মুক্তমত Archives - Women Words

মুক্তমত

রবীন্দ্রনাথ কোনোদিন আমাকে কল করেননি

রবীন্দ্রনাথ কোনোদিন আমাকে কল করেননি

ডাঃ রাজীব দে সরকার ঘুম ভাঙলো একা একাই। একটু ঘেমে গিয়েছি। চোখ খুলে একবার মনে হলো, নিজের ঘরটাকেও চিনতে পারছি না। মোবাইলটা বাজছে। সম্ভবতঃ এ কারণেই ঘুম ভেঙ্গেছে। - হ্যালো, কে? (ঘুম এখনো কাটেনি আমার কন্ঠে) - আমি শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জোড়াসাঁকোর। তুমি এক সময় আমার কবিতা পড়েছো। - ও, কি চাই? আমি ভ্যাকসিন সংক্রান্ত কাজে জড়িত নই। - আমার ভ্যাকসিন লাগবে না, বাবা। ("বাবা" বলায় একটু ঘুম কাটিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলাম। কারন রোগীদেরকে 'বাবা' বলে সম্বোধন করতেন আমার সার্জারীর গুরু) - ও, কেন ফোন দিয়েছেন, কেউ কি অসুস্থ? - হ্যাঁ অসুস্থ। সেটা বলতেই ফোন দেওয়া। - জ্বী, বলুন। আমি শুনছি। - বৈদ্য রাজীব, তোমার সমাজের একদল পুরুষ খুব অসুস্থ। - আচ্ছা কাল হসপিটালে পাঠিয়ে দেবেন, দেখে দেবো। - পারবে তো দেখে দিতে? আচ্ছা, একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো। তোমরা কবিতা পড়া ছেড়ে দিলে কেন?
যৌনতা কি শুধু পুরুষের বিষয়, নারীকে কেন নিরুৎসাহিত করা হয়?

যৌনতা কি শুধু পুরুষের বিষয়, নারীকে কেন নিরুৎসাহিত করা হয়?

শাহনাজ পারভীন নারীর যৌনতা, তার কাম বাসনা, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে একটি নিষিদ্ধ বিষয়। এই প্রসঙ্গে কথা বলা খুব মুশকিল। নারীর যৌন আকাঙ্ক্ষা থাকতে নেই- এমনটাই সামাজিকভাবে নারীকে শেখানো হয়। নারীর শরীর, যৌনতা তার নিজের জন্য নয়, বরং পুরুষের ভোগের বিষয়, সন্তান জন্মদানের প্রক্রিয়ার অংশ। নারী নিজেও এক সময় এভাবেই ভাবতে শুরু করে। যে কথা যায় না বলা যৌনতা, কাম বাসনা- এসব বিষয়ে খুব খোলামেলাভাবে কয়জন নারী বলতে পারবেন? তা জানার জন্য যখন কথা বলার চেষ্টা করলাম, শুরু থেকেই না শুনতে হল বারবার। অনেকে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলতে নাকচ করে দিলেন, কেউ বিষয়বস্তু শুনেই হকচকিয়ে গেলেন, আবার কেউ লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে ফেললেন। "আই এনজয় সেক্স", আমি যৌন মিলন খুব উপভোগ করি," অবশেষে একজনকে পাওয়া গেলো যিনি সরাসরি এমনটাই বললেন, তবে নিজের নাম, পরিচয় লুকিয়ে রাখার শর্তে। "আমি দু'একবার
যেখানে মায়া নেই, সেখানে সৌন্দর্য নেই

যেখানে মায়া নেই, সেখানে সৌন্দর্য নেই

আশিক রাহমান মেয়েদের সৌন্দর্য যে পুরুষের হৃদয় না ছোঁয়, সে আসলেই হতভাগা, একটা মেয়ের প্রতারণায় সমস্ত মেয়ে জাতিকে যে কলঙ্ক দেয় সে শুধুই মূর্খ। কামনা ছাড়া যে নারীকে ভাবতে পারেনা তার বেঁচে থাকা পশুর মত। নারীকে যে অবজ্ঞা করে সে সিমার হয়তো! পৃথিবীর সৌন্দর্য বুঝতে হলে নারীকে বুঝতে হবে। যে নারী, তার সৌন্দর্য শুধু দেহে নয়, তার সৌন্দর্য তার মায়ায়। পৃথিবীর প্রতিটা সৌন্দর্যের সাথে এই মায়ার সম্পর্কটা আছে, যেখানে মায়া নেই, সেখানে সৌন্দর্য নেই। আর নারীর চেয়ে মায়াবী স্রষ্টার পর আর কে আছে! মানুষ বলো আর সামান্য মাছি-ই বলো মোমের মত শরীরে পাথরের মত শক্ত করে মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে রাখার ক্ষমতা নারীর চেয়ে বেশি আর কারো নেই...।
’বাইশে শ্রাবণ’ এবং শান্তিনিকেতন

