নায়ক রাজ রাজ্জাক আর নেই - Women Words

নায়ক রাজ রাজ্জাক আর নেই

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ নায়করাজ রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার পরপর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তার মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নায়ক রাজ্জাকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর নায়ক রাজ্জাককে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন। সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন এই গুণী শিল্পী।

এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন তার দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট, স্ত্রী লক্ষ্মীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। ইউনাইটেড হাসপাতালের মিডিয়া কর্মকর্তা ডা. শাগুফা আনোয়ার তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাজ্জাক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন নায়ক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা।

প্রায় ৫০ বছর ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে দাপটের সাথে কাজ করছেন রাজ্জাক। তিনি ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় পাড়ি জমান। প্রথম দিকে রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশনের তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। অর্জন করেন নায়করাজ খেতাব। ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় নায়ক হিসেবে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘বেহুলা’। সেই থেকে শুরু। বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে রাজ্জাকের ঝুলিতে রয়েছে ৩০০টির মতো চলচ্চিত্র। আর এর মধ্যে বেশ কয়েকটিই পেয়েছে ক্লাসিক সিনেমার খ্যাতি! পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।

অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে এই গুণী শিল্পী পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (সেরা অভিনেতা), মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৪ (আজীবন সম্মাননা), বাচচাস পুরস্কার ২০০৯ (আজীবন সম্মাননা) সহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন।