প্রাণভিক্ষার বিষয়ে আরও সময় চান মীর কাসেম - Women Words

প্রাণভিক্ষার বিষয়ে আরও সময় চান মীর কাসেম

প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করার জন্য আরও সময় চেয়েছেন যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, তিনিসহ কয়েকজন কারা কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পুনরায় মীর কাসেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে কাসেমের সিদ্ধান্ত জানতে চান। এ সময় ভাবনাচিন্তার জন্য আরও সময় চান তিনি।

মীর কাসেম প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি তারা নিয়ে রেখেছেন বলে জানান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার -২ এর জেলার নাশির আহমেদ।

বুধবারও মীর কাসেমের সাথে দেখা করেন কারা কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি না এ বিষয়ে মীর কাসেমের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তারা। এদিনও তিনি কোনো মতামত দেননি। ভাবনা চিন্তা করার জন্য সময় চান তিনি।

গতকাল বিকেলে কারা অধিদপ্তরের এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় চেয়েছেন মীর কাসেম আলী। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে যৌক্তিক সময় দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে মীর কাসেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তাঁর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, নিখোঁজ ছেলেকে না পাওয়া পর্যন্ত প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত তারা দিতে পারবেন না।

গত ১০ আগস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে মীর কাসেমের ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেমকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ বলছে, বিষয়টি তাদের অজানা।

মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মীর কাসেমের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন এবং রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। কারাগারে বসে এক ব্যান্ডের রেডিওর মাধ্যমে সে খবর জানতে পারেন তিনি।

কারা কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার সকালে তাকে তার রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনায়। কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, রায় পড়ে শোনানোর পর মীর কাসেমের চোখে-মুখে ছিল উদ্বেগ। কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছিল তাকে।

মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। বিকেলেই রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসে। সেখান থেকে রায়ের অনুলিপি পাঠানো হয় কাশিমপুর কারাগারে। রিভিউ খারিজ হওয়ায় মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ের শেষ ধাপের ইতি ঘটেছে। এখন রয়েছে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ। প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা তা তাঁর আইনজীবী বা পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা আবেদন নাকচ হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।

২০১২ সাল থেকে এ কারাগারে রয়েছেন জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেম আলী (৬৩)। শুরুতে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেয়া হয়। ২০১৪ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ট্রাইব‌্যুনালে মৃত‌্যুদণ্ডের রায়ের পর তাকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে। 

সূত্র: বিডিনিউজ২৪, প্রথম আলো