চৌকস, বদলাই নতুনে’ স্লোগানে পালিত হলো এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতিবছর নিয়ম করেই দিবসটি আসে। আমরা ঘটা করে পালন করি। আর ভাবি, ‘এবার হবে’। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মার্কিন মুল্লুকে রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। এ ঘটনাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পটভূমি রচনা করে। এরপর ১৬২ বছর ধরেই নারীরা দৃশ্যত লড়ে চলেছেন নিজের সমঅধিকার আর মানুষ হিসেবে প্রাপ্ত মর্যাদাটুকু প্রতিষ্ঠা করতে। দীর্ঘ দেড়শ বছরের অধিক সময়ের সেই লড়াই আর প্রতি বছর দিবস পালনে কতটুকু কী হয় বা হয়েছে সে হিসাব আপাতত থাক। বরং সম্প্রতি সময়ের কিছু ঘটনার আলোকপাত করি। যেগুলো বিশেষ করে নারীদের পরোক্ষভাবে দারুণ প্রভাবিত করতে পারছে বলে আমার মনে হয়। এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, বিক্ষিপ্ত এবং আপাত দৃষ্টিতে অতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও গভীরভাবে কান পাতলে সেসব ঘটনাবলী সত্যিকার অর্থেই যেন কানে কানে বলে যায়, ‘ভাবি সমান, হই চৌকস, বদলাই নতুনে।’

এক.

প্রতিবেশি দেশ ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে ১১৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম কাথিখেরা। হাপুর জেলার এ গ্রামের মেয়ে ২২ বছরের স্নেহা। কাজ করতেন গ্রামের ছোট্ট একটি কারখানায়। যেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি হয়। ২০১৭ সালে তিনি কাজ শুরু করেন। এখন সেখানে ১৮ থেকে ৩১ বছর বয়সী সাত জন নারী কাজ করছেন। মাসে আড়াই হাজার রূপি বেতন। কারখানাটিতে প্রতিদিন ৬০০ পিছ প্যাড উৎপাদন হয়। ‘ফ্লাই’ নামে তা বাজারজাত হয়।

উপমহাদেশের অন্যান্য অনেক অঞ্চলের মতো কাথিখেরা গ্রামেও মেয়েদের ঋতুস্রাব একটি নিষিদ্ধ বিষয় ছিল। গ্রামের বেশিরভাগ নারীরা মাসিকের সময় সেখানে পুরনো শাড়ি বা বিছানার চাদর কেটে ব্যবহার করতেন। ‘’অ্যাকশন ইন্ডিয়া’ নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে কাজ করতে শুরু করে এবং কাথিখেরা গ্রামে স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদনের জন্যে একটি কারখানা স্থাপন করে। তখন থেকে আসলে সেখানে অবস্থার পরিবর্তন শুরু হয়। এখন গ্রামের অন্তত ৭০ শতাংস নারী স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করছেন।

স্নেহাদের সেই গল্প নিয়ে নির্মিত হয় তথ্যচিত্র ‘পিরিয়ড অ্যান্ড অব সেনটেন্স’। তথ্যচিত্রটি পেয়েছে এবারের অস্কার পুরস্কার। ইরানি-মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা রায়কা জেতাবচি এটি নির্মাণ করেছেন। আর প্রযোজনা করেছেন উত্তর হলিউডের কিছু শিক্ষার্থী। তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করতে স্নেহার গ্রামে গিয়েছিলেন নির্মাতা।

অস্কার ঘোষণার আগে স্নেহা বলেছিলেন, ‘আমিই প্রথম কাথিখেরার কেউ-যে কিনা দেশের বাইরে যাচ্ছে।’ তিনি অস্কারের কথা শুনেছিলেন এবং জানতেন যে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমার পুরষ্কার। তবে কখনো সে অনুষ্ঠানটি দেখা হয়নি। আর কখনোই ভাবেননি যে অস্কারের লাল কার্পেটে তিনি থাকবেন।

