প্রতিক্রিয়া Archives - Page 2 of 5 - Women Words

প্রতিক্রিয়া

ছোটবেলার নাচের দিদিটা!

ছোটবেলার নাচের দিদিটা!

ফাহমিদা ফাম্মী ছোট বেলা থেকেই সাজুনি বুড়ি ছিলাম খুব। মুখে ক্রিম পাউডার মেখে, চুরি আলতা মালায় বউ সাজতাম মাঝে মাঝেই... টিভিতে নাচের অনুষ্ঠানে দেখতাম মেয়েরা অনেক সাজুগুজু করে নাচ করতো। কানে দুল অথবা বাউটি পায়ে রুমঝুম করা নুপুরে বেশ লাগতো। তখন একদিন পাশের বাসার একটা মেয়ে বয়সে আমার ছোট, নাচ শিখতে ভর্তি হল, আমিও সুযোগ পেয়ে গেলাম। বাবাকে বললাম বাবা নাচ শিখবো! বাবা মুখের উপর কখনো না করেন নি সেদিন ও করলেন না তবে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি তেমন ভাবে রাজী না। পরে শুরু হল অনশন কার্যক্রম। খাওয়া বাদ দিয়ে বারান্দায় বসে গেলাম, হয় নাচে ভর্তি করবে নয়ত নো খাওয়া দাওয়া! বাবা কি মেয়েকে না খাইয়ে বসে থাকতে দেখতে পারে! ভর্তি করলেন নাচে। নাচের ক্লাসে এক দিদি নাচ শেখাতেন। নাম সুবর্ণা সাহা। তখন আমি অনেক ছোট ক্লাস থ্রিতে পড়ি! দিদিকে তাই অনেক বড় মনে হত! অনেক কড়া স্বভাবের ছিলেন আমার দিদিটা! একটু দুষ্টামি করলেই চোখ
জীবন যখন যেমন

জীবন যখন যেমন

রোমেনা লেইস অভিজ্ঞতাটা শেয়ার না করে পারছি না। আমি আর আমার হাজবেন্ড রিলাক্স মুডে জ্যাকসন হাইটস্ এর প্রিমিয়ামে খেতে এসেছি।সাতটা পার হয়ে গেছে।দুই চক্কর দেয়ার পর জুৎসই একটা পার্কিং পাওয়া গেল। Fire hydrant থেকে আট ফিট দূরে ।বার কয়েক চেক করে সব ঠিকঠাক দেখে আমরা সুন্দর একটা টেবিল বেছে নিয়ে বসে পড়লাম।মনমত খাবার অর্ডার দিয়ে বসে কতো কী গল্প করছি।খাবার দিয়ে গেলে বেশ মজা করে খেলাম।তারপর চা নিলাম।এদের চা খুব ভালো বানায়। আয়েশ করে চা খেয়ে বিল আনতে বললাম ।বিল পরিশোধ করে মিষ্টি নিলাম বাসায় নেয়ার জন্য ।ওখান থেকে বের হয়ে মান্নান গ্রোসারী থেকে আরো কিছু টুকিটাকি জিনিস কেনাকাটা করলাম আর কিনলাম 'প্রথম আলো'। এরপর আমরা যেখানে গাড়ি পার্ক করা আছে সেখানে গেলাম। কিন্তু আমাদের গাড়ি কই?গাড়ি নাই।মনে হচ্ছে যাদুমন্ত্র বলে ভেনিস হয়ে গেছে গাড়ি। আমার হাজবেন্ড বললো -চুরি হয়ে গেলো নাকি? -নাকি টো করে নিয়ে গেল। গাড়ি নাই। সাথে স
কর্ম যখন প্রবল আকার

