প্রেমিকাকে যৌনপল্লীতে বিক্রির জন্য পাঠাল প্রেমিক - Women Words

প্রেমিকাকে যৌনপল্লীতে বিক্রির জন্য পাঠাল প্রেমিক

প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বন্ধুর মাধ্যমে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে বিক্রির জন্য পাঠাল প্রেমিক। ওই কিশোরী প্রেমিকাকে (১৫) উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এলাহী মিয়া (২৫) নামে প্রেমিকের বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উদ্ধারকৃত কিশোরীর বাড়ি নেত্রকোনার মহনগঞ্জ উপজেলায়। পুলিশ জানায়, উদ্ধারকৃত কিশোরীকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে।

এমন কাজে সহযোগিতার দায়ে গ্রেফতার এলাহী মিয়াকে গতকাল রোববার দুপুরে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন।

দণ্ডপ্রাপ্ত এলাহী মিয়া কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পশ্চিম চাওলা গ্রামের মো. মিলন মিয়ার ছেলে। এলাহী মিয়া সাভার এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত।

উদ্ধার হওয়া কিশোরী জানায়, বাবার মৃত্যুর কয়েক বছর পর মায়ের সঙ্গে ঢাকার সাভার এলাকায় এসে বসবাস শুরু করি। মা সাভার এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। গত বছর আমার মা বিয়ে করেন। এতে পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়ি আমি। বেঁচে থাকার জন্য লেখাপড়া ছেড়ে সাভার এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেই। কারখানায় যাওয়া-আসার পথে সাভার পানপাড়া এলাকার বাবুল শেখের ছেলে অভি শেখের (১৮) সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।

কিশোরী আরও জানায়, একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় অভি। সেই সঙ্গে অভি জানায় তোমাকে বিয়ে করলেও এ বিয়ে মেনে নেবে না আমার পরিবার। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় আমার এক খালার বাড়ি আছে। সেখানে আমরা বিয়ে করব। চলো, আমরা সেখানে যাই। আমি অভির কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই।

শনিবার অভি তার বন্ধু এলাহীর সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে বলে, তোমরা দৌলতদিয়ায় যাও, আমি আসছি। অভির বন্ধু এলাহীর সঙ্গে আমি দৌলতদিয়ায় চলে আসি। এখানে এসে একটি খাবার হোটেলে বসে খাওয়া-দাওয়া করে অভির জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।

আমাদের দেখে হোটেল কর্মচারীদের সন্দেহ হয়। তারা পাশের নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

কিশোরীর ভাষ্য, আমার কাছে সম্পূর্ণ বিষয়টি জেনে অভির মোবাইলে কল দেয় পুলিশ। এখানে আসতে বলার পরই মোবাইল বন্ধ করে দেয় অভি। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভি না আসায় আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেই সঙ্গে অভির বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোরীকে যৌনপল্লীতে বিক্রির জন্যই কৌশলে দৌলতদিয়ায় আনা হয়। কিশোরীর প্রেমিক এখানে না আসায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে প্রেমিকের বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত গ্রেপ্তার যুবককে এক মাসের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি উদ্ধারকৃত কিশোরীকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন আদালত।