স্নেহার কথা থেকেই সহজে বুঝে নেওয়া যায় অল্প হলেও পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। স্নেহা বলছেন, ‘আমি এখন গ্রামে স্বীকৃত এবং সম্মানিত। সবাই বলছে যে তারা আমাকে নিয়ে গর্বিত।’

দুই.
মাসিকের সময় চলতি পথে নারীর নানা রকম অস্বস্তিতে পড়তে হয়। সেরকম এক অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে এসেছেন শোভন মুখোপাধ্যায় নামে এক তরুণ। কলকাতার এ তরুণ বিভিন্ন পাবলিক টয়লেটে স্যানিটারি প্যাড রাখার ব্যবস্থা করেছেন। অন্তত কিছু পাবলিক টয়লেটে যাতে সুস্থ ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ পান নারীরা সেজন্য তিনি পরিশ্রম করে চলেছেন। যদিও শুরুতে তিনি ভাবছিলেন, শৌচাগারে গিয়ে নিজ উদ্যোগে স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখার বিষয়টি তার আত্মীয়-বন্ধুরা কীভাবে দেখবেন। তবে পরিজনরা উৎসাহ দিচ্ছেন। তাঁরাও অনেকে এগিয়ে এসেছেন শোভনের কাজে সহযোগিতা করতে। কলকাতার বিভিন্ন বস্তি এবং কাছাকাছি কিছু গ্রামে এবার থেকে বড় দল তৈরি করে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেবেন তারা। দলের প্রত্যেক সদস্য এর জন্য দিনে দু’টাকা করে ব্যয় করবেন বলে ধার্য হয়েছে। মাসে ৬০০ টাকা উঠে যাবে এক-একটি দল থেকে। সেই টাকায় পরিষ্কার স্যানিটারি প্যাড পেয়ে যাবেন অনেক নারী।

ঋতুমতীদের জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশের উপর বরাবরই জোর দেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসকেরা। রাস্তাঘাটে পরিষ্কার শৌচালয় না পেয়ে আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক সময় দিনভর শৌচালয় ব্যবহার করেন না। সেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বিদেশের যে কোনও বড় শহরের ব্যস্ত জায়গায় পরিচ্ছন্ন শৌচালয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সিংগাপুরে আমি যে ক’বছর ছিলাম, যেখানেই গেছি বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির প্রতিটি বাস-রেলস্টেশনে নারীদের জন্য শৌচালয় তো বটেই, থাকে টয়লেট সিট স্যানিটাইজারও। এমনকি, ছোট্ট দেশ কম্বোডিয়ার বিভিন্ন শহরে পাবলিক টয়লেটের পরিচ্ছন্নতা চোখে পড়ার মতো।
সম্প্রতি আরও একটি খবর দৃষ্টি কেড়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের ঋতুস্রাবের বিষয়টি শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু মেয়েরাই নয় সব শিক্ষার্থীই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে পড়ার ও জানার সুযোগ পাবে।
মেয়েদের মাসিকের বিষয়টিকে বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পেইন বা প্রচার কাজ চালিয়ে আসছিলেন এলিস স্মিথ। এই সিদ্ধান্তটিকে ভীষণ ইতিবাচক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এলিস। মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্মিথের মাসিক সংক্রান্ত জটিলতা প্রথম ধরা পড়ে। আরও অনেক নারীর মতই তারও পিরিয়ড নিয়ে তৈরি হয় ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। আর খুব সহসা সেটি সেরে যাবারও কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাই নিজের অসুখ ধরা পড়ার পর থেকেই এই বিষয়ে তিনি সোচ্চার হয়ে উঠেন এবং বিষয়টিকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলেন। তার মতে, পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির ফলে খুব শিশু বয়স থেকেই মেয়েরা জেনে যাবে কোন ধরণের মাসিক স্বাভাবিক আর কোনটি স্বাভাবিক নয়।
পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা হওয়া, ক্লান্ত অনুভব করা, তলপেটে ও মূত্রাশয়ে জটিলতা অনুভব করার ঘটনা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটি ক্রনিক ও অত্যন্ত পীড়াদায়ক হয়ে উঠে। ডাক্তারি ভাষায় এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘এন্ডোমেট্রিয়োসিস’। মেয়েদের ওভারি ও তার আশপাশে অতিরিক্ত টিস্যু জন্মানোর ফলে এই সমস্যার জন্ম হয়।

