লিপস্টিকের লোভ দেখিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে হত্যা - Women Words

লিপস্টিকের লোভ দেখিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে হত্যা

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই ডেমরায় দুই শিশুকে হত্যা করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই শিশু ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) ও নুসরাত জাহান (৪) কে বাসায় নিয়ে যায় গোলাম মোস্তফা ও আজিজুল বাউনিয়া। ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে তারা প্রথমে লিপস্টিক দিয়ে দুই শিশুকে সাজিয়ে দেয়। 

এরপর ইয়াবা সেবন করে মোস্তফা ও আজিজ রুমে উচ্চস্বরে ক্যাসেট প্লেয়ার বাজিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এসময় শিশুরা প্রচণ্ড চিৎকার শুরু করলে ফারিয়াকে গলাটিপে হত্যা করে আজিজুল। এরপর নুশরাত জাহানকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মোস্তফা। 

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারী বিভাগের উপ কমিশনার মো. ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান। 

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা ও তার চাচাতো ভাই আজিজুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

ডিসি ফরিদ উদ্দিন বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে দুই শিশু নুশরাত জাহান ও ফারিয়া আক্তার দোলা নিখোঁজ হয়। এলাকায় তাদের সন্ধান পেতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সন্ধ্যার দিকে এলাকাবাসীর সহায়তায় শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

তিনি আরো বলেন, হত্যার পর আজিজুল পালিয়ে যায়। আর মোস্তফা দুই শিশুর মরদেহ নিজের বাসায় রেখে দেয়। 

ওয়ারীর ডিসি আরো জানান, মোস্তফার স্ত্রী সন্ধ্যার দিকে গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরলে স্বামীর অস্বাভাবিক আচরণ দেখতে পান। মেঝেতে শিশুদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখেন। দুইজনের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোকজন টের পায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। তবে ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকেই মোস্তফা পালিয়ে যায়। 

মোস্তফা সিরামিকের কারখানায় ও আজিজুল একটি বেকারিতে কাজ করতো বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, শিশু দুটি চিৎকার করলেও উচ্চস্বরে গানের কারণে তাদের আওয়াজ বাইরে বের হতে পারেনি। শিশু দুটি নার্সারিতে পড়তো। 

ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল কিনা জানতে চাইলে ফরিদ উদ্দিন বলেন, এই কাজ করার আগে মোস্তফা মোবাইল ফোনে আজিজুলকে ডেকে নেয়। তার মানে বোঝা যাচ্ছে এখানে পূর্ব কোনো পরিকল্পনা ছিল। তারা একে অপরের মামাত-ফুফাত ভাই। 

শিশুদের কেন টার্গেট করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে ডিসি বলেন, এটি বিকৃত মানসিকতা থেকে হচ্ছে। তাছাড়া মাদকাসক্তি এর বড় কারণ। আর যে সমস্ত জায়গায় এসব ঘটনা ঘটছে সেখানে অভিভাবকরা একটু কম সচেতন। নিম্ন আয়ের কারণে অনেকটা এরকম হয়ে থাকে। তবে দোষ তাদেরই, যারা এসব করে থাকে। বড়দের কাছে কেন শিশুরা নিরাপদ থাকবে না? 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি ওয়ারী বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করেছিলাম মুক্তিপণের জন্য দুই শিশুকে অপহরণ করা হয়েছিল। কারণ আসামিরা মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসা করত। তাদের নামে যাত্রাবাড়ী থানায় ডাকাতি মামলাও আছে। 

তিনি বলেন, আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে নিশ্চিত হয় সে ব্যাপারে আমরা তথ্য প্রমাণ ও আলামত দিয়ে সহায়তা করবো।