মৃত্যুর ৩ বছর পর তোলা হলো চিত্রনায়িকা অন্তরার লাশ - Women Words

মৃত্যুর ৩ বছর পর তোলা হলো চিত্রনায়িকা অন্তরার লাশ

মৃত্যুর তিন বছর পর ময়নাতদন্তের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকা অন্তরার লাশ লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুনঃতদন্তের জন্য গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে আজিমপুর কবরস্থান থেকে  মৃত দেহের কংকাল তোলা হয়।

এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন। অন্তরার মা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ  মর্গে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কয়েকটি ব্যবসা সফল বাংলা সিনেমার নায়িকা অন্তরার পুরো নাম মোসা: পারভীন আকতার লাকি। তার মৃত্যুর ঘটনাটিকে হত্যা দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন অন্তরার মা আমেনা খাতুন। আদালতের নির্দেশে ওই মামলার তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার এডিসি (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আজিমপুর কবরস্থান থেকে অন্তরার লাশ তোলা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে লাশের ময়নাতদন্ত এবং ডিএনএ টেস্ট করা হবে। এসব প্রতিবেদনের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি বেইলি রোডের মনোয়ারা হাসপাতালে মারা যান ৩৩ বছরের অন্তরা। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে অন্তরার পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ করা হয় তার স্বামী শফিকুল ইসলাম খোকন মিয়ার বিরুদ্ধে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, মোসা: পারভীন আকতার লাকি ওরফে অন্তরার বাড়ি চাঁদপুর সদরের চরপুয়া গ্রামে। তার স্বামী খোকনের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা উত্তরপাড়া এলাকায়। তিনি বড় মগবাজার কাজীর গলি ১০৪/১ নম্বর বাড়িতে থাকতেন। ২০১০ সালের ২৬ মে তিনি খোকনকে বিয়ে করেন। ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখান থেকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিলে ৮ জানুয়ারি মারা যান।
পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই আজিমপুর কবরস্থানে দাফন হয়।

অন্তরার মা আমেনা খাতুন বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। অন্তরার সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এবং অর্থের লোভে নিজেকে অবিবাহিত বলে  বিয়ে করেন শফিকুল ইসলাম খোকন। বিয়ের কিছুদিন পর অন্তরা জানতে পারে খোকনের স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রয়েছে। অন্তরা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। এরপর থেকে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। অন্তরার আইয়ান ইসলাম নামে এক পুত্র সন্তান আছে। আমেনা খাতুন আরো জানান, তিনি মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। গত ১২ জানুয়ারি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (দশম) আদালতের বিচারক অন্তরার লাশ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দেন। ময়নাতদন্ত শেষে ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাগল মন, প্রেমের কসম, লেডি ‌র‌্যাম্বো, শয়তান মানুষ, নাগ-নাগিনীর প্রেমসহ বেশকয়েকটি ব্যবসা সফল ছবিতে অন্তরা অভিনয় করেছিলেন।

আজ বুধবার অন্তরার লাশ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তরার মা।

সূত্র: কালের কন্ঠ