’বাইশে শ্রাবণ’ এবং শান্তিনিকেতন

মিতু বালা “বাইশে শ্রাবণ” শুনলেই মনের মধ্যে হাজার ভাবনা খেলা করে, তা কেবল মৃত্যু ভাবনা'য় সীমাবদ্ধ থাকে না। রবি ঠাকুরের পদচারণা বৃহত্তর জগৎ জুড়ে। তাই মৃত্যু নিয়ে তাঁর ধ্যান-ধারণা ছিলো ব্যতিক্রম। মৃত্যুর মধ্যেও যে সৌন্দর্য আছে এবং এটাও যে সহজ সাবলীল তা বোধহয় রবীন্দ্র সৃষ্ট সাহিত্যই প্রথম আমাদের জানান দিয়েছিলো। তিনি মৃত্যুকে খুব সুন্দর ভাবে গ্রহণ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের কাব্য মানস পটে মৃত্যু চিন্তার নানা ভাবের প্রতিফলন ঘটেছিলো। মৃত্যুকে কখনও তিনি বন্ধু রূপে কল্পনা করেছেন, কখনও সখা কিংবা প্রেমিকের রূপে ভেবেছেন। আবার কখনও মৃত্যুকে “অতি নিচ”,“অনুদার”,“সর্বগ্রাসী” বলে কটুকাটব্য করেছেন। পারিবারিক ভাবে মৃত্যু শোকে বারবার জর্জরিত হয়েছেন। তাই মৃত্যু ভাবনা উড়ো মেঘের মতো ঘুরেফিরে এসে নাঁড়া দিয়েছে তাঁর মানস লোকে। জীবনের শেষ বেলার উপলব্ধি অবশ্য কিছুটা দার্শনিক গোছের ছিলো; কিছুটা সংশয়,অস্পষ্টতা, উদাসীনতা
সম্পর্ক ও সম্প্রীতি

সম্পর্ক ও সম্প্রীতি

তানভীর তারেক বাড়ি পালিয়ে অণিমা আর আমি কলকাতা আশ্রয় নিলাম। আশ্রয় মানে গানের রেকর্ডিং এর উসিলায় ঘুরতে যাওয়া। সমাজে মেয়েদেরই বেশি বাড়ি পালাতে হয়। সিনেমায় ছেলেদেরকেও অবশ্য দেখা যায় পালাতে। কিন্তু বাস্তবে সেই সংখ্যা খুব কম! ঠিক আমার পালাতে হয়নি। অনিমার একার লড়াই-ই ছিল। বাড়ি পালাতে হয় কারন ওরা এক শৃঙ্খলে বাঁধা থাকে। এরপর আরেক শৃঙ্খলে যায়। যেন ওদের শৃঙ্খলে বেঁধে রাখাটা খুব জরুরী। পুরুষদের মতো স্বার্থপর জাত আর কোনো প্রানী নেই! বিয়েটাও একসময় মেয়েদের শেকল হয়ে যায়। বিভিন্ন শোতে - অনেকের সাথে বকবক করি বলে টের পাই। বেশিরভাগ তারকারা বিয়ের পর শৃঙ্খলে থেকে এই মিডিয়া ছেড়ে দেয়, নয়ত স্বামীকে। দুটোকে সঙ্গে রেখে চলা যেন মুশকিল! বেশিরভাগ অর্থে বলছি। এরভেতরে কেউ কেউ বিবাহের পর আগের শোবিজ জীবন খুব খ্রাপ। খুব ভুল করেছি। এসব বলে ফ্যানা তুলে দেয়। এসব ভন্ডামির প্রতিবাদ করি আমি বরাবরই। কারণ প্রতিটি কাজেই সততা ও অস
মা গো আমি তোমার চরণ, করব শরণ, আর কারো ধার ধারব না মা

