গলার স্বর শুনে ধর্ষককে শনাক্ত করলেন তরুণী - Women Words

গলার স্বর শুনে ধর্ষককে শনাক্ত করলেন তরুণী

আদালতে আসামির কণ্ঠ শুনে ধর্ষক বলে শনাক্ত করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক তরুণী। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা ওই ব্যক্তিও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। গত মঙ্গলবার ভারতের দিল্লি আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধর্ষণের শিকার ৩২ বছর বয়সী ওই তরুণী আদালতে দাঁড়িয়ে গলার স্বর শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ব্যক্তিকে ধর্ষক বলে শনাক্ত করেন। পরে তাঁর জবানবন্দি ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত গত মঙ্গলবার সৌরভ কাপুর (৩২) নামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেন। ২৪ জুলাই এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বিধবা। তাঁর আট বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান আছে। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেন। কিন্তু এই আত্মহত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে—তা উদ্ধারেই তিনি দিল্লিতে একজন আইনজীবীর খোঁজ করছিলেন। এই সূত্রেই ময়ূর বিহারের বাসিন্দা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সৌরভের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। সৌরভ একটি ব্যাংকে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত। ২০১৫ সালের মে মাসে এক আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে গুরগাঁওয়ের একটি অতিথি নিবাসে নিয়ে যান সৌরভ। সেখানেই সৌরভ ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন।

আদালতে ওই তরুণী বলেন, ‘প্রথমবার ধর্ষণের পর আমি কান্নাকাটি করছিলাম। ওই সময় সৌরভ আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে তিনি আমাকে ধর্ষণ করেছেন। এ সময় বিভিন্ন ছুতোয় তিনি আমার কাছে টাকাও নিয়েছেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরই তিনি জানান যে তিনি আমার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চান না।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, এরপর উপায় না দেখে ওই তরুণী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে এমন একটি সংস্থাকে বিষয়টি জানান। তারাই ফাতিমা কবির নামের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে ফাতিমা কবিরের সহায়তায় ২০১৫ সালের নভেম্বরে থানায় এফআইআর দায়ের করেন তরুণী। ডিসেম্বরে সৌরভকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় অতিরিক্ত সেশন জজ রজনী যাদব দুজনের মোবাইলের কললিস্ট, ফরেনসিক প্রতিবেদন, হাসপাতালের প্রতিবেদন ও তরুণীর জবানবন্দির ভিত্তিতে সৌরভকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ২৪ জুলাই রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছেন তিনি।

সরকারি কৌঁসুলি অরবিন্দ শর্মা বলেন, বাদী ও অভিযুক্ত দুজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় এ মামলার সবকিছু প্রমাণ করা বেশ কঠিন ছিল। এ কারণে তাঁদের মোবাইলের কললিস্ট, ওই সময়ে তাঁদের অবস্থান খতিয়ে দেখা হয়েছে। বেশির ভাগ সময়ে তাঁদের দুজনের অবস্থান একই স্থানে ছিল। আদালতে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিকে কথা বলতে বলা হয়েছিল। তাঁর গলার স্বর শুনেই ধর্ষণকারী হিসেবে শনাক্ত করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ওই তরুণী।

সূত্র : প্রথম আলো