নারী চায় ভালোবাসা, সম্মান - Women Words

নারী চায় ভালোবাসা, সম্মান

আশিক রাহমান

তোমার মা, বোন বা বউয়ের উপর চিৎকার করে ওঠার কারণ তোমার ডিপ্রেশন বা কাজের চাপ না। চিৎকার করার কারণ তোমার বিশ্বাস। তুমি বিশ্বাস করো তারা তোমার উপর ডিপেন্ড করে আছে। তুমি পুরুষ তোমার সহ্য ক্ষমতা অসীম। বদমেজাজী বসের এক গাদা অবান্তর প্রশ্নের উত্তর তুমি হাসতে হাসতে হাসতে দিতে পারো। রাগে চান্দি পর্যন্ত রক্ত উঠে যাওয়া দেহটাকে স্বাভাবিক রেখে হাসি মুখে কথা বলার শক্তি তুমি কোথায় পাও? পাওনাদার এসে সবার সামনে এক গাদা অপমান করার পর মাথা নিচু করে তাকে ঠান্ডা করার মত শক্তি কোথায় জমানো থাকে ? অথচ ঘরে ফেরার পর তরকারীটা ঠান্ডা পেলে অথবা পানির গ্লাস খালি থাকলে এতটা রাগ কোত্থেকে আসে? গায়ের উপর বউয়ের আদরের হাত পড়লে অথবা নরম সুরে মা একটু নিজের পাশে বসতে বললে এতটা জ্বলে ওঠার কারন কি তোমার? ঐযে তুমি বিশ্বাস করো তারা তোমার উপর ডিপেন্ড!

আচ্ছা কেনো মনে হয় নারী মানেই হাঁটুর নিচে দমিয়ে রাখা? যে নারীকে তুমি তোমাকে ছাড়া অচল মনে করো সেই নারী যখন সরকারী পতাকা তুলে সাঁই সাঁই করে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি হাকিয়ে যায় তখন কি তাকিয়ে দেখোনা তোমার মত হাজারটা পুরুষ কপালে স্যালুট দিয়ে সে নারীর পথ করে দেয়! নারী চাইলে পুরো পৃথিবীতে আবার একবার বিশ্ব যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে পারে। আবার নারী চাইলে ভালোবেসে অসভ্য অমানুষ জানোয়ার টাকে বদলে দিতে পারে। কিন্তু সে নারী তোমার উপর ডিপেন্ডেবল হয় কেনো? কারণ নারী চায় ভালোবাসা, নারী চায় সম্মান। আর আমরা সে নারীকেই ভালোবাসি, সম্মান করি যে আমাদের অনুগত হয়। এটা কি তবে নারীর অযোগ্যতা নাকি সেক্রিফাইস?

বিশাল দেহের গরুটার গায়ে শক্তি আছে তোমার সামান্য খুটির রশি ছিড়ে পালিয়ে যাবার কিন্তু সে সেই চেষ্টাই করেনা। কারণ সে তোমার অনুগত। নারী চাইলেই স্বাধীন হতে পারে, নারী চাইলেই পৃথিবীটা নষ্ট করে দিতে পারে, তার উদাহরন হাজারটা তুমি পাবে।কিন্তু যে নারী হাসি মুখে পরাধীনতা মেনে নিয়েছে তাকে যদি তুমি পোষা গরু মনে করো, তাকে অত্যাচারিত হতে দেখে একদিন তোমার মেয়েটা বদলে যাবে। একদিন নিজের মেয়েটা স্বাধীনচেতা হবে, ঘৃণার চোখে তাকাবে পুরুষের দিকে। তার জন্য অন্য কেউ দায়ী নয়, পুরুষ তুমি নিজেই দায়ী।