কর্ম যখন প্রবল আকার

শবনম সুরিতা ডানা এক. সাদা কাগজের দিকে ঠায় তাকিয়ে আছি। তাকিয়ে থাকতে আজকাল আর সাহস লাগে না। চোখ ফেরাতে তাও ধক লাগে অনেক। এখন মানুষের মুখের থেকে চোখ ফেরানো কঠিন। তুলনায় অমানুষদের সাথে বাক্যালাপ বরং অনেক সহজ। ঠিক যেভাবে প্রসাদকাকুর থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে পেরেছি আমি। বুঝেছি, ওখানে একটা মানুষ ছিল একটু আগেও, তবে এখন নেই। প্রসাদকাকু ছিল। ছিল, অর্থাৎ অতীত। অতীতের থেকে চোখ ফেরানো অনেক সহজ। বর্তমানের দিকে দৃঢ় দৃষ্টিপাত করা বড্ড কঠিন। অতএব আমি সাদা অতীতের, শূন্যতার দিকেই ঠায় তাকিয়ে আছি। এভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই বুঝতে পারি আমার আসলে লেখার কিছু নেই, বলারও না। শুনেছি মানুষের মৃত্যুতে শোক থাকে, আমার প্রবল রাগ আছে। ভয় পাচ্ছি আমি খুব। ভয় পাচ্ছি কারণ আমি যে আর বিশ্বাস রাখতে জানব না। ঝাঁকরা চুল, হাসিমুখে মুশকিল আসান হয়ে আসা সকল মানুষদের স্থায়িত্ব অস্বীকার করব, জানি। যখনই কেউ কাঁধে হাত রেখে বলবে, “ডানা, তুই এখ
নান্দিক নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘হাসন রাজা’

নান্দিক নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘হাসন রাজা’

রীমা দাস হাসন রাজা-এই নামটি এখন দেশে বিদেশে আলোচিত এক নাম। গতকাল শনিবার নান্দিক নাট্যদল, সিলেট তাদের ২৩তম প্রযোজনা ‘হাসন রাজা’ পরিবেশন করল। নগরীর রিকাবিবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হল নাটকটি। মিলনায়তন ভর্তি মানুষ মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করল হাসন রাজার বর্ণিল জীবনের কাহিনী, যা দেখে আমার হাসন রাজা সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেলো। তরুণ নাট্যকার মোস্তাক আহমেদের যাদুকরী লেখনি দর্শকদের আকর্ষণ করতে পেরেছে। নবীন নাট্যকার জানেন নাটকের নাটকীয়তা, কখন কোথায় কি উপস্থাপন করবেন তা। তিনি আরো জানেন সংলাপ নাটকের প্রাণ। সেই সংলাপকে তিনি করেছেন জীবন্ত ও বাস্তব। তার সংলাপের মোহজালে আমরা একঘন্টা আবদ্ধ ছিলাম। জমিদার হাসন রাজার জীবন যাপন স্বল্প পরিসরে ফুটিয়ে তুলেছেন সিলেটের নাট্য জগতে সুপরিচিত, আমাদের প্রিয় আমিরুল ইসলাম বাবু ভাই, যিনি এই নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। বাবু ভাইয়ের নির্দেশনা সম্পর্কে বলার মত
বাবার মত হয় না আর কেউ

বাবার মত হয় না আর কেউ

রোমেনা লেইস আমরা বাড়ি ফিরবো যেদিন তার আগে থেকেই আমার আব্বা নিজের পছন্দের মাছ-মাংস সব বাজার করে, রান্না করিয়ে, আমাদের অপেক্ষায় থাকতেন। বাড়ি ফিরলে গেটের কাছেই আব্বা বুকে টেনে নিয়ে বলতেন, বেশী কষ্ট হয়েছে কি? খিদে পেয়েছে? রাস্তায় কী খেয়েছ? আজ আব্বা নেই। এখন কেউ আর অপেক্ষায়ও থাকে না।। আমার আব্বা ডাক্তার আবুল লেইস। ডাক নাম ময়না। জন্ম ১৯২৪ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর। বাড়ির পাশের মক্তবে লেখা পড়ায় হাতখড়ি। বড় বোনদের খুব আদরের ভাই। জুবিলী স্কুলে ভর্তি হয়ে ভাল ফলাফল করেন। মেট্রিক পাশ করেন প্রথম বিভাগে লেটার সহ। সিলেট এমসি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন প্রথম বিভাগে লেটার সহ। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। এ সময় আচমকাই আমার দাদা মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর পড়ালেখা চালানো জটিলতায় পড়ে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রফেসর আমার মার মামাত ভাই এর সহায়তায় আমার মা এর সাথে বিয়ে হয়। মেডিকেল এ পড়ার সুবাদে ৫২ র
ঝাপসা চোখে আমি ভালোবাসা দেখি…