মা গো আমি তোমার চরণ, করব শরণ, আর কারো ধার ধারব না মা

অদিতি দাস মা ডাকটির মাঝে যে আবেগ লুকিয়ে আছে, আর কোনো শব্দে সেরকম আবেগ নাই। সবচেয়ে মধুরতম শব্দ মা। যেহেতু আমরা একটি দু:সহনীয় সময় অতিক্রান্ত করছি, তাই অনেকের মা-ই হয়তো এই সময়ে অসুস্থ। একটু অক্সিজেনের জন্য হাসপাতালের আইসিইউ তে ভেন্টিলেটরের পাশে শুয়ে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছেন যেসব মায়েরা, তাদের সন্তানরা মাকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছেন। আমি জানি সেসব সন্তানদের অবস্থা। কিংবা যেসব সন্তানেরা কোভিড আক্রান্ত-তাদের মায়েরা বিনিদ্র কাটাচ্ছেন একেকটি রাত। সবচেয়ে খারাপ আছেন তারা-যারা এই মহামারীতে মাকে হারিয়েছেন। আজ মা দিবস। আসলে সঠিক করে বললে মা বিহীন মা দিবস। কিন্তু না থেকেও যে কী তীব্রভাবে থাকা যায়-সেটাই প্রমাণ করলে মা। শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে তুমি, আমার যে প্রিয় খাবারটা তুমি রান্না করতে-সেটা রান্না করতে গেলেও তুমি, সন্ধ্যাবেলায় চা খাওয়ার সময় তুমি, লেখালেখি করলে তুমি, গান গাইলে তুমি, আমার কোনো সা
কোভিড পরিস্থিতি ও  একজন অভিযোগহীন মানুষ

কোভিড পরিস্থিতি ও একজন অভিযোগহীন মানুষ

রাজীব দে সরকার ভাবলাম নিজের ডেস্কে বসে একটা ছবি তুলে রাখি। গভীর এক দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে যাচ্ছি। আমি, আমার শিক্ষকেরা, আমার সহকর্মীরা, আমার অনুজেরা। একটি উদ্ভ্রান্ত উদাসীন সম্প্রদায়কে আমরা সচেতন করতে চেয়েছিলাম। আমরা পারিনি। এর ফলাফল প্রতিদিন টিভি স্ক্রলে দেখতে পাচ্ছি। আজ পরিচিত বেশ কয়েকজন রোগীকে অনেক গলদঘর্ম হয়ে স্যারদের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এই মানুষগুলোর অক্সিজেন এর বড্ড প্রয়োজন ছিলো। এই মানুষগুলোর প্রাইভেট সেবাসদনে গিয়ে অক্সিজেন কেনার সামর্থ্য তেমন ছিলো না। কারন অক্সিজেন প্রয়োজন লিটারে লিটারে। প্রতি মিনিটে ৫০ থেকে ৭০ লিটার! কোথায় পাবে এতো!! সবাইকে বিছানায় তুলে অক্সিজেন এর ব্যবস্থা করে নিজের রুমে এসে ভাবলাম, যদি আজ আমার অক্সিজেন লাগে, কীভাবে জোগাড় হবে? যদি আমার মায়ের লাগে, কোথায় নিয়ে যাবো? কারন আমার হাসপাতালে আর একটা করোনা বেডও তো ফাঁকা নাই! খুব ব্যস্ত সময়ে ঢুকে যাবো
আয়নাঘর

আয়নাঘর

সুশান্ত পাল ভালোবাসার মানুষটি নিজের একটি আয়নাঘর। যে আয়নায় নিজেকে সম্পূর্ণ দেখা যায়, যে আয়নায় নিজের অস্তিত্বের কিছুই আড়াল থাকে না। ভালোবাসার মানুষ এমন একটি নির্ভার জায়গা, যেখানে নিজেকে সবটুকু ঢেলে দিয়ে মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়ানো যায়। আমরা যেমন আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের স্বরূপ স্পষ্ট দেখতে পাই, ভালোবাসার মানুষটিও আমাদের নিজস্ব ঘরের সে আয়নার মতোই, যে আয়নায় নিজের অবয়ব অবিকল প্রতিফলিত হয়। ভালোবাসার দুটি আত্মাই আসলে একে অপরের কাছে আয়নার মতো। যদি কোনও কারণে সেই আয়নাটি ভেঙে যায়, তখন সেখানে দুজনের কাউকেই আর দেখা যায় না। আয়নায় যেমন আমাদের শরীরের সকল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দাগও চোখ এড়ায় না, তেমনি ভালোবাসার মানুষের কাছের আমাদের কিছুই অপ্রকাশ্য, অজানা থাকে না। নিজেকে জানাবার ও বোঝাবার সীমাবদ্ধতায় কখনও ভালোবাসা থাকে না। যে ভালোবাসার সম্পর্কে দুজনের কেউই একে অপরের আয়না হতে জান
বাচ্চার মায়েদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

