দুই বছরে আরও ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক - Women Words

দুই বছরে আরও ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংক আগামী দুই বছরে শিশু পুষ্টি খাতে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলার বেশি সহায়তা দেবে । সচিবালয়ে সোমবার সকালে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এ কথা জানান।

সকাল পৌনে নয়টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। পরে তাঁরা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জিম ইয়ং কিম বলেন, বিশ্বব্যাংকের যে তহবিল থেকে বিভিন্ন দেশকে সহায়তা দেওয়া হয়, তার আকার ৫০ শতাংশ বাড়বে। ফলে বাংলাদেশের সহায়তা পাওয়ার পরিমাণও বাড়বে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সহায়তার ফোকাস হবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যোগাযোগসহ সব খাতেই বিশ্বব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। পদ্মা সেতুতে যে তহবিল বিশ্বব্যাংকের দেওয়ার কথা ছিল, তারা অন্যান্য প্রকল্পে সেটি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিষয়টির সমন্বয় হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা।’

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য ও বিমোচনের কৌশল সরেজমিনে দেখতে গতকাল রোববার তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন জিম ইয়ং কিম। দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী জিম হলেন বিশ্বব্যাংকের দ্বিতীয় দফায় নিয়োগ পাওয়া প্রেসিডেন্ট।

আজ ‘আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস’। দিবসটি এ বছর ঢাকায় পালন করছে বিশ্বব্যাংক। আজ বেলা তিনটায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রয়েছে ‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গণবক্তৃতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন। এতে বিশেষ বক্তব্য দেবেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রধান অর্থনীতিবিদ পল রোমার।

অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ‘অ্যান্ড পোভার্টি’ শীর্ষক সংগীত পরিবেশন করবেন। ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ নামে আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে অনুষ্ঠানে। এরপর ‘২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য নিরসন: বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায়ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বক্তব্য দেবেন। আলোচনায় আরও অংশ নেবেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পল রোমার, অ্যাকশন এইড-বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং মোহাম্মদী গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুবানা হক।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে—এমন কয়েকটি প্রকল্প দেখতে কাল মঙ্গলবার সকালে বরিশাল যাবেন জিম। দুপুরে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন এবং বিকেলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা ছাড়বেন।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দুই দশকে বাংলাদেশ দুই কোটি মানুষকে দারিদ্র্য অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে সহায়তা করেছে। ১৯৯১ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০ সালে তা ১৮ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসে। ১৯৯০ সালের তুলনায় বাংলাদেশে কর্মজীবী নারী এখন দ্বিগুণ। এ ছাড়া মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে প্রথম চীনের পরই দ্বিতীয় অবস্থান বাংলাদেশের।

জিম ইয়ং কিমসহ বিশ্বব্যাংকের এ পর্যন্ত পাঁচজন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসেন। তাদের মধ্যে তিনজন হলেন পল উলফোভিৎজ, জেমস উলফেনসন ও রবার্ট ম্যাকনামারা। সর্বশেষ ২০০৭ সালে এসেছিলেন বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিক।

সূত্র: প্রথম আলো