ঝাপসা চোখে আমি ভালোবাসা দেখি…

পৃথা শারদী আজকাল রাস্তায় হাঁটার সময় মাথা নিচু করে রাখি, মাঝে মাঝে ভারী পাওয়ারের চশমাটা খুলে ফেলি। সেদিন ধানমন্ডি গিয়েছিলাম একটা কাজে। শুক্রবারের ফাঁকা রাস্তা দেখে মনে হল, হাঁটি কিছুক্ষণ। সঙ্গে আলামিন ছিলো। তাকে বললাম, তুমি আলমাসের সামনে যাও, আমি আসছি। আলামিন চলে গেল। আমি নান্দুসের পাশের রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলাম। হাঁটি আর চারপাশ দেখি। একটা সময় চশমা খুলে ব্যাগে ভরে নিলাম, চারপাশ তখন ঝাপসা হয়ে এলো, শুধু শব্দটা স্পষ্ট শুনি। সময় তখন দুপুর আর বিকেলের মাঝামাঝি মানে তিনটা বাজে প্রায়। মাথা নিচু করে হাঁটছিলাম। হঠাৎ কানে এলো ফুঁপিয়ে কাঁদার শব্দ! ঝাপসা চোখে দেখার চেষ্টা করলাম শব্দের উৎস, হালকা গোলাপি আর সাদা শার্ট,প্যান্টের আবছায়া। আমার থেকে হাত তিনেক দূরে। আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। ব্যাগ থেকে দ্রুত হাতে চশমা বের করে ঠেলে পাঠালাম চোখের কাছে। দেখলাম, এক ভদ্রলোক ভারিক্কি চালে দাঁড়িয়ে আছেন, সঙ্গে গোলাপি শাড়
সীমান্ত খুলে দেয়াই একমাত্র সমাধান হতে পারে না

সীমান্ত খুলে দেয়াই একমাত্র সমাধান হতে পারে না

ফারহানা নাসিম মুসলমান বলেই রোহিঙ্গাদের জন্য যারা বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিতে বলছেন, আমি তাদের পক্ষে নই। ইনফ্যাক্ট আমি কোন কারণেই তাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার পক্ষে নই। যদি কোন পক্ষে যেতেই হয় তবে আমি অং সান সু চির শান্তিতে পাওয়া নোবেল ফেরত নেয়ার পক্ষে। আমরা যখন হিউম্যান রাইটস নিয়ে চেঁচিয়ে মরছি- তখন সেই দেশের শান্তিতে নোবেল পাওয়া জননেত্রী রহস্যজনক ভাবে চুপ করে আছেন। বিগত প্রায় চল্লিশ বছর যাবৎ আমরা চট্টগ্রামের মূল অধিবাসীদের চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা পালছি। এই নিগূঢ়তম তথ্যটা অনেকেই জানেন না। বাংলাদেশে শুধু বিহারী ক্যাম্পই নয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পও আছে। এমনকি তারা প্রশাসনের দূর্নীতির সুযোগ নিয়ে ভোটার তালিকাভুক্ত হয়ে ভোটার হিসাবে ভোটদানও করে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে নিয়ে তাদের কার্যকলাপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মাথাও কাটা যায়। মূলতঃ এরা হচ্ছে দুধকলা দিয়ে পোষা কালসাপ বিশেষ। চোরাচা
সব আনন্দ ম্লান করে দেয় ভূমিপুত্র টুডুর রক্তাক্ত চোখ

সব আনন্দ ম্লান করে দেয় ভূমিপুত্র টুডুর রক্তাক্ত চোখ

রীমা দাস প্রতি জন্মতিথির মতো এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবারও তিনি আমাকে ব্যথিত করে গেলেন। তিনি আমার মন খারাপের অনুভূতি। প্রতি জন্মদিনে আমার মন খুব খারাপ থাকে। কেন! তা আমি নিজেও জানি না। এই অনুভূতির জন্য আমি বিব্রত থাকি। হাজারটা সমস্যার মাঝেও মুখে একচিলতে হাসি ধরে রাখতে ভুল করি না কখনও অথচ এই দিনটি আমায় বেদনায় মুড়ে রাখে। সময়ের পরিভ্রমণ মনে করিয়ে দেয় আমি সেই চিরন্তন সত্যের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। একটা সময় ছিলো যখন আমি খুব রাগ করতাম কষ্ট পেতাম আমার মা, বোন, বন্ধুরা যদি এই বিশেষ দিনটি ভুলে যেতো কোন কারণে। অথচ প্রথম কিছু নতুন অনুভূতির সাথে পরিচিত হলাম। এবারই প্রথম মনে হল, আমার আনন্দ উদযাপন উচিত নয়। আসলে আমার কোনো কিছুই করা উচিত নয়। নিজের ভেতর কিছু পাপবোধ কাজ করছিল। এবারই প্রথম আমি মনেপ্রাণে চেয়েছিলাম কেউ আমাকে ‘wish’ না করুক। সেই চিন্তা থেকে ফেসবুকে আমার জন্ম তারিখটা ‘hide’ করে রেখেছিলাম। রাত ১
কেউ একজন আমাকে অনেক ভালোবাসতেন

