শাহনূরের ওপর হামলাকারীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ - Women Words

শাহনূরের ওপর হামলাকারীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

ঝিনাইদহে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুই পা হারানো শাহনূর বিশ্বাসের ওপর হামলাকারীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এ আদেশ দেন। রুলে স্বরাষ্ট্রসচিব, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং ওসিকে বিবাদী করা হয়েছে। আজ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদটি আমলে নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

রুলে আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুই পা হারিয়েছেন শাহানূর বিশ্বাস। এখন ভিটে ছাড়তে হয় কি না, সেই ভয়ও পেয়ে বসেছে তাকে। ওই ঘটনায় প্রথমে মামলা নিতে চায়নি পুলিশ। পরে চেষ্টা-তদবির করে মামলা হলেও এখন আর আসামি ধরছে না পুলিশ। উল্টো শাহানূরের স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে আসামিরা।

প্রসঙ্গত, মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় গত ১৬ অক্টোবর সকাল ৮ টার দিকে শাহনূর বিশ্বাসকে রড দিয়ে পিটিয়ে, শাবল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা।
তার স্ত্রী অভিযোগ করেন, মাহবুর ও কামাল মেম্বার দাঁড়িয়ে থেকে শাহনূরের ডান পায়ে গুলি করে। এরপর শাবল দিয়ে বাম পায়ের গোড়ালি থেকে মাংস তুলে নেয়। এ সময় মাহাবুর বলে, ‘টাকা যত লাগে আমার লাগবে। খুন করি ফেলা, মামলা মোকদ্দমা কিচ্ছু হবি না।’

এ ঘটনায় শাহনূর বিশ্বাসের ভগ্নিপতি ইয়াকুব আলী বাদী হয়ে ঝিনাইদাহ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এছাড়া শাহনুর মিয়ার বড় ভাই সামাউল বিশ্বাস ওই ৭জনসহ ১৬ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় আরেকটি মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা প্রথমে লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় শাহানূরকে। পরে হাতুড়ি ও ছেনি দিয়ে হাঁটুতে আঘাত করে। দলের অন্যরা লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পেটায়। এতে শাহানূরের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

তবে ইয়াকুব আলী দাবি করেন, ‘পুলিশ এ বিষয়ে একেবারেই সহযোগিতা করছে না। নানারকম টালবাহান করে সময় কাটাচ্ছে। কিছু স্থানীয় পত্রিকায় এ বিষয়ে লেখালেখি হলে তারা মূল আসামিদের বাদ দিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে একজন জামিন পেয়েছে। এখন আবার সব ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। মূল আসামিরা গ্রামে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মেম্বার কামালতো গ্রামেই আছে, কিন্তু পুলিশ তাকে ধরছে না।’
দু’পা হারিয়ে শাহনূর বিশ্বাস এখন জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন।

সূত্র: সমকাল, বাংলা ট্রিবিউন