তিন.
বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের একটি নতুন দল ঢাকা সিটি এফসি। যেটি নৌবাহিনীর সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে। দলের কোচ হয়েছেন সাবেক ফুটবলার মিরোনা খাতুন। বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো পুরুষ ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন কোনো নারী। মিরোনা খাতুনের দাবি নারী ফুটবলের উন্নতির কারণেই এই ভাবে তিনি যোগ দিতে পেরেছেন কোচিংয়ে। তার আশা চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করানো। মিরোনা ২০০৯ সালে প্রথম ফুটবল খেলেন, এরপর অ্যাথলেটিক্সেও সফলতা পান তিনি। জাতীয় প্রতিযোগিতায় ১৩টি স্বর্ণপদক জিতেছেন বাগেরহাটের এই নারী।

৫০’এর দশকে বেগম পত্রিকার আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন সাইদা খানম। বাংলাদেশের প্রথম পেশাদার নারী ফটোগ্রাফার তিনি। সম্প্রতি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন সাইদা খানম। সত্যজিৎ রায়ের মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ৮২ বছর বয়সে এসেও ক্যামেরা আর কলম চালাচ্ছেন তিনি। বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন।

চার.
শুরু করেছিলাম ইতিবাচক বিষয় দিয়ে। এবার খানিকটা নেতিবাচক প্রসঙ্গে যাওয়া যাক। বাংলাদেশে নিজের ঘর থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, গণপরিবহন সব জায়গায় নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। ব্র্যাকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ৯৪ শতাংশ নারী গণপরিবহনে যৌন হয়রানির শিকার হন এবং তাদের ৮০ দশমিক ৭ শতাংশ কোনো ধরণের প্রতিবাদ করেন না অথাৎ নিশ্চুপ থাকেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাসেই ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৯৮টি। এর মধ্যে ধর্ষণ ৫২টি, গণধর্ষণ ২২টি। আর ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা পাঁচটি। গত বছর নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তিন হাজার ৯১৮টি। এর মধ্যে ৬৯৭ জন ধর্ষণ, ১৮২ জন গণধর্ষণের শিকার আর ৬৩টি জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। প্রতি বছরই এরকম পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। তার চেয়ে বড় সত্য হলো ধর্ষনের এসব ঘটনায় সাক্ষী হাজির করা খুব কঠিন। তাই নির্যাতিত নারীকেই প্রমাণ করতে হয় যে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

পাঁচ.
কথার পিঠে কথার মতো এবার আরেকটি ঘটনা বলি। প্রায় ১৫ হাজার নারী এবং পুরুষের শোভাযাত্রা ‘গরিমা অভিযান’ চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দিল্লীতে এসে পৌঁছেছে। দুই মাস আগে যার শুরু হয়েছিল মুম্বাই থেকে। যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন এমন নারীদের নিয়ে ‘গরিমা অভিযান’ শুরু হয়। যা দিল্লীতে এসে ইতি টানে। ২৪টি রাজ্যের ২০০টি জেলা ছুঁয়ে ১০ হাজার কিলোমিটার হাঁটা এই মিছিলের উদ্দেশ্য-যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ বুজে থাকার প্রথা ভাঙা। এই মিছিলের মূলে ছিলেন ৫৫ বছরের ভাঁওরি দেবী। মিছিলটি দিল্লীর রামলীলা ময়দানে পৌঁছালে গলা ফাটিয়ে তিনি স্লোগান তোলেন, ‘হাম হামারা হক মাঙ্গতে’। রামলীলা ময়দানে উপস্থিত সবাই একযোগে বলেন, ‘নেহি কিসিকা ভিখ মাঙ্গতে।’

