ভারতে এক ইভটিজারকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে দুই ছাত্রী - Women Words

ভারতে এক ইভটিজারকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে দুই ছাত্রী

এক মাতাল ইভটিজারকে রাস্তায় ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছেন দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী, এমন ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর বহু মানুষ ওই ছাত্রীদ্বয়ের প্রশংসা করেছেন।

রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ভুবনেশ্বরের উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ভারতে ইভ টিজারদের পেটানো আর তার ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার বেশ কিছু ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে।

পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ফেরার সময়ে এক ছাত্রীর পথ রোধ করে বিনোদ সাহু নামে এক মোটরবাইক আরোহী। সে ওই ছাত্রীটিকে মোটরসাইকেলে চড়িয়ে হস্টেলে এগিয়ে দেবার প্রস্তাবও দেয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে ওই ছাত্রীটি বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের রাস্তা একদম ফাঁকা ছিল সেই সময়ে। হঠাৎই মোটরসাইকেল নিয়ে আমার সামনে এসে হাজির হয় লোকটি। সে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছিল। আমি প্রথমে ঘাবড়ে যাই। তারপরেই একটা বাঁশ তুলে ভয় দেখাতে সে পালায়।”

তারপরেই এক বান্ধবীকে ফোন করে ডেকে আনেন ওই ছাত্রীটি। একটু খোঁজাখুঁজি করতেই পাওয়া যায় মাতাল ইভ টিজারটিকে। তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে দুজনে মিলে বাঁশ দিয়ে পেটাতে শুরু করেন।ততক্ষণে পুলিশ হাজির হয়ে যায়, জড়ো হয় অন্যরাও।

ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুই ছাত্রী ক্রমাগত বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছেন রাস্তায় বসে থাকা ন্যাড়া মাথার ওই মধ্যবয়সীকে। সে যতবার উঠে দাঁড়াতে যাচ্ছে, ততবারই ছাত্রীরা বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছেন আর ওড়িয়া ভাষায় ধমকাচ্ছেন। কয়েকবার হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলে আরও মার পড়ছে পিঠে, হাতে, পায়ে।

সোমবার ওই ইভ টিজারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মাতাল ব্যক্তিটি পেশায় গৃহশিক্ষক বলে জানা যাচ্ছে।

অন্য অনেক দেশের মতোই ভারতেও নারীদের উত্যক্ত করার ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে ইভটিজারদের ধরে পেটানো বা অন্য শাস্তি দেওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই ধরা পড়ে মার খাচ্ছে ইভটিজাররা। সেই ছবি আবার সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে। ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বেশীরভাগ সময়ে উত্যক্তের শিকার নারীরাই মূল ভূমিকা নিচ্ছেন, এমন ঘটনাও সামনে আসছে।

গত বছর কলকাতা সংলগ্ন বারাসাত এলাকায় এক কারাতে প্রশিক্ষক তরুণী একসঙ্গে দুই ইভটিজারের গলা ধরে প্রথমে মাথা ঠুকে দিয়েছিলেন, তারপরে জোরে লাথি মেরেছিলেন তলপেটে। ওই তরুণীকে রাজ্য সরকার সম্প্রতি পুরস্কৃত করেছে।

কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে কারাতে প্রশিক্ষণও জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেক স্কুলে ছাত্রীদের জন্য কারাতে শিক্ষা বাধ্যতামূলকও করা হয়েছে। অভিভাবকরা বলছেন, কারাতে শিখলে উত্যক্তকারীকে মেয়েরা অন্তত দুটো লাথি তো মারতে পারবে।

সূত্র : বিবিসি