স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার পর মামলার আসামি কিশোরেরও আত্মহত্যা! - Women Words

স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার পর মামলার আসামি কিশোরেরও আত্মহত্যা!

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করায় তার পরিবার যে কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, সেই ছেলেটিও আত্মহত্যা করেছে।

কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে তারা গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন।  

মেয়ের পরিবারের ভাষ্য, ওই ছেলে ‘নিয়মিত উত্ত্যক্ত করে আসায়’ সেই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।

অন্যদিকে ছেলের পরিবার বলছে, দুই কিশোর-কিশোরীর মধ্যে‘পরিবারের অমতে প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে উঠেছিল। মেয়েটির আত্মহত্যার খবর পেয়ে ছেলেটিও একই কাজ করেছে।

প্রসঙ্গত,মঙ্গলবার কালিয়াকৈর উপজেলার এক গ্রামে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মেয়েটির বাবা স্থানীয় একজন ‌ব্যবসায়ী।

মঙ্গলবার রাতেই মেয়েটির বাবা কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতার নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের বিরুদ্ধে ‘আত্মহত্যার প্ররোচনার’ অভিযোগ আনা হয়।

কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক নাসিমা আক্তার জানান, স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল ওই কিশোরীর।

তিনি বলেন,“পরিবার অভিযোগ করেছে, মেয়েটির স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই ছেলে তাকে উত্যক্ত করত এবং প্রেমের প্রস্তাব দিত। এ কারণে মেয়েটির লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয় এবং কিছুদিন স্কুলে যাওয়া বন্ধ রাখে। সম্প্রতি সে স্কুলে যাওয়া শুরু করলে ছেলেটি আবারও একই কাজ শুরু করে। এর জের ধরে মঙ্গলবার মেয়েটি নিজের ঘরে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।”

মেয়েটির ভাই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওই ছেলের বিষয়ে তার পরিবারের কাছে অভিযোগ করেও ‘লাভ হয়নি’। উল্টো সেই ছেলে নানা ধরনের ‘হুমকি’ দিয়ে আসছিল।

তিনি বলেন, “মঙ্গলবার ভোরে ওই ছেলেকে আমাদের বাড়ির কাছে দেখে আমার মা তার কাছে কারণ জিজ্ঞাসা করতেই সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘরে গিয়ে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় আমার বোনের লাশ পাওয়া যায়।”

মেয়েটির আত্মহত্যার পর ছেলেটি নিজের বাড়ি থেকে পালিয়ে পাশের আরেক গ্রামে তার ফুপুর বাড়িতে চলে যায়। পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, সেখানেই রাতের কোনো এক সময় গলায় ফাঁস নিয়ে সে আত্মহত্যা করে। ছেলেটি কালিয়াকৈরের একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

বুধবার সকালে স্বজনরা ছেলেটির লাশ ফুপুর বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে সুরতহাল করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি শহীদ তাউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পরিদর্শক রফিকুল বলেন, ছেলেটির মা দাবি করছেন, তার ছেলের সঙ্গে সেই মেয়েটির ‘প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল’।

রফিকুল বলেন, “ছেলেটির মা বলছেন, এই সম্পর্ক নিয়ে অভিভাবকদের আপত্তি ছিল। মঙ্গলবার রাতে তার ছেলে গোপনে ওই মেয়ের বাড়িতে যায়। তাদের এক ঘরে পেয়ে মেয়েটির পরিবার মারধর করে ছেলেটিকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর মেয়েটির আত্মহত্যার খবর শুনে ছেলেটি ফুপুর বাড়িতে গিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করে।”

রফিকুল আরও জানান, দুজনের তোলা একটি ছবিও তারা ছেলেটির বাসায় পেয়েছেন। দুই পরিবারের বক্তব্য তারা খতিয়ে দেখছেন।

সূত্র: বিডিনিউজ২৪