কেউ একজন আমাকে অনেক ভালোবাসতেন

ফাহমিদা খান ঊর্মি দাদুমণির বড় ছেলের বড় মেয়ে আমি। মানে পরিবারের প্রথম নাতনী। প্রথম হিসেবে স্বভাবতই সবার আলাদা আদর-যত্ন পেয়ে এসেছি জন্মের পর থেকেই। তার উপর জন্মের পর প্রথম তিন বছর পর্যন্ত যেহেতু পরিবারে আমি একমাত্র শিশু ছিলাম সেহেতু সব ব্যাপারে আমাকে নিয়ে তাদের বাড়াবাড়ি ছিল। তবে দাদীর বেলা সেটা যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়েরই ছিল। যে বাড়াবাড়িগুলো না করলেও হতো। যেমন ছোটবেলা উনি কখনো আমাকে মাটিতে খেলতে দিতেন না। শুধু তাই নয় দিনে ৫-৬ বার আমার কাপড় বদলে দিতে হত। কয়েক ঘন্টা পরপর কাপড় বদলে দেরী হলে আম্মুকে সে কি বকাঝকা। শরীরে নাকি রোগ জীবাণু বাসা বাঁধবে! উনার কিছুটা মানসিক সমস্যা ছিল। অন্য দশজন মানুষের মত তাই অত বোধ-বুদ্ধি ছিল না। তিনি আমাকে ফ্লোরে চক দিয়ে আঁকাআঁকি শেখাতেন। বেশি শেখাতেন ভূত-পেত্নি আঁকা। যার উপর রাগ হত ভূত/পেত্নি বানিয়ে তার ছবি আঁকতেন। তার সাথে যুদ্ধ খেলতাম আমরা। বন্দুক কিংবা তলোয়ারের ছবি
বন্ধু যদি অসাম্প্রদায়িক হও তবে প্রতিবাদ কর, প্রতিরোধ গড়

বন্ধু যদি অসাম্প্রদায়িক হও তবে প্রতিবাদ কর, প্রতিরোধ গড়

রীমা দাস ফেইসবুকে আমি খুব সক্রিয়, এ নিয়ে আমার বন্ধু মহলে আমার ‘সুনাম’-‘বদনাম’ আছে। কোথাও গেলে, কিছু করলে,গুলটিকে নিয়ে, বাবাকে নিয়ে বা বন্ধুদের নিয়ে সারাক্ষণ মেতে থাকি ফেবুতে। সেই আমার এখন ফেবুতে আসতে ভালোলাগে না। লাইক. কমেন্ট করতে ভালোলাগে না। আমার আনন্দ প্রকাশের ইচ্ছাগুলো মরে গেছে বা পাথর হয়ে গেছে। আমার বুকের ভেতর চাপা কষ্ট, আমার চোখে আগুন জ্বলছে। সে আগুন, যদি পারত তবে সব ভস্মিভূত করে দিত। কিন্তু সে আগুন ছাই চাপা আগুনের মত নিজেকে পুড়ছে কেবল, কেবল নিজেকে জ্বালাচ্ছে। আমরা সবাই মানুষ। আমি ভালো আছি কিন্তু আমার মা বোন,বন্ধু নিরাপদ নয়। তাদের জন্য আমার বুকের ভেতর দীর্ঘশ্বাস শুধু দীর্ঘ হচ্ছে। আগ্নেয়গিরির মত বুকের ভেতর লাভা জমছে, যা যে কোনো দিন বাইরে আসবে, নিজে জ্বলবে, জ্বালাবে সব। মনে পড়ে ১৯৯১ সালের কথা। তখন আমি স্কুলে পড়ি। বাবরি মসজিদ উপলক্ষে তখনও আমাদের মানে হিন্দুদের উপর ঝড় বয়ে গেছিল। আমরা খু