মোস্তাক আহমেদের কাব্যগ্রন্থ ‘বিবর্ণ বসন্ত’ এর মোড়ক উন্মোচন - Women Words

মোস্তাক আহমেদের কাব্যগ্রন্থ ‘বিবর্ণ বসন্ত’ এর মোড়ক উন্মোচন

লেখক মোস্তাক আহমেদের কাব্যগ্রন্থ ‘বিবর্ণ বসন্ত’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সিলেটের সারদা স্মৃতি ভবনে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের মহড়া কক্ষে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে মঞ্চকথা ও থিয়েটার বাংলা সিলেট এবং সঞ্চালনায় ছিলেন থিয়েটার বাংলার সদস্য সাইমা শহীদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘বিবর্ণ বসন্ত’ কাব্যগ্রন্থ থেকে পরপর দুইটি কবিতা আবৃত্তি করেন থিয়েটার বাংলার সদস্য অপু কুমার সেনাপতি ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাসিত শেরো।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাহিত্যিক সিরাজ উদ্দিন শিরুল, কবি অবায়দুল মুন্সি, কবি এনামুল মুনির, কবি কনক চক্রবর্তী বুলবুল, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ মিশু, সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাসিত শেরো, ছড়াকার আবদুল বাছিত মোহাম্মদ, অধ্যাপক ড.মো আবুল কাশেম, জাসদ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমেদ, সিলেট জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য, কবি তুষার কর ও মোস্তাক আহমেদ।

বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন কবি তুষার করজাসদ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমেদ, সিলেট জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য,  সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ মিশু প্রমুখ।

কবি তুষার কর বলেন, মোস্তাক আহমেদ আমার কাছে হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা একটি ক্ষণ, একটি ফুলের সৌরভ। পাশে একটি সুরমা নদী বয়ে চলেছে। নদীতো সুদূরে প্রবাহমান। তাঁর চলার পথে কত বাঁক, কত ভাবে কত জায়গায় তাঁর পরিবর্তন, তাঁর ঢেউ এর দোলা। এই সন্ধ্যায় মোস্তাক আহমেদ আমার কাছে এই সুরমা নদীটির মত। তাঁর বাঁক ও ঠিক এমনিভাবেই। গান দিয়ে যার শুরু, তারপর নাটক, তারপর গল্প, সেই পথ দিয়েই কবিতা। তিনি জীবন্ত নদীর প্রতীক। এই নদীই একদিন সমুদ্রে গিয়ে মিশবে-এই সন্ধ্যায় আমার এই আশাবাদ। একজন লেখক জীবন কে দেখেন, তাঁর মৃত্তিকাকে দেখেন, তাঁর দেশকে দেখেন, তাঁর সংস্কৃতিকে দেখেন, মানুষের সংগ্রামকে দেখেন, গণ সংগ্রামকে দেখেন, বিপ্লবকে দেখেন, ইতিহাস জানেন, এই মৃত্তিকাকে দেখেন। এখানেই একজন লেখকের মূল পরিচয়। এই মাটির ঘ্রাণ, এই সোদা মাটি, এই মাটির সংস্কৃতিকে মোস্তাক আহমেদ বিদেশ বিভুঁই এ নিয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, মোস্তাক আহমেদ তাঁর বই এর নাম দিয়েছেন বিবর্ণ বসন্ত। আমরা এমন এক দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আমাদের সামগ্রিক অস্তিত্ব টালমাটাল। আমরা বুঝতে পারছিনা, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। এই অবস্থায় তাঁর বই এর নাম দিলেন বিবর্ণ বসন্ত। কিন্তু কেন? আমি বসে বসে ভাবছিলাম, বই এর এই নামটি তিনি বেছে নিলেন কেন? তা তিনি লিখেছেন বইটির ঘোষণাপত্রে। এই নষ্ট সময় নিয়েই এই ঘোষণাপত্র। আমরা নষ্ট মানুষ, আমরা আমাদের চরিত্র হারিয়ে ফেলেছি।  আমরা আমাদের দেশের যে মূল পরিচয়, তা মুছে ফেলতে উদ্যোগ নিয়েছি। যে ভিত্তির উপর বাংলাদেশ দাঁড়িয়েছিল, সেই ভিত্তিভূমি  প্রতিক্রিয়াশীল চক্র নাড়িয়ে দিয়েছে, তাই লড়াইটি খুব কঠিন। এজন্যেই ‌ বিবর্ণ বসন্ত নামটি য়র্থার্থ হয়েছে। কবি নিজেই বলছেন নষ্ট সময়ের কাব্য……..আমরা গোহার ভিতর চলে যাচ্ছি, আলো আসছেনা, কিন্তু রাতের গহীন থেকে আমাদের দুদন্ড সকালকে ছিনিয়ে আনতে হবে। এই লড়াই এর যাত্রী মোস্তাক আহমেদ।