ভাঁওরি দেবীর সম্পর্কে কিছু বলি। # মিটু আন্দোলনের তিন দশক আগে রাজস্থানের ভাতেরি গ্রাম থেকে যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে মুখ খোলার আন্দোলন শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালে নিজের গ্রামে বাল্যবিবাহ আটকাতে চাওয়ায় স্বামীর সামনেই গণধর্ষণ করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু দমে না গিয়ে পাল্টা লড়াই করেছিলেন। সেই লড়াইয়েরই ফসল, কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা রুখার ‘বিশাখা গাইড লাইনস’।

বেশ কিছু বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এই অভিযান বা মিছিলের আহ্বায়ক আসিফ শেখ হতাশা নিয়ে বলেন, ভাঁওরি দেবীর জন্যই আমরা মিছিল নিয়ে জয়পুর থেকে তিরিশ মাইল দূরের ভাতেরি গ্রামে গিয়েছিলাম। কিন্তু যেদিন মিছিল পৌঁছায়, সভা হয়, সেদিন গ্রামের চার হাজার মানুষের এক জনও সেখানে হাজির হননি।

ভাঁওরির কথায়, ‘এই মুখের কুলুপ ভাঙতে হবে। আমাদের কিসের লজ্জা? যারা ধর্ষণ করেছে, লজ্জা তো তাদের। আঙুল তো তাদের দিকে উঠবে।’

একটু পেছনে ফিরলে ২০১৬ সালের সরকারি হিসেব বলছে, ওই বছরে ভারতে প্রতিদিন ১০৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু মাত্র ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ মামলায় অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হন। বিচার পাননি ভাঁওরি দেবীও। তাঁর মামলা শেষ হওয়ার আগে পাঁচজন অভিযুক্তের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়। ভাঁওরি অবশ্য বলেন, এ সবে দমে গেলে চলবে না। পায়ের তলায় দমিয়ে রাখার জন্য এসব অত্যাচার হবেই। কিন্তু দাবিটা বুঝে নিতেই হবে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মাকসুদা আক্তার প্রিয়তী ২০১৪ সালের মিস আয়ারল্যান্ড খেতাব জয় করেন। আইরিশ মডেল ও ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর প্রিয়তী বাংলাদেশের শোবিজ জগতের যৌন হয়রানি নিয়ে সরাসরি অভিযোগ তোলেন। সম্প্রতি # মিটু ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন। বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ক্যাম্পেইন বাংলাদেশে আলোর মুখ দেখেনি। তবে এক বছর হোক বা পাঁচ বছর পরে হোক, একটা সময়ে বাংলাদেশের মেয়েরা মুখ খুলবেন। #মিটু ক্যাম্পেইন সফল হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন তিনি। সেই সময়ের অপেক্ষায় আছেন প্রিয়তী।

প্রিয়তীর মতো করেই বলতে চাই, এই দেশের মেয়েরা মুখ খুলুক, অন্যায়ের প্রতিবাদ করুক। তবেই প্রকৃত পরিবর্তন আসবে। নারীরা স্বপ্ন দেখে, কিন্তু শত বাধা তাদের স্বপ্নগুলোকে অন্ধকারে ঢেকে দেয়। তাই বলে-কী মেয়েরা-নারীরা স্বপ্ন দেখবে না, সফল হওয়ার জন্য চেষ্টা করবে না? মেয়েরা আরও বেশি করে স্বপ্ন দেখুক, সংগ্রাম করুক, জয়ী হোক। নারীদের স্বপ্ন সফল করতে নারী-পুরুষ উভয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ শেষপর্যন্ত আমরা সবাই তো মানুষ। তাই নারী-পুরুষের ভেদাভেদ যত দ্রুত দূর হবে, পৃথিবী তত দ্রুত হবে সাম্যের আর ভারসাম্যের।

লেখক: সম্পাদক, উইমেন ওয়ার্ডস