টানা অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তথ্য চায় সরকার - Women Words

টানা অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তথ্য চায় সরকার

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ দিন বা তার বেশি অনুপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের নাম, পরিচয়ের তালিকা চেয়েছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া এই নির্দেশের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

ঈদের ছুটি শেষে সচিবালয়ে প্রথম কর্মদিবসে সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কি করা উচিত তা নিয়ে তিনি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সরকারের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবেই এটি করা হবে বলে জানান তিনি।  ভালোবাসা, আদর ও মমতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বড় করতে চান তাঁরা, এই কথাও জানান মন্ত্রী।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বিষয়গুলোতে তুলনামূলক স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে-মেয়েরা যেগুলোতে লেখাপড়া করে বা ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি যুক্ত হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, খুবই চিন্তিত।”

“যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলে-মেয়েরা যুক্ত হয়েছে তাই আমাদের বাড়তি দায়িত্ব অবশ্যই আছে। সেজন্য আজকে আমরা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কতগুলো নির্দেশনা পাঠাব, পরে আরও নির্দেশনা দেব।”

জঙ্গিবাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জড়ানো ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকেই ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান তিনি। নাহিদ বলেন, “অভিভাবকই লক্ষ্য রাখতে পারেন সন্তানের মধ্যে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না, পালিয়ে গিয়ে অন্য কোথাও থাকছে কি না? এ ধরনের পরিবর্তন যেখন দেখবেন তখনই যেন জানান, আমরা স্কুলে কমিটি করে দেব।”

মন্ত্রী আরও বলেন, সন্তানদের শুধু টাকা-পয়সা, ভালো গাড়ি দিলে হবে না। স্নেহ, মমতা, ভালোবাসা দিয়ে পারিবারিক সুষ্ঠু বন্ধনে আবদ্ধ করে তাদের মন জয় করে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সব চাহিদা পূরণ করে দিয়ে সবকিছু হবে না- এটাই প্রমাণ হচ্ছে।

গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। জঙ্গিরা দেশী বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিককে জিম্মি করে হত্যা করে। দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাও মারা যান।সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় ছয়জন জঙ্গি। যাদের মধ্যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করেছিল আইএস। তারা প্রত্যেকেই গত কয়েক মাস নিখোঁজ ছিলেন বা পরিবারের যোগাযোগের বাইরে ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

এরপর বৃহস্পতিবার ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ্গাহ মাঠের পাশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশের গুলিতে নিহত যুবকও গত মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চবিত্ত পরিবারের বহু ছেলে এভাবে বাড়ি ছেড়ে জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে বলে ইতোমধ্যে অভিভাবকদের সতর্ক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে অভিভাবকদের তথ্য দিতে অনুরোধ করেছেন।

সম্প্রতি ১০জন যুবকের সন্ধান চেয়ে তাদেরকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা।

এরা হলেন- ঢাকার তেজগাঁওয়ের মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান, বাড্ডার জুনায়েদ খান (পাসপোর্ট নম্বর- এ এফ ৭৪৯৩৩৭৮), চাপাইনবাবগঞ্জের নজিবুল্লাহ আনসারী, ঢাকার আশরাফ মোহাম্মদ ইসলাম (পাসপোর্ট নম্বর-৫২৫৮৪১৬২৫), সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরী (পাসপোর্ট নম্বর-এল ০৬৩৩৪৭৮), ঢাকার ইব্রাহীম হাসান খান (পাসপোর্ট নম্বর-এ এফ ৭৪৯৩৩৭৮), লক্ষ্মীপুরের এ টিএম তাজউদ্দিন (পাসপোর্ট নম্বর- এফ ০৫৮৫৫৬৮), ঢাকার ধানমণ্ডির জুবায়েদুর রহিম (পাসপোর্ট নম্বর-ই ১০৪৭৭১৯), সিলেটের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি (পাসপোর্ট নম্বর-টি কে ৮০৯৯৮৬০) ও জুন্নুন শিকদার (পাসপোর্ট নম্বর-বি ই ০৯৪৯১৭২)।

সূত্রঃ প্রথম আলো, বিডিনিউজ