বাচ্চার মায়েদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

দিনা ফেরদৌস বাচ্চার মায়েদেরই দুঃশ্চিতা থাকবেই। বিশেষ করে প্রথম বাচ্চার বেলায় মায়েদের একটু সময় লাগে বাচ্চার আচরণ বুঝতে বুঝতেই। প্রথম বাচ্চার বেলায় একটু বমি করলেই যে ভয় পেতাম, দ্বিতীয় বাচ্চার বেলায় সেই ভয় পাই নাই। প্রথম বাচ্চাকে সময় মতো খাওয়ানো, ঘুম, গোছল, সব করিয়েছি। কিন্তু দ্বিতীয়টাকে টাইম বেটাইম কোন কিছুর হিসাব না করে তার ঘুম ভাঙলে ধীরে সুস্থে খাওয়াই, মাঝেমধ্যে বিকেলেও গোসল দেই। তবে একটা বিষয় ক্লিন বুঝি, তা হলো মা যেইভাবে সন্তানের আচরণ, ভাষা, প্রয়োজন বুঝে, দুনিয়ায় কারো পক্ষেই তা বুঝা সম্ভব না, হয়তো সারাক্ষণ পাশে থাকার জন্যেই এই বোঝাপড়া। প্রতিটা মায়েরই বাচ্চা পালনের পদ্ধতি আলাদা। ঠিক আমার মতো করে আরেকজন তার বাচ্চা পালন করছেন না, আমি যা খাওয়াই তা খাওয়াচ্ছে না, বলে তারটা ভুল বলার সুযোগ নেই। কথা হচ্ছে বাচ্চা সুস্থ-সবল আছে কি না, খেলছে কি না, ঠিকমতো প্রশ্রাব -পায়খানা করছে কি না। আর একটা
বেগম রোকেয়া’র লেখনীতে সমাজচিন্তাই মূর্ত হয়েছে

বেগম রোকেয়া’র লেখনীতে সমাজচিন্তাই মূর্ত হয়েছে

মিতু বালা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামটির সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে, আধুনিক যুগের ইতিহাস আওড়াতে গিয়ে তাঁর নামটা কোনোভাবে এড়িয়ে যাওয়ায় দায় নেই। তারপরও নয়'ই ডিসেম্বর তাঁকে বিশেষ ভাবে স্মরণ করা হয়।তাঁর জন্ম-মৃত্যুর দু'টো তারিখই নয় ডিসেম্বর। তাই, এই দিনটি বাংলাদেশে “রোকেয়া দিবস”হিসেবে পালিত হয়। তাঁকে স্মরণ করতে গিয়ে তাঁর লেখা একটা চিঠির অংশ তুলে ধরবো পাঠক সম্মুখে। ভগিনী মরিয়ম কে লেখা : “ভগিনীরে এই যে হাড়ভাঙ্গা গাধার খাটুনী-ইহার বিনিময় কি জানিস? বিনিময় হইতেছে, “ভাঁড় লিপকে হাত কালা”অর্থাৎ উনুন লেপন করিলে উনুন বেশ পরিষ্কার হয়, কিন্তু যে লেপন করে তাহারই হাত কালিতে কালো হইয়া যায়। আমার হাড়ভাঙ্গা খাটুনীর পরিবর্তে সমাজ বিস্ফোরিত নেত্রে আমার খুঁটিনাটি ভুল ভ্রান্তির ছিদ্র অন্বেষণ করিতেই বদ্ধ পরিকর।” লেখকদের চিঠিকে তাঁদের সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়,তাই চিঠি গুলো এখনও সহজলভ্য। চাইলে সেটা পড়